ফের আত্মঘাতী বিস্ফোরণ, ২৯ নিহত কাবুলে

অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের মুখপাত্র নসরাত রাহিমি সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, ধর্মস্থান কার্ত-এ-সাখির কাছে ওই আত্মঘাতী জঙ্গি উড়িয়ে দেয় নিজেকে। এর আগেও ওই এলাকাটি জঙ্গিরা নিশানা করেছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৮ ০২:৪৪
Share:

ক্ষুব্ধ: কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছে স্বজন। বুধবার। ছবি: এএফপি ।

পারসি নতুন বছরের শুরু। নভরোজ উপলক্ষে ছুটি। তার মধ্যেই কেঁপে উঠল কাবুল। আত্মঘাতী বোমারুর হানায় আজ প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৯ জন। জখম ১৮ জন।

Advertisement

অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের মুখপাত্র নসরাত রাহিমি সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, ধর্মস্থান কার্ত-এ-সাখির কাছে ওই আত্মঘাতী জঙ্গি উড়িয়ে দেয় নিজেকে। এর আগেও ওই এলাকাটি জঙ্গিরা নিশানা করেছে। ২০১৬ সালের অক্টোবরে ১৪ জন নিহত হন। আর ২০১১-য় অন্তত ৫৯ জন প্রাণ হারান এই অঞ্চলে। এ বছরের জানুয়ারি মাসেও কাবুলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ একশোর কাছাকাছি মানুষ প্রাণ হারান। তার পরে সরকারি তরফে কড়া নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু এ দিনের বিস্ফোরণ আবার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। বিস্ফোরণের দায় নিয়েছে আইএস।

কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ওই ধর্মস্থান থেকে লোকজন তখন বেরিয়ে আসছিলেন। শ’খানেক মানুষ ছিলেন ওখানে। সেই ভিড়ের মধ্যেই হঠাৎ বিস্ফোরণ। পুলিশের দাবি, গায়ে বিস্ফোরক বেঁধে পায়ে হেঁটে ওই এলাকায় হাজির হয় জঙ্গি। আফগানিস্তানে প্রতি বছর নভরোজ বেশ বড় করেই উদ্‌যাপিত হয়। বসন্তের শুরুতে পারসিরা নতুন বছর পালন করেন। কিন্তু আফগান গোঁড়া মুসলিমদের অনেকেই এই উৎসব ‘ইসলাম-বিরোধী’ বলে মনে করেন। আর তাই এই দিনে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

Advertisement

ভারত এই বিস্ফোরণের তীব্র নিন্দা করেছে। উৎসবের মধ্যে এ ভাবে হামলা কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় বলে জানিয়েছে নয়াদিল্লি। এটা শুধু আফগান মানুষ নয়, তাঁদের সংস্কৃতির উপরেও আঘাত। তবে তলে তলে অন্য উদ্বেগও রয়েছে ভারতের। সাউথ ব্লক মনে করছে, এই হামলা থেকে স্পষ্ট আইএস এক রকম ভারতের দোড়গোড়ায় পৌঁছে গেল। কারণ আফগানিস্তান এখন ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ। আগে আফগানিস্তানে তালিবান বা লস্করেরই প্রতিপত্তি ছিল। কিন্তু সিরিয়া, ইরাকে কোণঠাসা হয়ে আইএস এ বার আফগানিস্তানে প্রভাব বাড়াচ্ছে। যাতে তালিবানের সমর্থনও রয়েছে।

দু’দিনের সফরে এখন ওয়াশিংটনে রয়েছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টারের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে তাঁর। সেখানেও আফগানিস্তান প্রসঙ্গ উঠবে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। যেখানে জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে জোর সওয়াল করবেন ডোভাল। আমেরিকা-সহ অন্য দেশগুলোকেও তিনি বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করবেন, জঙ্গিদের অর্থের জোগান বন্ধ করতে না পারলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে।

কাবুলে আজ নিহতদের মধ্যে শিয়া সংখ্যালঘুরাও ছিলেন। পুলিশের ধারণা, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। শিয়াদের লক্ষ করে হামলা সম্প্রতি বেড়েছে আফগানিস্তানে। মার্কিন এবং আফগান সেনা অফিসারদের দাবি, আকাশপথে জঙ্গি নিকেশ বেড়ে যাওয়ায় এ ধরনের হামলা হচ্ছে। আবার এমনও হতে পারে, সরকারি বাহিনীর আত্মবিশ্বাস নষ্ট করতে কাবুলই বেছে নেওয়া হচ্ছে বিস্ফোরণের জন্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন