অতীতের অ্যালবাম থেকে: মায়ের কোলে ছোট্ট প্রিন্স হ্যারি। ছবি: সংগৃহীত।
মিডিয়ার চোখে বেশ একটা ‘ব্যাড বয়’ ইমেজ রয়েছে প্রিন্স হ্যারির। দাদা প্রিন্স উইলিয়ামের মতো শান্তশিষ্ট নয়, বরং ছোট থেকেই বেশ ডানপিটে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেও পরিস্থিতিটা পাল্টায়নি। প্রায়শই শিরোনামে উঠে এসেছেন তিনি। কখনও লাস ভেগাসে বান্ধবীদের সঙ্গে নগ্ন ছবি পোস্ট করছেন। কখনও বা পাপারাৎজ্জিদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে তাঁদের পেটাচ্ছেন। তো কখনও মাদক সেবনের কথা স্বীকার করছেন। সেই ‘খোলামেলা’ হ্যারিই এত দিন তাঁর মাকে হারানোর দুঃখ চেপে রেখেছিলেন। অবশেষে গত সোমবার এক সাক্ষাৎকারে মুখ খুলেছেন তিনি। ব্রিটেনের একটি প্রথম সারির দৈনিকে জানিয়েছেন, বারো বছর বয়সে মা লেডি ডায়ানাকে হারিয়ে কী রকম এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল তাঁর জীবন। বহ বছর ধরে সেই শোক চেপে রেখেছিলেন তিনি। শেষমেশ সেই শোক ভুলতে মনোবিদেরও সাহায্য নিতে হয়েছে তাঁকে।
১৯৯৭-এর ৩১ অগস্ট প্যারিসে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান প্রিন্সেস ডায়ানা ও তাঁর বয়ফ্রেন্ড ডোডি ফায়েদ। ৩২ বছরের প্রিন্স হ্যারি জানিয়েছেন, মায়ের মৃত্যুর শোক ভুলতে যেন বালির গর্তে মাথা ডুবিয়ে রেখেছিলেন তিনি। মায়ের কথাও মনে করতে অস্বীকার করতেন। যেন সে ভাবেই গোটা বিষয়টা ভুলে যেতে পারবেন। কেন এমনটা করতেন হ্যারি? তিনি বলেন, “সে সব কথা ভাবলে তো দুঃখ আরও বাড়বে। মা তো আর ফিরে আসবে না!”
আরও পড়ুন
আসন বিভ্রাটে হবু ‘দম্পতি’কে বিমান থেকে জোর করে নামিয়ে দেওয়া হল!
বহু বছর ধরে মায়ের মৃত্যুর শোকে কাতর ছিলেন প্রিন্স হ্যারি। ছবি: সংগৃহীত।
২৮ বছর পর্যন্ত এ ভাবেই চলছিল। শেষমেশ তিনি ঠিক করেন, মনোবিদের সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন। সে সময়টায় দাদা প্রিন্স উইলিয়ামও তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। পরের দু’বছর বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে কেটেছে। সে সব দিনের কথা মনে করে প্রিন্স হ্যারি বলেন, “কুড়ি বছর ধরে সেই সব কথা চিন্তাভাবনা করিনি। আর তার পরের দু’বছর যেন পুরোপুরি এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। আমি জানতাম না, আমার কী হয়েছিল!”
আরও পড়ুন
সন্ত্রাসে যুক্ত! জেরার মুখে তিন মাসের শিশু
শুধুমাত্র মনোবিদই নয়, সেই কঠিন পরিস্থতি কাটিয়ে উঠতে বক্সিংয়ের ফলেও বেশ উপকার হয়েছিল বলে মনে করেন প্রিন্স। তা ছাড়া, সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে দু’বছর আফগানিস্থানে কাটানোটাও বেশ কাজে এসেছে তাঁর। তিনি বলেন, “সকলেই বলেন যে বক্সিংয়ে বেশ উপকার হয়। নিজের আগ্রাসনকে বের করে আনে তা। সেটা সত্যিই কাজে এসেছিল। কারণ আমি বোধহয় কাউকে ঘুষি মারার মতো অবস্থাতেই চলে গিয়েছিলাম। তবে বক্সিং গ্লাভস পরে কাউকে ঘুষি মারাটা বোধহয় আরও সহজ!”