Donald Trump

ট্রাম্প-তালিবান চুক্তিতে পাক ভূমিকা নিয়ে চিন্তা দিল্লির

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত মার্কিন-তালিবান চুক্তির খুঁটিনাটি সম্পর্কে ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে জানতে চাইবে সাউথ ব্লক। ওই চুক্তিতে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা কতটা, তারও আঁচ নেওয়ার চেষ্টা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৪৭
Share:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

ভারত সফর শেষ করার পরেই আফগানিস্তানে তালিবানের সঙ্গে শান্তি চুক্তি সই করার কথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। কূটনীতিকদের মতে, ভারত তথা গোটা দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার নিরাপত্তার প্রশ্নে বিষয়টির গুরুত্ব প্রবল। স্বাভাবিক ভাবেই ট্রাম্পের আসন্ন সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে নয়াদিল্লির শীর্ষ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে কাবুল প্রসঙ্গ নিয়ে বিশদে আলোচনা হওয়ার কথা।

Advertisement

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত মার্কিন-তালিবান চুক্তির খুঁটিনাটি সম্পর্কে ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে জানতে চাইবে সাউথ ব্লক। ওই চুক্তিতে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা কতটা, তারও আঁচ নেওয়ার চেষ্টা হবে। নয়াদিল্লির আশঙ্কা, এই চুক্তির সুযোগ নিয়ে আফগানিস্তানে আবার নিজেদের কৌশলগত আধিপত্য পূর্ণমাত্রায় ফিরে পাবে ইসলামাবাদ। ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসের সম্ভাবনাও বাড়বে।

গত শনিবার মিউনিখে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দেখা করেন ট্রাম্প সরকারের আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি জালমে খলিলজাদের (আফগান বংশোদ্ভূত আমেরিকান) সঙ্গে। মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে তালিবানের সঙ্গে আসন্ন শান্তি চুক্তি নিয়ে প্রাথমিক কথা হয় দু’জনের মধ্যে। নয়াদিল্লিকে জানানো হয়েছে, এই চুক্তি নিয়ে আমেরিকা এবং আফগানিস্তানের আশরফ ঘানি সরকার ঐকমত্যে পৌঁছেছে। চুক্তি সই হওয়ার পরে অস্ত্র ত্যাগ করবে তালিবান জঙ্গিরা এবং মার্কিন সেনা ধীরে ধীরে সে দেশ থেকে চলে যাবে। তার পরে আফগানিস্তানের বর্তমান নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে তালিবানের আলোচনা শুরু হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে, ফেব্রুয়ারির ২২ থেকে ২৮-এর মধ্যে হিংসাত্মক কার্যকলাপ কমাতে থাকবে তালিবান জঙ্গিরা। যদি তা একবারেই কমিয়ে ফেলা যায়, তবে ট্রাম্প দিল্লি থেকে ফিরে যাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই দু’তরফের মধ্যে লিখিত চুক্তি সই

Advertisement

হতে পারে।

তবে যে বিষয়টি নিয়ে সাউথ ব্লক পুরোপুরি অন্ধকারে, তা হল, মার্কিন সেনা সরে যাওয়ার পরে সেখানে পাকিস্তানের ভূমিকা কী এবং কতটা থাকবে। পাকিস্তান বরাবরই বলে এসেছে, আফগানিস্তানে রাজনৈতিক ও প্রতিরক্ষা কর্মকাণ্ডে ভারতের কোনও ভূমিকা নেই, থাকতে পারে না। অন্য দিকে ভারতও কিন্তু আফগানিস্তানের পরিকাঠামো পুনর্গঠন ও মানবিক সাহায্যের দিকেই মূলত নজর দিয়ে এসেছে এত দিন। কিন্তু এখন ভারতকে সতর্ক থাকতে হবে যে, মার্কিন বাহিনী সরে যাওয়ার পরে ইসলামাবাদ যেন নয়াদিল্লিকে নতুন কোনও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে না পারে। কাজটা জটিল ও কঠিন। সাউথ ব্লকের এক কর্তার কথায়, ‘‘পাকিস্তান যদি আফগান সরকারে নিজেদের লোক বসিয়ে দিতে পারে, তবে ১৭ বছর ধরে পরিকাঠামো ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ভারত যে ভাবমূর্তি সেখানে তৈরি করেছে, তা নষ্ট করার চেষ্টা হবে।’’

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, তালিবানের সঙ্গে মার্কিন বোঝাপড়া যা-ই হোক না কেন, তালিবানের সঙ্গে সংযোগের ‘চ্যানেল’ পুরোপুরি ভাবে বন্ধ করতে পারবে না ভারত। তালিবানের বিভিন্ন গোষ্ঠী ভোটে লড়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় শামিল হতে চাইবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সাউথ ব্লকের মতে, এই মুহূর্তে ভারতের লক্ষ্য হবে সতর্ক ভাবে কিছু সমমনস্ক দেশকে সঙ্গে নিয়ে আফগানিস্তানে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার জন্য ঝাঁপানো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন