Mariupol

Russia Ukraine war: আটকে অন্তত এক লক্ষ, ‘পরাধীন’ মারিয়ুপোল থেকে বাসিন্দাদের সরাতে মরিয়া ইউক্রেন

মারিয়ুপোল দখলের পরে এ বারে ডনবাস এলাকার অন্যান্য অংশে যুদ্ধের গতি বাড়াচ্ছে রাশিয়া।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কিভ শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৫৬
Share:

ফাইল চিত্র।

মারিয়ুপোলকে স্বাধীন ঘোষণা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেন এ নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও তারা জানে, রাশিয়ার হাতে দেশের দক্ষিণের বন্দর-শহর ‘পরাধীন’। মারিয়ুপোলের সব বাসিন্দাকে অবিলম্বে শহর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন মেয়র বাদিম বয়চেঙ্কো। জাতীয় টিভি চ্যানেলে তিনি বলেন, ‘‘একটাই চাওয়া এখন— সবাইকে উদ্ধার করতে হবে। এখনও অন্তত ১ লক্ষ মানুষ আটকে রয়েছে মারিয়ুপোলে।’’

Advertisement

উদ্ধারকাজে সবচেয়ে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাব। বিদ্যুৎ সংযোগ নেই দীর্ঘদিন। মোবাইল অকেজো। টিভি নেই। ইন্টারনেট নেই। বাইরের পৃথিবী সম্পর্কে অন্ধকারে মারিয়ুপোলবাসী। তাঁদের ধারণা গোটা ইউক্রেনের পরিস্থিতিই এ রকম। শহরের একাধিক জায়গায় উদ্ধারকারী বাস পাঠাচ্ছে প্রশাসন। কিন্তু ভয়ে কেউ উঠছে না। কাল তিনটি স্কুলবাসে মাত্র ৭৯ জনকে উদ্ধার করা গিয়েছে। মেয়র বয়চেঙ্কো জানিয়েছেন, তিনি মারিয়ুপোলে নেই। শহরের বাইরে থাকলেও বাসিন্দাদের উদ্ধার করতে বদ্ধপরিকর তিনি। কিন্তু এ-ও জানান, সব কিছুই এখন পুতিনের হাতে।

রাশিয়া আজ অবশ্য কিছুটা নরম মনোভাব দেখিয়েছে। গত কাল ক্রেমলিন জানিয়েছিল, আজ়ভস্টল কারখানায় ঢুকে অভিযান চালাবে না রুশ বাহিনী। কিন্তু কাউকে ভিতর থেকে বেরোতেও দেওয়া হবে না। যাতে একটি মাছিও গলতে না পারে, তা দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন খোদ রুশ প্রেসিডেন্ট। কিন্তু আজ তারা জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারখানা থেকে ইউক্রেনীয় সেনা ও বাসিন্দাদের বেরোনোর সুযোগ দেওয়া হবে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ঘোষণা করেছে, ইস্পাত কারখানা থেকে নিরাপদ মানব করিডর তৈরির জন্য তারা প্রস্তুত। কিন্তু সেনা বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। মন্ত্রকের বিবৃতি: ‘‘আমরা আবারও বলছি, যুদ্ধ বন্ধ করতে প্রস্তুত রাশিয়া। আমরা চুপ করে যাব, মানুষকে উদ্ধারের রাস্তা করে দেব, কিন্তু তার জন্য ইউক্রেনের সেনা বাহিনীকে সাদা পতাকা তুলে ধরতে হবে।’’ এখনও পর্যন্ত রাশিয়ার এই প্রস্তাবের জবাব দেয়নি ইউক্রেন।

Advertisement

মস্কো আগেও অভিযোগ জানিয়েছে, ইউক্রেন সরকার কথা খেলাপ করছে। মস্কোর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ ইউক্রেনেরও। পুতিন আজ ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিচেলকে জানিয়েছেন, আলোচনায় কোনও সদর্থক সিদ্ধান্তের সম্ভাবনা থাকলে তবেই তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। তবে কিভ নেতৃত্বের বক্তব্য, রাশিয়ার সব শর্ত মেনে চলা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। শান্তি বৈঠক কেন বিফলে যাচ্ছে, সে প্রসঙ্গে ইউক্রেনের এক মন্ত্রী অতীতে বলেছিলেন, ‘‘আমাদের দেশে গণতন্ত্র রয়েছে। সকলের কথার গুরুত্ব আছে। কিন্তু রাশিয়ায় আলোচনার কোনও জায়গা নেই।’’

রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার দফতরের হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলে আজ বলেন, ‘‘এ পর্যন্ত আমাদের হাতে যে রিপোর্ট রয়েছে, তাতে স্পষ্ট, সাধারণ মানুষকে নৃশংস ভাবে হত্যা করেছে রুশ বাহিনী।’’ দফতরের মুখপাত্র রবীনা শামদাসানি বলেন, ‘‘বুচায় এমন একটি পরিবার নেই, যাদের কেউ খুন হননি।’’ গোটা বিশ্বের নিন্দার মুখেও অবিচল পুতিন। তিনি বুচা-হত্যাকাণ্ডে জড়িত রুশ বাহিনীকে সম্মানিত করেছেন। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আজ বলেন, ‘‘সামনের বছরের শেষ পর্যন্তও যুদ্ধ চলতে পারে।’’ অর্থাৎ এ যুদ্ধ এখনই শেষ হওয়ার নয়। মারিয়ুপোল দখলের পরে এ বারে ডনবাস এলাকার অন্যান্য অংশে যুদ্ধের গতি বাড়াচ্ছে রাশিয়া। উত্তর ডনবাসে টানা গোলাবর্ষণ চলছে। স্লোভিয়ানস্কে রাতভর রকেট হানা চলেছে কাল। দিনেও একাধিক হামলা হয়। লিম্যানের হাসপাতালে আজ সকালে বোমা পড়ে। আগুন ধরে গিয়েছিল হাসপাতালটিতে। দমকল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। রুশ সেনাবাহিনীর এক কমান্ডার জানিয়েছেন, ডনবাস এলাকার পাশাপাশি সমুদ্র তীরবর্তী দক্ষিণ ইউক্রেন সম্পূর্ণ ভাবে দখল করার লক্ষ্য নিয়েছে মস্কো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন