একসঙ্গেই বাঁচব, হোক না জীবনের শেষ ক’টা দিন

ফ্লরিডার ডাস্টিন আর সিয়েরার গল্পটা ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিয়ে আগামিকাল, রবিবার। বাড়ির কাছে ভ্যালরিকোর একটি কটেজে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ফ্লরিডা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৩
Share:

হাসপাতালে প্রেমিকা সিয়েরা-র সঙ্গে ডাস্টিন। ছবি: ফেসবুক

ডাক্তারেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর আয়ু আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ। ক্যানসার ছড়িয়ে পড়েছে গোটা শরীরে। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও হার মানেননি বছর উনিশের ডাস্টিন স্নেইডার। সময় নষ্ট না করে নিজের শেষ ইচ্ছেটা জানিয়েছিলেন প্রেমিকা সিয়েরা সিভেরিওকে। ডিনারের শেষে উপহার আর গোলাপের তোড়ার মাঝে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ফেলেন তাঁকে। এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেননি সিয়েরাও। যেন এই প্রশ্নের অপেক্ষাতেই ছিলেন। হাসতে হাসতেই বলে ওঠেন, ‘‘হ্যাঁ!’’

Advertisement

ফ্লরিডার ডাস্টিন আর সিয়েরার গল্পটা ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিয়ে আগামিকাল, রবিবার। বাড়ির কাছে ভ্যালরিকোর একটি কটেজে। কিন্তু দিনক্ষণ ঠিক হলেও এত অল্প সময়ে সব জোগাড়যন্ত্র হবে কী হবে? সেই চিন্তাটা মিটিয়ে দিয়েছেন নেটিজেনরা। ওঁদের বিয়ের জন্য টাকা জোগাড় করতে একটি ওয়েবপেজ খুলেছেন ডাস্টিনের বোন। শুক্রবার বিকেলের মধ্যেই তাতে জমা পড়েছে ১৩ হাজার ডলার!

মারণ রোগে ছেলের চেহারা ভাঙলেও মনোবল ভাঙেনি এতটুকু— বলছিলেন ডাস্টিনের মা কাসান্ড্রা ফনডান। জানালেন, ডাস্টিন-সিয়েরা ছেলেবেলার বন্ধু। মাঝে ডাস্টিনের স্কুল বদলে যাওয়ায় বছরখানেক দু’জনের মধ্যে যোগাযোগ ছিল না। তিন বছর আগে হঠাৎ দেখা। দু’জনে ডেটেও গিয়েছেন কয়েক বার।

Advertisement

আরও পড়ুন: পুষ্পকন্যার যুদ্ধে শরিক কলকাতাও

একটু থেমে মা বললেন, ২০১৬-তে খবরটা জানতে পারি। ডাস্টিনের জন্মদিনের ঠিক আগের দিন। সেটা ছিল জুনের একটা সোমবার। সেই সময়ে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়তেন ডাস্টিন। হু-হু করে ওজন কমছিল। চিকিৎসকেরা জানান, ফুসফুসের বিরল এক ধরনের ক্যানসারে ভুগছেন তিনি। শুরু হয় চিকিৎসা। কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন— বাদ গেল না কিছুই। মাস ছয়েক
পরে দেখা গেল, রোগ খানিকটা নিয়ন্ত্রণে। তবে সে স্বস্তি ক্ষণস্থায়ী। কয়েক মাস যেতে না যেতেই ফের ফুসফুসে ছোপ ধরা পড়ল। জানা গেল, নতুন করে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়েছে শরীর জুড়ে। আবার অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি, ওষুধ। তবে পুরোপুরি সেরে ওঠার আশা ক্রমেই ক্ষীণ
হচ্ছিল। সম্প্রতি চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, আর খুব বেশি হলে কয়েক সপ্তাহ বাঁচবেন ডাস্টিন। মুহূর্তে সব অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল স্নেইডার পরিবারের সামনে।

আর তার পরেই ডাস্টিনের এই সিদ্ধান্ত। তিনি বলছেন, ‘‘পুরো লড়াইয়ে সিয়েরা আমার পাশে ছিল, আছেও। জীবনের শেষ মুহূর্তটা ওর সঙ্গেই কাটাতে চাই।’’ তরুণের দুরন্ত নীল চোখে তখন শুধুই বিয়ের স্বপ্ন। এই ক’দিন দম ফেলবার ফুরসত পাননি সিয়েরাও। ডাস্টিনের শেষ স্বপ্ন সত্যি করতে চরম ব্যস্ততায় কেটেছে দিনগুলো। আসলে ভালবাসার মানুষের হাত ধরে বাঁচার স্বপ্নটা যে তাঁরও। হোক না কয়েকটা দিন।

সবাই এখন শুধু স্বপ্নের রবিবারটার অপেক্ষায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন