ধ্বংসের পরে: ভেঙে পড়েছে বিমান। নেমেছে সেনা। ছবি: রয়টার্স
মাত্র কয়েকটা মুহূর্ত। কী ঘটছে, বুঝে ওঠার আগে সিট বেল্ট পরা অবস্থাতেই ঝলসে গেলেন যাত্রীরা। সোমবার দুপুরে নেপালের কাঠমান্ডুতে এই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে ধন্দ রয়েছে রাত পর্যন্ত।
ঢাকা থেকে কাঠমান্ডু যাচ্ছিল বাংলাদেশের বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস বাংলার বিমানটি। কয়েকটি সূত্রের বক্তব্য, যাত্রী-বিমানকর্মী মিলিয়ে ৭১ আরোহীর মধ্যে ধ্বংসস্তূপ থেকে প্রথমে মাত্র ১৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা গিয়েছিল। সেই হিসেবে মৃতের সংখ্যা পঞ্চাশ পেরোনোর কথা। কিন্তু বিমান সংস্থার দাবি, মারা গিয়েছেন ৮ জন। কাঠমান্ডু মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বিমানটির ফার্স্ট অফিসার পৃথুলা রশিদ। তবে ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান বেঁচে গিয়েছেন বলে বিমান সংস্থা জানিয়েছে।
সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টো ২০ নাগাদ বম্বার্ডিয়ার কিউ ৪০০ বিমানটি নেমে এসেছিল কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে। নামার পরেই বিমানে আগুন ধরে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, রানওয়ে ছুঁয়ে প্রথমে কাত হয়ে পড়ে বিমান। প্রচণ্ড গতিতে প্রায় ৩০০ মিটার মাটিতে ঘষে, বিমানবন্দরের পাঁচিল ভেঙে সামনের ফুটবল মাঠে পৌঁছয় সেটি। পথ জুড়ে ছড়িয়ে থাকে বিমানের টুকরো, যাত্রীদের মালপত্র।
ভিডিও সৌজন্যে টুইটার।
দুই পাইলট ছাড়া বিমানে ছিলেন ৬৭ জন যাত্রী ও দুই বিমানকর্মী। যাত্রীদের মধ্যে বাংলাদেশের ৩২ জন, নেপালের ৩৩ জন, চিন ও মলদ্বীপের এক জন করে। রক্ষা পাওয়া যাত্রী বসন্ত বোহরা জানিয়েছেন, বিমানটি নামার আগে কাঁপতে শুরু করে। জোরালো বিস্ফোরণের মতো শব্দ হয়। বিমানবন্দরের কাছেই থাকেন মার্কিন নাগরিক আমান্ডা সামার্স। তাঁর দাবি, বিস্ফোরণ হয়েছে পরপর দু’বার।
আরও পড়ুন: জানলার কাচ ভেঙে বেঁচে ফিরলেন বসন্ত
কেন দুর্ঘটনা, স্পষ্ট নয়। নেপালের বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থার ডিরেক্টর সঞ্জীব গৌতম জানিয়েছেন, রানওয়ের দক্ষিণ দিক দিয়ে বিমানটিকে নামার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি উল্টো দিক থেকে নামে। নামার সময়ে বিমানের উপরে পাইলটদের নিয়ন্ত্রণ ছিল না। আবার ইউএস বাংলার দাবি, কাঠমান্ডুর এটিসি-ই পাইলটকে বিভ্রান্ত করেছিল। অনেকের সন্দেহ, নামার ঠিক আগের মুহূর্তে বিমানে এমন কিছু যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয়, যা আর সামলাতে পারেননি পাইলটেরা।