হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধায় মোমবাতি মিছিল। ছবি: এএফপি।
শ্রীলঙ্কায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করল জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। মঙ্গলবার নিজেদের মুখপত্র ‘আমাক’-এ আইএস জানায়, ইস্টারের সকালে তাদের সংগঠনের সদস্যরাই হামলা চালিয়েছে শ্রীলঙ্কায়।
‘আমাক’-এ বিবৃতি জারি করে আইএস জানায়, ‘‘মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনী ও খ্রিস্টানদের নিশানা করেই দু’দিন আগে শ্রীলঙ্কায় হামলা চালিয়েছে আইএস যোদ্ধারা।’’ আই এস নিজেদের মুখপত্রে দায় স্বীকার করার আগেই ‘আল ঘুরাবা’ খবরের চ্যানেল একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করে। তাতে দেখা যাচ্ছে, আইএসের পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে সাত যুবক।ওই ভিডিয়োতে এই সাত যুবককেই আত্মঘাতী হামলাকারী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তারাই শ্রীলঙ্কাকে রক্তাক্ত দিনটি ‘উপহার’ দিয়েছে বলে দাবি করা হয়।
‘আল ঘুরাবা’ যদিও আইএস-এর চ্যানেল নয়। তবে আইএস সমর্থকরাই চ্যানেলটি চালায় বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। তাই ভিডিয়োটি সামনে আসার পর থেকেই শ্রীলঙ্কার হামলায় আইএস-এর হাত থাকার সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়ে ওঠে। আল ঘুরাবার দাবিতে সিলমোহর দিয়েই এ দিন হামলার দায় নেয় আইএস।
আরও পড়ুন: নিউজিল্যান্ডের মসজিদে সন্ত্রাসের বদলা নিতেই চার্চে আত্মঘাতী নাশকতা, জানাল শ্রীলঙ্কা সরকার
আরও পড়ুন: মুসলিম, খ্রিস্টান বৈরিতা তো নেই শ্রীলঙ্কায়!
শ্রীলঙ্কা সরকার অবশ্য শুরু থেকেই বিস্ফোরণের নেপথ্যে কোনও ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীর হাত রয়েছে বলে দাবি করে আসছিল। এমনকি নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুই মসজিদে শ্বেত সন্ত্রাসের বদলা নিতেই হামলা চালানো হয়ে থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছিল তদন্তে। যদিও, তদন্তকারীরা এখনও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করে দেখেননি। অন্য দিকে, প্রাথমিক তদন্তের পরে শ্রীলঙ্কার গোয়েন্দাদের দাবি, রবিবারের হামলায় যুক্ত সব আত্মঘাতী জঙ্গি-ই শ্রীলঙ্কার নাগরিক। একটি গির্জায় বিস্ফোরণের ঠিক আগের মুহূর্তে এক যুবকের পিঠে ব্যাগ নিয়ে ঢোকার সিসিটিভি ফুটেজ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তদন্তকারীদের দাবি, পিঠে ব্যাগ ওই যুবকই গির্জায় ফিদায়েঁ হামলা চালায়। ওই যুবককে শনাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা। এই তদন্তে শ্রীলঙ্কার গোয়েন্দাদের সাহায্য করতে ইতিমধ্যেই কলম্বো পৌঁছেছেন ইন্টারপোলের একটি দল।
রবিবার ইস্টারের সকালে শ্রীলঙ্কার তিনটি গির্জা-সহ আট জায়গায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটায় সাত আত্মঘাতী জঙ্গি। তাতে এখনও পর্যন্ত ৩২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫০০ জন। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৪০ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।