Afghanistan

Afghanistan Crisis: পড়িমরি করে বিমানে সওয়ার কাবুলিরা, ৬৪০ ভাগ্যবান এবং খসে পড়া ২ হতভাগ্যের কাহিনি

ওই কার্গো বিমানে সাধারণত ১৩৪ জন যাত্রী তোলা হয়। কিন্তু কাবুল ছাড়ার হিড়িকে নিরাপত্তা মাথায় ওঠে। হুড়মুড়িয়ে বিমানে উঠে পড়েন বহু মানুষ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কাবুল শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২১ ১৪:১৪
Share:

ঠাসাঠাসি করে বিমানে শত শত মানুষ। এই ছবিই ছড়িয়েছে নেটমাধ্যমে। ছবি: রয়টার্স।

মাঝ আকাশে মানুষ পড়ে যাচ্ছেন একটি বিমান থেকে। ঠেসে লোক পুরেই উড়ান অন্য বিমানের। আপাতত এমন ভিন্নধর্মী দুই ছবিই ঘুরছে নেটপাড়ায়।

Advertisement

তালিবান কাবুলের দখল নেওয়ার পর থেকে কার্যত প্রাণ হাতে করে দেশ ছাড়ছেন আফগানবাসীদের একাংশ। বিমানে জায়গা না পেয়ে চাকার সঙ্গে নিজেকে বেঁধে নিয়ে উড়ানেও পিছপা হচ্ছেন না অনেকে। তা করতে গিয়েই মাঝ আকাশ থেকে পড়ে মৃত্যুও হয়েছে দু’জনের।

এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যেই মানবিকতার পরিচয় দিল আমেরিকার বায়ুসেনা। ১৩৪ আসনের সি-১৭ গ্লোবমাস্টার-৩ কার্গো বিমানে ৬৪০ জন আফগানবাসীকে তুলে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে গেল তারা।

Advertisement

আশরফ গনি সরকারের পতনের পর থেকেই দ্রুত গতিতে আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে আমেরিকা। সোমবার থেকে সেনা, যুদ্ধ সরঞ্জাম-সহ হামিদ কারজাই বিমান বন্দর থেকে পর পর বিমান ছেড়েছে।

সাধারণত কার্গো বিমানটিতে এ ভাবেই বসে সেনা। —ফাইল চিত্র।

প্রাণে বাঁচতে রবিবার রাত থেকেই বিমানবন্দরে কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বন্ধ করে দেওয়া হয় বিমানবন্দর। তা সত্ত্বেও দেওয়াল টপকে বিমানবন্দরে ঢুকে পড়েন হাজার হাজার মানুষ।

পাসপোর্ট-ভিসা না থাকায়, তাঁদের যদিও নিতে রাজি হয়নি কোনও বিমানই। তাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বিমানের মাথায়, ডানায় উঠে বসে পড়েন বহু মানুষ। অনেকে আবার চাকা ধরে ঝুলে পড়েন। বিমান ছেড়ে দেওয়া সত্ত্বেও পিছু পিছু দৌড়তে দেখা যায় বহু মানুষকে।

সেই সবের মধ্যেই সি-১৭ গ্লোবমাস্টার-৩ কার্গো বিমানের একটি ছবি নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, বিমানের মেঝেতে ঠাসাঠাসি করে বসে রয়েছেন কয়েকশো মহিলা, পুরুষ এবং শিশু।

এই ধরনের একাধিক কার্গো বিমান রয়েছে আমেরিকার হাতে। —ফাইল চিত্র।

ছবিটির সত্যতা নিয়ে ধন্দ দেখা দেয় সর্বত্র। কোটি কোটি আফগানবাসীকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে হাত গুটিয়ে নিয়েছে যে আমেরিকা, তারা আফগানবাসীদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, মানতে চাননি অনেকেই।

পরে পেন্টাগনের তরফে ওই ছবির সত্যতা স্বীকার করে নেওয়া হয়। আমেরিকার প্রতিরক্ষা আধিকারিকরা জানান, দেশের বাইরে পা রাখার অনুমতি নিয়ে বিমানবন্দরে যাঁরা জড়ো হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে থেকে যত জনকে সম্ভব উদ্ধার করার চেষ্টা করেছে আমেরিকা। যাঁদের বৈধ কাগজপত্র ছিল না, শুধু তাঁদেরই নেওয়া হয়নি।

যে সি-১৭ গ্লোবমাস্টার-৩ কার্গো বিমানে চাপিয়ে ৬৪০ জনকে সরানো হয়েছে, সেনাকে রসদ এবং যুদ্ধ সরঞ্জাম পৌঁছে দিতে প্রায় তিন বছর ধরে সেটি ব্যবহার করছে আমেরিকা। ১৩৪ জন প্যারাট্রুপারের বসার ব্যবস্থা রয়েছে তাতে। এর মধ্যে ৮০ জনের মেঝেতে বসার ব্যবস্থা রয়েছে। ৫৪ জন বসতে পারেন বিমানের দু’দিকের দেওয়াল ঘেঁষে থাকা আসনে।

নিরাপত্তার খাতিরে সোমবার আল উদেইদ আকাশপথ ধরে আফগানিস্তান থেকে কাতারের উদ্দেশে রওনা দেয় বিমানটি। সেই সময়ই পাইলটের কাছ থেকে কন্ট্রোল রুমে খবর যায় যে, ৮০০-র বেশি যাত্রী উঠেছেন বিমানে। এত বেশি সংখ্যক যাত্রী তোলায় বিমানটির নিরাপদ অবতরণ নিয়ে আশঙ্কা দেখা দেয়। যদিও শেষমেশ কোনও বিপদ হয়নি।

পেন্টাগন জানিয়েছে, বিমানবন্দরে মালপত্র তোলার সময় র‌্যাম্পের অর্ধেক খোলা ছিল। সেখান দিয়েই হুড়মুড়িয়ে কাতারে কাতারে মানুষ ঢুকতে থাকেন। অনেক চেষ্টা চরিত্র করেও তাঁদের বিমান থেকে নামানো যায়নি। শেষে কাগজপত্র যাচাই করে সকলকে নিয়েই রওনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বসার ব্যবস্থা করতে সমস্ত আসন সরিয়ে নেওয়া হয়। মালপত্র বাঁধার বেল্টের সঙ্গে জড়িয়ে সকলকে ঠাসাঠাসি করে বসিয়ে দেওয়া হয় মেঝেতে।

তবে পেন্টাগনের দাবি, শুধু সি-১৭ গ্লোবমাস্টার-৩ নয়, এর চেয়েও বেশি সংখ্যক মানুষকে আফগানিস্তান থেকে নিরাপদে সরিয়ে এনেছে তাদের একাধিক বিমান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন