Unit 731

চিনের মাটিতে জাপানের জৈব-রাসায়নিক অস্ত্র পরীক্ষাগার! ভয় পাইয়ে দেবে ইউনিট ৭৩১

বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো জৈব-রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে নিরন্তর। তবে আধুনিক বিশ্বের আগে থেকেই এই অস্ত্রের ব্যবহার কোনও না কোনও ভাবে হয়ে আসছে। সময় এগনোর সঙ্গে সঙ্গে শুধু প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনা হয়েছে তাতে। শত্রুপক্ষকে চোরাগোপ্তা ভাবে পর্যুদস্ত করতে এই ধরনের অস্ত্রের প্রয়োগ শুরু হয়।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২০ ১৭:১০
Share:
০১ ১৫

বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো জৈব-রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে নিরন্তর। তবে আধুনিক বিশ্বের আগে থেকেই এই অস্ত্রের ব্যবহার কোনও না কোনও ভাবে হয়ে আসছে। সময় এগনোর সঙ্গে সঙ্গে শুধু প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনা হয়েছে তাতে। শত্রুপক্ষকে চোরাগোপ্তা ভাবে পর্যুদস্ত করতে এই ধরনের অস্ত্রের প্রয়োগ শুরু হয়।

০২ ১৫

চতুর্দশ শতকের শেষ দিকে অর্থাত্ ১৪৯৫ সালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে বদলা নিতে স্পেনীয়রা কুষ্ঠরোগীদের রক্ত মেশানো মদ ফ্রান্সে পাঠিয়েছিল। আবার শত্রুদের ঘায়েল করতে কুকুরের লালাকে হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগিয়েছিল পোল্যান্ড। সেটা ছিল ১৬৫০ সাল।

Advertisement
০৩ ১৫

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জৈব-রাসায়নিক অস্ত্রের ধরনও পাল্টেছে। শক্তিধর দেশগুলো নিজেদের মতো করে এই অস্ত্র তৈরি করেছে। বোটুলিনাম টক্সিন, টুলারেমিয়া— এমন অনেক জৈব-রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি হয়েছে। যদিও এগুলোকে বায়োকেমিক্যাল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলি।

০৪ ১৫

প্রযুক্তির দিক থেকে বিশ্বের অন্যতম সেরা দেশ জাপান। প্রশান্ত মহাসাগরীয় ছোট্ট এই দেশটি কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে থেকেই জৈব-রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ে নানা রকম গবেষণা শুরু করে। কী ভাবে তারা গবেষণা চালাত, কোথায় তা চালানো হত তা নিয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য আছে। যা শুনলে এক জন ডাকাবুকো মানুষও শিউরে উঠবেন।

০৫ ১৫

ইউনিট ৭৩১। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এই নামটা খুবই পরিচিত হয়ে ওঠে। কী এই ইউনিট ৭৩১? আসলে একটা ইম্পেরিয়াল জাপানি সেনাদের তৈরি একটি গোপন ল্যাবরেটরি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, ১৯৩৮ সালে তৈরি হয় এই পরীক্ষাগার।

০৬ ১৫

এই ল্যাবরেটরিতেই চলত জৈব-রাসায়নিক অস্ত্রের গবেষণা। এটি ডিট্যাচমেন্ট ৭৩১, ৭৩১ রেজিমেন্ট, দ্য কামো ডিট্যাচমেন্ট, ইশি ইউনিট বা ইশি কোম্পানি নামে পরিচিত ছিল।

০৭ ১৫

কেম্পেইতেই মিলিটারি পুলিশের অধীনে তৈরি এই ইউনিট ৭৩১-এর মূল দায়িত্বে ছিলেন সার্জেন জেনারেল শিরো ইশি। ইনি ছিলেন জাপানি সেনার চিফ মেডিক্যাল অফিসার। জৈব-রাসায়নিক অস্ত্রের গবেষণার জন্য টোগো ইউনিট নামে একটি গুপ্ত দল তৈরি করেন ইশি।

০৮ ১৫

ইউনিট ৭৩১-এ মানুষের উপর জৈব-রাসায়নিক অস্ত্রের গবেষণা চালাত ইশির সেই টোগো ইউনিট। পুরুষ-নারী নির্বিশেষে মূলত চিন, আমেরিকা, ব্রিটেনের যুদ্ধবন্দিদের উপরই এই গবেষণা চালাত তারা। গবেষণার কাজে লাগানো হত গর্ভবতী এবং শিশুদেরও।

০৯ ১৫

যুদ্ধবন্দিদের শরীরে নানা রকম রাসায়নিক প্রয়োগ করে গবেষণা চালাত টোগো ইউনিট। এই গবেষণায় যাঁরা বেঁচে যেতেন তাঁদের হত্যা করে দেহ কাঁটাছেড়া করে পরীক্ষা করে দেখা হত কী ভাবে এই লোকগুলো বেঁচে গেল!

১০ ১৫

কী ভাবে গবেষণা করা হত এই ‘টর্চার হাউস’-এ? এই গবেষণার মধ্যে ছিল ‘ফ্রস্টবাইট এক্সপেরিমেন্ট’। এই গবেষণায় ব্যবহৃত ব্যক্তির হাত-পা কনকনে ঠান্ডা জলের মধ্যে ডুবিয়ে রাখা হত যত ক্ষণ না তা জমে যায়। তার পর হাত-পায়ে ফুটন্ত গরম জল ঢালা হত। দেখা হত, আলাদা আলাদা তাপমাত্রায় মানুষ শরীরে কী ধরনের প্রভাব পড়ে।

১১ ১৫

গবেষণার জন্য যুদ্ধবন্দিদের শরীরে ভাইরাস ঢুকিয়ে দেওয়া হত। শরীরের যেখানে যেখানে ভাইরাসের মারাত্মক প্রভাব পড়ত সেই অংশ কেটে বাদ দেওয়া হত। ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমণ কতটা জোরদার তা এই ধরনের পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে দেখা হত।

১২ ১৫

এই গবেষণার পরও যাঁরা বেঁচে যেতন তাঁদের উপর গান ফায়ার টেস্ট করা হত। কী এই টেস্ট? এই টেস্টের মাধ্যমে দেখা হত বন্দুকের গুলির আঘাত মানুষের শরীর কতটা সহ্য করতে পারে।

১৩ ১৫

ইউনিট ৭৩১-এর সবচেয়ে ভয়ানক গবেষণা হল যুদ্ধবন্দিদের একে অপরের সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করা। এই সম্পর্ক তৈরির আগে বন্দিদের শরীরে মারণ ভাইরাস ঢুকিয়ে দেওয়া হত। এই পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হত সেক্সুয়াল ট্রান্সমিটেড ডিজিস কী ভাবে ছড়ায়।

১৪ ১৫

এ ছাড়া গর্ভবতীদেরও গবেষণার কাজে লাগানো হত। তাঁদের শরীরে মারণ ভাইরাস ঢুকিয়ে দেখা হত গর্ভস্থ শিশু কতটা এই ভাইরাসের সঙ্গে যুঝতে পারে। এ ছাড়াও প্রেসার চেম্বারে ঢুকিয়ে দেওয়া হত বন্দিদের। দেখা হত মানবশরীর কতটা চাপ সহ্য করতে পারে।

১৫ ১৫

জাপানের অধীনে থাকা চিনের পিংফাঙে এই পরীক্ষাগার গড়ে তোলা হয়েছিল। শুধু পিংফাং-ই নয়, চিনের আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় এই ধরনের ল্যাব গড়ে তুলেছিল জাপান। যেমন, লিঙ্কাওয়ে ইউনিট ১৬২, সুনবুতে ইউনিট ৬৭৩, মুডুংজিয়াং-এ ইউনিট ৬৪৩ এবং হেলরে ৫৪৩। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এইসব ল্যাবরেটরির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement