খাদ্যের সঙ্কটেই কি মানুষ গিলছে পাইথন

ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে আস্ত একটা মানুষকে গিলে খেয়েছিল পাইথন। পরে সাপের পেট কেটে দেহ উদ্ধার করে গ্রামবাসীরা। রবিবারের এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে দেখেছে সারা বিশ্ব।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

জাকার্তা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৭ ০২:২৭
Share:

ভক্ষক: এ ভাবেই পাইথনের পেটে মিলল দেহ। ফেসবুক।

ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে আস্ত একটা মানুষকে গিলে খেয়েছিল পাইথন। পরে সাপের পেট কেটে দেহ উদ্ধার করে গ্রামবাসীরা। রবিবারের এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে দেখেছে সারা বিশ্ব। কিন্তু এই ঘটনায় অন্য বিপদ দেখছেন বিজ্ঞানীরা। জঙ্গল কেটে সভ্যতার জয়জয়কারকেই এর কারণ হিয়েবে দায়ী করছেন তাঁরা।

Advertisement

শনিবার সন্ধে নাগাদ সুলাওয়েসির বাসিন্দা বছর পঁচিশের যুবক আকবর সালুবিরো পাম বাগিচার কাজে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু রাত বাড়লেও আকবর বাড়ি না ফেরায় তাঁর খোঁজে বেরোন গ্রামবাসীরা। পরের দিন আকবরের বাড়ির পিছনে এক জঙ্গলের মধ্যে পেটফোলা সাপটিকে দেখতে পান তাঁরা। যুবককে পুরোপুরি গিলে ফেললেও পাইথনের মুখ থেকে তখনও বেরিয়েছিল পায়ের খানিকটা আর জুতো। সেই জুতো দেখেই চিনতে পারেন আকবরের স্ত্রী। এর পর পাইথনটিকে ধরে তার পেট চিরে ফেলতেই আকবরের দেহ দেখতে পান গ্রামবাসীরা।

আরও পড়ুন: বঞ্চনার শিকার মা, দাবি নিকির

Advertisement

ঠিক এখানেই ঘটনাটি অস্বাভাবিক ঠেকছে বিজ্ঞানীদের। জীববিজ্ঞানীদের মতে, পাইথনের পাকে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মানুষের মৃত্যুর কথা শোনা গেলেও আস্ত একটা মানুষ গিলে খাওয়ার ঘটনা বিরল। পরিবেশবিদদের মতে, ইন্দোনেশিয়ার প্রত্যন্ত এই সুলাওয়েশি দ্বীপের গভীর জঙ্গলে পাইথনের মতো বন্য প্রাণীদের বাস। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে পাম তেলের লাভজনক ব্যবসা বাড়াতে গত এক দশক ধরে সেখানেই জঙ্গল সাফ করে গড়ে উঠেছে একের পর এক পাম বাগিচা। জঙ্গল হারিয়ে ভিটেহারা হচ্ছে বন্যপ্রাণীরা। দেখা দিচ্ছে খাদ্য সঙ্কট। নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। তাই এ বার ক্ষুধার্ত প্রাণীদের খাদ্যতালিকায় ঢুকে পড়ছে মানুষও। তাতে আখেরে বিপদ বাড়ছে আকবরের মতো খেত মজুরদের।

এই প্রসঙ্গে ২০১৩ সালে একটি আন্তর্জাতিক পরিবেশরক্ষা সংগঠনের পেশ করা রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, গত ১২ বছরে ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বন্যপ্রাণীদের আক্রমণে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। যেমন রিআউ প্রদেশে বাঘের আক্রমণে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মানুষের হাতে মারা গিয়েছে আটটি বাঘও। সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। এবং যত দিন গিয়েছে আক্রমণের ঘটনা তত বেড়েছে। একই ভাবে ইদানীং সুমাত্রায় বিভিন্ন লোকালয়ে হাতির হানায় মৃতের সংখ্যা কম নয়। পরিবেশবিদদের মতে, জঙ্গল সাফ করে চাষ আবাদ বা বসতি গড়ে ওঠাতেই এই বিপত্তি বাড়ছে। আর ব্যবসায়ী মুনাফার লোভের শিকার হচ্ছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন