প্রতীকী ছবি।
প্রথম ধাক্কায় কাবু হয়ে গিয়েছিল বিশ্বের শ’খানেক দেশের লক্ষাধিক কম্পিউটার এবং সার্ভার সিস্টেম। সেই ধাক্কা এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা যায়নি। তার আগেই ফের এক বার সাইবার হামলার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর তা হতে পারে এই সপ্তাহেই। হামলায় সেকেন্ড ওয়েভ যাকে বিশেষজ্ঞরা বিগেস্ট র্যানসমওয়ার অ্যাটাক বলে মনে করছেন, তাতে বিশ্বজুড়ে আরও বেশি সার্ভার সিস্টেমে হামলা হওয়ার জোর সম্ভাবনা দেখছেন তাঁরা।
শুক্রবার ওই ভাইরাস হামলা করেছিল ইউরোপ এবং এশিয়া মিলিয়ে প্রায় ১০০টি দেশে। তারপর শনি এবং রবিবার হওয়ায় বেশিরভাগ অফিসেই ছুটি ছিল। সোমবার ছুটি কাটিয়ে বেশিরভাগ মানুষই কাজে যোগ দেন আর নিজের কম্পিউটার কতটা সুরক্ষিত তা যাচাইও করতে চাইবেন অনেকে। আর তা করতে গিয়ে কোনও অচেনা লিঙ্কের মাধ্যমে এই ভাইরাস ঢুকে পড়তে পারে তাঁর কম্পিউটারেও।
ভারতে এখনও পর্যন্ত এই হানার ততটা প্রভাব না পড়লেও দ্বিতীয় বারের হামলায় এ দেশেও আতঙ্কের ছায়া দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। এর অন্যতম প্রধান কারণ, ভারত এমন একটা দেশ যেখানে লাইসেন্সড অ্যান্টিভাইরাসের ব্যবহার খুবই কম। আর দ্বিতীয়ত, এ দেশের বেশির ভাগ সরকারি অফিসের কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম আপডেটেড নয়। এখনও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উইনডোজ এক্সপি ইনস্টল করা রয়েছে। এটি বহু পুরনো অপারেটিং সিস্টেম হওয়ায় খুব সহজেই তাতে হানা দিতে পারে ম্যালওয়ার। এর থেকে বাঁচতে তাই ভারতীয় কম্পিউটার এজেন্সি রেসপন্স টিম আগাম সতর্কতা জারি করেছে।
আরও পড়ুন: বিশ্ব জুড়ে সাইবার হানার কবল থেকে বাঁচতে এ বার আগাম সতর্কতা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির নজরদারির কাজে ব্যবহৃত সফটওয়্যারের গলদ ধরেই হ্যাকাররা এই কুকর্ম ঘটিয়েছেন বলে জানা যায়। শুক্রবার এই ভয়াবহ ম্যালওয়্যার হানার পরই এক ধাক্কায় বসে যায় রাশিয়ার আভ্যন্তরীণ মন্ত্রক, স্পেনীয় টেলিকমিউনিকেশন টেলেফ-নিকা ও ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা ও এশিয়ার একটা বিরাট অংশ। আক্রান্ত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশের সমস্ত তথ্যও হ্যাক করে লক করে দেয় ওয়ানাক্রাই নামে এই ম্যালওয়ার। এই হানার ঘটনার পরেই অবশ্য ২২ বছরের এক সিকিউরিটি রিসার্চার ওই ওয়ানাক্রাই ম্যালওয়ারের মধ্যেই এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচার উপায় আবিষ্কার করার দাবি জানান। তিনি জানান, তাতে একটা ‘কিল সুইচ’ রয়েছে। যার মাধ্যমে কম্পিউটারে এই ম্যালওয়ারকে অকেজো করা যাবে। কিন্তু সেটা কোনও স্থায়ী সমাধান হবে না, সীমিত সময়ের জন্য অকেজো করে রাখা যাবে মাত্র। কারণ, বিশেষজ্ঞদের মতে, খুব তাড়াতাড়ি হ্যাকাররা এই ম্যালওয়ারের চরিত্র বদলে দিতে পারবে। ফলে, আলাদা উপায় বের করে নতুন করে ফের হানা দেবে কম্পিউটারে। এর থেকে বাঁচার উপায় বের করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন প্রযুক্তি বিশারদরা।