—ফাইল চিত্র।
সে দিন সন্ধ্যায় একটা ল্যান্ড রোভার ধাক্কা মেরেছিল তাঁর গাড়িতে। সেই ল্যান্ড রোভারের চালক আবার যে সে লোক নন, স্বয়ং প্রিন্স ফিলিপ। প্রিন্সের গাড়ির গুঁতোয় গুরুতর জখম হন এমা ফেয়ারওয়েদার। কব্জি ভেঙেছে। এখনও সারা গায়ে যন্ত্রণা। নরফকের স্যান্ডরিংহ্যামে বৃহস্পতিবারের সেই দুর্ঘটনার চার দিন পরেও দুর্ঘটনার আতঙ্ক কাটছে না ৪৬ বছর বয়সি এমা-র। যন্ত্রণাকে ছাপিয়ে গিয়েছে ব্রিটেনের রাজপরিবারের উপেক্ষা। এমার অভিযোগ, একবার ‘সরি’ বলার সৌজন্যটুকুও দেখায়নি রাজপরিবার।
সে দিন গাড়িতে এমার সঙ্গে ছিলেন এক বান্ধবী ও তাঁর ৯ মাসের সন্তান। গাড়িতে ধাক্কা লাগার পরে খুব ভয় পেয়ে যান এমা। বিশেষ করে বাচ্চাটির জন্য। আর্তনাদ করলেও কেউ এগিয়ে আসেননি। বরং সকলেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন ল্যান্ড রোভারের চালককে নিয়ে! বেশ কিছু ক্ষণ পরে ৭২ বছরের বৃদ্ধা ভিক্টোরিয়া ওয়ার্ন এগিয়ে এসে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তাঁদের গাড়ি থেকে বার করেন। এমা বলেন, ‘‘ওই মহিলা জানালেন, জানো না, ওই গাড়িতে কে? আমি ভেবেছিলাম কোনও বয়স্ক লোক। উনিই বললেন, প্রিন্স ফিলিপ।’’ মিনিট দশেকের মধ্যে প্রিন্সকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ। সাহায্যকারীদের অনেকে পরে এমাকে রসিকতা করে বলেছেন, ‘‘প্রাসাদ থেকে আপনার চিৎকার শোনা গিয়েছে!’’ কিন্তু প্রিন্স? একবারের জন্যেও তাকাননি, এমনকি মামুলি দুঃখপ্রকাশটুকুও করেননি, আক্ষেপের সঙ্গে জানালেন এমা। প্রাসাদের তরফে দাবি করা হয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটির যাত্রীদের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে যোগাযোগ করা হয়। যা মানতে চাননি এমা। বলেন, ‘‘জানি, রানি খুবই ব্যস্ত। ভেবেছিলাম, একটা ফোন আসতে পারে। ফোন পেলাম, কিন্তু পুলিশের! পুলিশ যা বলল, তার অর্থ হয় না! বলা হয়েছে, রানি এবং প্রিন্স আপনাদের কথা মনে রাখবেন!’’
৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই নতুন ল্যান্ড রোভারের চালকের আসনে চড়ে বসেছেন ৯৭ বছরের প্রিন্স ফিলিপকে। তা-ও সিট বেল্ট ছাড়াই! ও রকম একটা দুর্ঘটনা ছাপই ফেলল না? ক্ষুব্ধ এমা বললেন, ‘‘মনে হয় না ওঁর কোনও খারাপ লাগা আছে।’’