খুশি নয়া প্রজন্ম, রইল কাঁটাও

নবীনদের ভক্তি, প্রবীণদের একটা বড় অংশের ক্ষোভ। ভ্লাদিমির পুতিন আরও ছ’বছরের জন্য প্রেসিডেন্টের গদি নিশ্চিত করার পরে রাশিয়ার ভোট নিয়ে চর্চায় এমনই ইঙ্গিত মিলছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মস্কো শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৮ ০১:৫২
Share:

ভ্লাদিমির পুতিন

নবীনদের ভক্তি, প্রবীণদের একটা বড় অংশের ক্ষোভ। ভ্লাদিমির পুতিন আরও ছ’বছরের জন্য প্রেসিডেন্টের গদি নিশ্চিত করার পরে রাশিয়ার ভোট নিয়ে চর্চায় এমনই ইঙ্গিত মিলছে।

Advertisement

তিন-চতুর্থাংশের বেশি ভোট পেয়েছেন পুতিন। বড় কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন না ঠিকই। কিন্তু হিসেবের খাতা প্রমাণ দিচ্ছে, তাঁর জনপ্রিয়তায় তেমন কোনও ভাটা নেই। দেখা যাচ্ছে, পুতিনের ‘প্রশাসনিক দক্ষতার’ প্রশংসায় পঞ্চমুখ নতুন প্রজন্ম। তাঁরা মনে করছেন, অশান্ত গণতন্ত্র থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন পুতিন। নিন্দুকদের মতে, স্বৈরতন্ত্রের শাসন কায়েম করেছেন তিনি। কিন্তু এই ‘স্বৈরতন্ত্র’কেই স্বাগত জানাচ্ছেন দেশের সিংহভাগ মানুষ। অধিকাংশেরই মতে, পুতিন দেশে স্থায়িত্ব এনেছেন। বদল এনেছেন জীবনযাত্রাতেও। আধুনিক যুগে নয়া প্রজন্মের মন জয় করেছে শপিং মল।

ব্রিটেন ও আমেরিকার চোখে চোখ রেখে দাপট কায়েম করাটাও পুতিনের ভাবমূর্তিকে করে তুলেছে আরও শক্তিশালী। এমনকী স্ক্রিপাল কাণ্ডে পশ্চিমী দুনিয়ার এই নেতিবাচক মনোভাবটাই দেশের মানুষের কাছে পুতিনকে আরও এক ধাপ এগিয়ে রেখেছিল বলে দাবি করেছে রুশ সংবাদমাধ্যম। রুশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের স্পিকার ভ্যালেন্তিনা মাতভিয়েঙ্কো যেমন ফল বেরোনোর পর বলেই দিলেন, ‘‘পুতিনের এই জয় আসলে পশ্চিমের দেশগুলির কাছে আমাদের নৈতিক জয়।’’ উচ্চ কক্ষের আর এক সদস্য আইগর মরোজোভ আবার বললেন, ‘‘ব্রিটেন আর আমেরিকা আশা করি এই ফল দেখে বুঝে গিয়েছে, যে আমাদের ভোটে নাক গলানো ওদের পক্ষে সহজ কাজ নয়।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: চর-বিতর্ক নিয়েই চতুর্থ ইনিংস শুরু পুতিনের

পুতিন-কথা

• ১৯৫২: লেনিনগ্রাদে (এখন সেন্ট পিটার্সবার্গ) দরিদ্র
পরিবারে জন্ম

• ১৯৭৫: আইনে স্নাতক।রুশ গুপ্তচর সংস্থা কেজিবি-তে যোগদান

• ১৯৮৩: লুদমিলা পুতিনার সঙ্গে বিয়ে। ২০১৩-য় বিচ্ছেদ।
রয়েছেন দুই কন্যা

• ১৯৯৮: কেজিবি-র প্রধান হলেন

• ১৯৯৯: বরিস ইয়েলৎসিনের ইস্তফার পরে পুতিনের
দায়িত্বভার গ্রহণ

• ২০০০: প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত

• ২০০৪: প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্নির্বাচিত

• ২০০৮: দিমিত্রি মেদভেদেভকে ক্ষমতা হস্তান্তর। পুতিন হলেন প্রধানমন্ত্রী

• ২০১২: ফের প্রেসিডেন্ট। প্রবল বিরোধী চাপ উড়িয়ে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ ৪ থেকে বাড়িয়ে ৬ করলেন

• ২০১৪: ইউক্রেনের অন্তর্গত ক্রিমিয়া দখল। ঠান্ডা যুদ্ধের পরে ফের পশ্চিমের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি

• ২০১৫: প্রেসিডেন্ট আসাদকে সমর্থন। সিরিয়ায় পাঠালেন রুশ বাহিনী

• ২০১৭: ফের প্রেসিডেন্ট পদে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা

• ২০১৮, মার্চ: চতুর্থ বারের জন্য প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত

সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সের তরুণ-তরুণীদের মধ্যেই পুতিনের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি।

তবে এর বিপরীত চিত্রটাও চমকপ্রদ। বয়স্কদের অনেকের মনেই পুতিন নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ। এক বৃদ্ধ দম্পতি ভোট দিতে এসে জানিয়েছিলেন, ১৮ বছরের শাসন বিরাট অধ্যায়। পুতিনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ নথিভুক্ত করতেই ভোট দিতে এসেছিলেন। ক্রিমিয়ায় রুশ আগ্রাসন নিয়েও ক্ষুব্ধ একাংশ। অসন্তোষ রয়েছে সিরিয়ায় রাশিয়ার সক্রিয় অংশগ্রহণ নিয়ে।

সাধারণত দীর্ঘ সময় পদে থাকলে জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। নেপথ্যের রসায়ন যা-ই থাক, পুতিনের জয়ের মার্জিন কিন্তু উল্টো কথাই বলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন