Elon Musk

থাকছে ৪০টি কেবিন, ৩৬ তলা বাড়ির সমান উঁচু এই যানেই মহাকাশ ভ্রমণ করাতে চান এলন মাস্ক

সাধারণ মানুষকে মহাকাশ ভ্রমণের সুবর্ণ সুযোগও এনে দিয়েছে স্পেসএক্স।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২১ ০৮:৫৩
Share:
০১ ২০

টেসলা কর্ণধার এলন মাস্ক। সম্পদের নিরিখে মাইক্রোসফ্‌ট সংস্থার কর্ণধার বিল গেটসকে টপকে সম্প্রতি ‘ব্লুমবার্গ বিলিওনেয়ার ইনডেক্স’-এর বিচারে বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় দু’নম্বরে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।

০২ ২০

টেসলা ছাড়াও একাধিক সংস্থার মালিক তিনি। ‘স্পেসএক্স’ হল তাঁর তৃতীয় কোম্পানি। ২০০২ সালে এই কোম্পানি গড়ে তোলেন তিনি। তার ৬ বছরের মধ্যেই নাসার সঙ্গে যুক্ত হয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠাতে শুরু করে তাঁর সংস্থা।

Advertisement
০৩ ২০

সাধারণ মানুষকে মহাকাশ ভ্রমণের সুবর্ণ সুযোগও এনে দিয়েছে স্পেসএক্স। এ বছরই প্রথম বাণিজ্যিক ভাবে এই মিশন চালু করার কথা ঘোষণা করল সংস্থাটি। ওই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইনস্পিরেশন ৪’। যা চলতি বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে চালু হওয়ার কথা।

০৪ ২০

মহাকাশে যাঁরা ভ্রমণ করতে চান, স্পেসএক্স ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুল-এ করে তেমন ৪ জন নভশ্চরকে নিয়ে যাওয়া হবে।

০৫ ২০

স্পেসএক্স জানিয়েছে, প্রথম কারা যাবেন, আগামী সপ্তাহে তাঁদের নাম ঘোষণা করা হবে। মিশনে অংশগ্রণকারী ব্যক্তিদের নির্বাচিত করার পর তাঁদের বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে।

০৬ ২০

আগামী ১৫ মাসে মোট ৭ বার এ ভাবেই ওই সংস্থা মহাকাশে ভ্রমণ করিয়ে আনবেন ইচ্ছুকদের। এর বাইরে এলন এমন একটি যান তৈরির চেষ্টায় আছেন যা তাঁরা মতে মহাকাশ অভিযানের ‘গেম চেঞ্জার’ হয়ে উঠবে।

০৭ ২০

এর নাম স্টারশিপ। প্রতি বার মাত্র ৪-৫ জন করে মহাকাশ অভিযাত্রীকে না নিয়ে একেবারে অন্তত ১০০ জনকে একসঙ্গে নিয়ে পাড়ি দিতে পারবে মহাকাশযান। ঠিক যেন যাত্রিবাহী বিমান!

০৮ ২০

এই ১০০ জনকেই নিয়ে উড়ে যাবে মঙ্গলগ্রহে। আর এর থেকেও আশ্চর্যের বিষয় হল ওই যান পুনর্ব্যবহারযোগ্য হবে। অর্থাত্ লালগ্রহ থেকে ফিরে এসে ফের ১০০ জন যাত্রী নিয়ে রওনা দিতে পারবে লালগ্রহে।

০৯ ২০

বিজ্ঞানীদের মুখে বারবারই ভবিষ্যতে গ্রহাণুর সঙ্গে সংঘর্ষে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার মতো উদ্বেগের বিষয় উঠে আসে। পৃথিবী ধ্বংসের পরও যাতে মানুষের অস্তিত্ব রয়ে যায় সেটা ভেবেই এই উপায় ভেবেছেন এলনের।

১০ ২০

এই স্টারশিপ মানুষকে বহুবিধ গ্রহের বাসিন্দা করে তুলবে বলে দাবি এলনের। ফলে পৃথিবী ধ্বংসের পরও অন্য গ্রহে মানুষের অস্তিত্ব রয়ে যাবে। ২০১৬ সালে মেক্সিকোর একটি সম্মেলনে তাঁর এমন পরিকল্পনার কথা প্রথম জানিয়েছিলেন প্রথম। আর এমনিতেও মঙ্গলে শহর গড়ে তোলা এলনের বহু দিনের স্বপ্ন।

