রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ফাইল চিত্র।
তারা চাইলে রাষ্ট্রপুঞ্জ মধ্যস্থতা করবে। ভারত ও পাকিস্তানকে মঙ্গলবার এমন বার্তাই দিলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
পুলওয়ামা হামলা পর ভারত ও পাকিস্তানে যে উত্তেজনার আবহ তৈরি হয়েছে, হুমকি-পাল্টা হুমকির পালা চলছে তাতে দু’দেশেই একটা উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গুতেরেসের তাই আহ্বান, এই উত্তেজনা কমাতে দু’দেশই যেন দ্রুত পদক্ষেপ করে। ওই দিন সাংবাদিক বৈঠক করে রাষ্ট্রপুঞ্জ প্রধানের মুখপাত্র স্টেফানি ডুয়ারিচ বলেন, “সেক্রেটারি জেনারেল ভারত-পাকিস্তান দু’দেশকেই সংযত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। যদি এ বিষয়ে কোনও সহযোগিতা চায় তারা, তা দিতেও প্রস্তুত রাষ্ট্রপুঞ্জ।” ডুয়ারিচ আরও বলেন, “পুলওয়ামা হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার যে আবহ তৈরি হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় পাক মদতে পুষ্ট জইশ জঙ্গিগোষ্ঠীর হামলায় ৪০ জন জওয়ান নিহত হন। তার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যারা এই হামলায় জড়িত তাদের শাস্তি দেওয়া হবেই। সিআরপিএফ-ও বিবৃতি জারি করে বলে, এর বদলা নেওয়া হবেই। ২০১৬-য় উরি হামলার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের হাত ছিল, পুলওয়ামার ক্ষেত্রেও তাই। এই অভিযোগ আন্তর্জাতিক দরবারেও পৌঁছে দিয়েছে ভারত। কিন্তু আগের হামলার ক্ষেত্রেও যেমন অস্বীকার করেছে, পুলওয়ামর ক্ষেত্রেও সেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমাই ধরা পড়ল পাকিস্তানের। শুধুমাত্র হামলার রুটিনমাফিক নিন্দা করে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সেই অভিযোগকে সটান উড়িয়ে দিয়েছে তারা।
আরও পড়ুন: নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের বিনা প্ররোচনায় গুলি পাক সেনার, পাল্টা জবাব ভারতের
আরও পড়ুন: পুলওয়ামা হামলা ‘ভয়ঙ্কর’, মন্তব্য ট্রাম্পের, পাকিস্তানকে তোপ মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকেরও
শুধু অস্বীকার করাই নয়, পাল্টা ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে পাকিস্তান বলে, আগে তদন্ত করে দেখুক ভারত, তার পর অভিযোগ তুলবে। মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতের কড়া বার্তার পাল্টা জবাব দেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। টিভিতে বিবৃতি দিয়ে তিনি জানান, ভারতের মাটি থেকে রণং দেহি বার্তা তাঁর কানে পৌঁছেছে। ভারত আক্রমণ করলে পাকিস্তান চুপ করে বসে থাকবে না। তারাও প্রত্যাঘাত করবে। শুধু তাই নয়, ইমরান চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, “পাকিস্তানই যে ওই হামলায় জড়িত তা ভারত প্রমাণ করে দেখাক।”
কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ইমরান ফাঁকা আওয়াজ করছেন!’’ অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও বলেন, ‘‘জইশ তো হামলার দায় স্বীকার করেইছে! প্রমাণ তো ইমরানের ঘরেই রয়েছে!’’
যদিও ইমরানের এই কথায় আদৌ বিস্মিত নয় নয়াদিল্লি। ইমরানের পূর্বসূরিরাও এর আগে এ ভাবে হামলার দায় ঝেড়ে ফেলেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, ইমরানের পাল্টা হুমকিতে বোঝাই যাচ্ছে তিনি পূর্বসূরিদের দেখানো পথেই হাঁটা শুরু করেছেন।
(সারাবিশ্বের সেরা সব খবরবাংলায় পড়তে চোখ রাখতে পড়ুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)