(বাঁ দিকে) ভ্লাদিমির পুতিন। (মাঝে) ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভলোদিমির জ়েলেনস্কি (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ কি এ বার থামবে? মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘হস্তক্ষেপে’ কি কার্যকর হবে? রুশ গুপ্তচর সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত এক কর্তা যদিও মনে করছেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় বাধা হতে পারেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম স্পুটনিককে একটি সাক্ষাৎকারে সে কথা জানিয়েছেন তিনি। কেন অন্তরায় হতে পারেন জ়েলেনস্কি, তা-ও জানিয়েছেন রুশ গোয়েন্দা সংস্থা এসভিআর-এর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল লিওনিড রেশেতনিকভ।
আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। রুশ প্রেসিডেন্টের পাঁচটি দাবি শুনে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বিনিময়ে বেশ কিছু বিষয়ে সমঝোতা করতে রাজি হয়েছে রাশিয়াও। আপাতত তাদের পাঁচটি দাবি নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের দর কষাকষির পালা। ইউক্রেনকে রাশিয়ার পাঁচ দাবি মানতে রাজি করাতে পারলেই ইতি পড়তে পারে দুই দেশের মধ্যে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধে। সোমবার ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে ওয়াশিংটনে যাওয়ার কথা জ়েলেনস্কির। সেখানেই উঠতে পারে পাঁচ দাবির প্রসঙ্গ।
এই আবহে লিওনিড রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিককে জানিয়েছেন, পুতিন এবং ট্রাম্প দু’জনেই মনে করেন, যুদ্ধ থামানোর জন্য যুদ্ধবিরতি যথেষ্ট নয়। এর জন্য পূর্ণাঙ্গ শান্তিচুক্তির প্রয়োজন। আর সেই শান্তিচুক্তির জন্য জ়েলেনস্কি সরকারকে রাজি করানো প্রয়োজন ট্রাম্পের। লিওনিডের মতে, এই কাজটি সহজ নয়। তাঁর কথায়, ‘‘সবচেয়ে বড় বাধা জ়েলেনস্কি সরকার। তাদের সঙ্গে কাজ করা কঠিন। সবকিছুই নির্ভর করছে স্বৈরাচারী ক্ষমতার উপরে। ভিতরের বা বাইরের সব সমস্যা জ়েলেনস্কি বলপ্রয়োগ করে সমাধান করতে চান।’’ লিওনিডের আরও আশঙ্কা, ‘‘তিনি (জ়েলেনস্কি) শেষ পর্যন্ত (শান্তি প্রচেষ্টা) আটকে দেবেন। কারণ যে কোনও সিদ্ধান্ত (শান্তিচুক্তি)-এর জন্য তাঁকে গুরুতর ছাড় দিতে হবে। আর তাতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যে তাঁকে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। নয়তো পুরোপুরি ক্ষমতা হারাতে হবে।’’
লিওনিডের দাবি, আমেরিকা বিষয়টি আগেই আঁচ করতে পেরেছিল। সে কারণে ট্রাম্পের সঙ্গে জ়েলেনস্কির প্রথম বৈঠক নিয়ে টানাপড়েন তৈরি হয়েছিল। তিনি আরও জানিয়েছেন, জ়েলেনস্কির মতো ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারাও একই পথে হাঁটছেন। তাঁর দাবি, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্ট করছেন। তাঁদের উদ্দেশ্য রাশিয়াকে দুর্বল করে দেওয়া।
আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করেছেন ট্রাম্প। তার পর মার্কিন সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘এ বার বাকিটা জ়েলেনস্কির উপরে। সঙ্গে ইউরোপের দেশগুলিকেও উদ্যোগী হতে হবে।’’ আর তা নিয়েই সংশয় প্রকাশ করলেন রাশিয়ার গুপ্তচর সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্তা লিওনিড।