১১ ২০

এলনের এই স্বপ্নের মহাকাশযান স্টারশিপের দুটো অংশ। রকেট অংশটি হল সুপার হেভি এবং মূলত স্পেসক্র্যাফ্ট অংশটির নামই স্টারশিপ। দুটো মিলিয়ে দৈর্ঘ্য ৩৯৪ ফুট। অর্থাৎ ৩৬-৩৭ তলা বাড়ির সমান। শুধু স্টারশিপ দৈর্ঘ্যে ১৬০ ফুট।

১২ ২০

এর মাঝামাঝি অংশে জ্বালানি ট্যাঙ্ক রয়েছে। যাতে তরল মিথেন এবং তরল অক্সিজেন থাকবে। দুটোকে একসঙ্গে বলা হয় মিথাক্সল। মিথেন হল মূল জ্বালানি। যা যানটিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। মিথেনকে জ্বলতে সাহায্য করবে তরল অক্সিজেন।

১৩ ২০

এ বার রকেট অংশে আসা যাক। ৩ হাজার ৪০০ টন মিথাক্সল ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন সুপার হেভির দৈর্ঘ্য ২৩০ ফুট। এর ইঞ্জিন ১০০ থেকে ১৫০ টন পর্যন্ত ভার বহন করতে পারবে।

১৪ ২০

মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার পর সুপারহেভি থেকে স্টারশিপ আলাদা হয়ে যাবে। কিন্তু অন্যান্য মহাকাশযানের মতো এই রকেট মহাকাশে উদ্বাস্তুর মতো ঘুরে বেড়াবে না। পরিবর্তে এটি ফের লঞ্চ প্যাডে ফিরে আসবে দ্বিতীয় উড়ানের জন্য।

১৫ ২০

স্টারশিপের মধ্যে ৪০টি আলাদা কেবিন করার পরিকল্পনা রয়েছে এলনের। প্রতিটি কেবিনে ৪ থেকে ৫ জন করে থাকতে পারবেন। তবে একেবারে প্রাথমিক ভাবে ৩ জন করেই কেবিনে রাখার পরিকল্পনা করেছেন তিনি। ফলে নূন্যতম ১০০ যাত্রী নিয়ে পাড়ি দেবে যান।

১৬ ২০

একই ভাবে মহাকাশ ভ্রমণ সম্পূর্ণ হওয়ার পর স্টারশিপ ফিরে আসবে তার লঞ্চ প্যাডে। স্টারশিপের পরবর্তী অভিযানের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে।

১৭ ২০

২০২০ সালে এলনের এই স্টারশিপ গড়ে তোলার প্রকল্পকে নাসা সাড়ে ১৩ কোটি ডলার অনুদান দেয়। স্টারশিপকে চাঁদে নামানোর পরিকল্পনাও রয়েছে নাসার।

১৮ ২০

২০২৩ সাল নাগাদ প্রথমে চাঁদের কক্ষপথে এবং পরে মঙ্গলের কক্ষপথে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার কথা স্টারশিপের। চাঁদের কক্ষপথে ৭ দিন প্রদক্ষিণ করার পর ফিরে আসবে। এর জন্য দু-তিন বছর আগে থেকেই টিকিট বুকিং শুরু হবে।

১৯ ২০

এলনের জন্ম ১৯৭১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায়। বাবা ছিলেন এক জন বড় মাপের ইঞ্জিনিয়র। মা ছিলেন এক জন জনপ্রিয় কানাডিয়ান মডেল। আজ যে খ্যাতি, যে প্রতিপত্তি এলনের, তার ভিত পোঁতা ছিল তাঁর শৈশবেই।

২০ ২০

ছোট থেকেই এলন নিত্যনতুন জিনিস আবিষ্কারের কথা ভাবতেন। নানা কিছু দিয়ে পরীক্ষাও করতেন সব সময়। তাঁর কল্পনার মাত্রা ছিল বাঁধনছাড়া। সব সময় এতটাই কল্পনাতে বুঁদ হয়ে থাকতেন যে কারও ডাকে সাড়াও দিতেন না। সেই বাঁধনছাড়া কল্পনার জন্যই মানব সভ্যতার ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন হতে চলেছে তাঁর হাতেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement