ফোলির খুনি চিহ্নিত, দাবি ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের

সন্দেহের তালিকায় গত কালই তার নাম উঠেছিল। রবিবার ব্রিটেনের গুপ্তচর সংস্থা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল মার্কিন সাংবাদিক জেমস ফোলির হত্যাকারী পশ্চিম লন্ডনের বাসিন্দা আব্দেল মাজেদ আব্দেল বেরি নামে এক যুবক। পেশায় র‌্যাপার (এক বিশেষ ধরনের পাশ্চাত্য গান) ওই যুবক বছর খানেক আগে সিরিয়ায় গিয়ে আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লন্ডন শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৪ ০২:৩০
Share:

নিহত সাংবাদিক জেমস ফোলি। ছবি: রয়টার্স।

সন্দেহের তালিকায় গত কালই তার নাম উঠেছিল। রবিবার ব্রিটেনের গুপ্তচর সংস্থা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল মার্কিন সাংবাদিক জেমস ফোলির হত্যাকারী পশ্চিম লন্ডনের বাসিন্দা আব্দেল মাজেদ আব্দেল বেরি নামে এক যুবক। পেশায় র‌্যাপার (এক বিশেষ ধরনের পাশ্চাত্য গান) ওই যুবক বছর খানেক আগে সিরিয়ায় গিয়ে আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দেয়। তার খোঁজে ইতিমধ্যেই উত্তর ইরাকে তল্লাশি চালাতে শুরু করেছেন ব্রিটেনের ‘স্পেশ্যাল অপারেশনস ফোর্স’ (স্যাস)-এর অফিসাররা।

Advertisement

তবে কী ভাবে ফোলির খুনিকে চিহ্নিত করল ব্রিটেন, তা নিয়ে কিছু জানা যায়নি। তবে গোয়েন্দা সূত্রে খবর, মাজেদের বাবাও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত। আমেরিকায় তার বিচার চলছে। আদতে মিশরের বাসিন্দা মাজেদ সম্প্রতি কাটা মুন্ডু হাতে নিজের একটি ছবি টুইটারে পোস্ট করেছিল। তা থেকেই তার উপর সন্দেহ জোরদার হয় ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের। তাঁদের ধারণা, এখন মাজেদ সিরিয়ার রাক্কা শহরে রয়েছে। তবে একা নয়। ব্রিটেনের বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দা আরও পাঁচ যুবক-যুবতী তার সঙ্গে রয়েছে বলে খবর। সম্ভবত এই দলটিই ‘দ্য বিটলস’ নামে কাজ করে।

ব্রিটেনের বহু নাগরিক যে আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে, সে খবর আগেই ছিল গোয়েন্দাদের কাছে। এ-ও জানা যায়, ব্রিটেনে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের অনেকেই আইএস জঙ্গিদের দলে নাম লিখিয়েছে। গত মাসেও বছর চব্বিশের এক যুবক সিরিয়ায় চলে গিয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর। ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তার নাম ইবন হামদান অল বেঙ্গলি। গোয়েন্দা দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ফি-মাসে কুড়ি জন ব্রিটিশ বাসিন্দা আইএসে যোগ দিচ্ছে। ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ডের প্রতিক্রিয়া, “আমাদের দেশ, মূল্যবোধের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে।”

Advertisement

তবে জঙ্গিরাই শুধু এ জন্য দায়ী নয়। পশ্চিমী দেশগুলির কারও কারও দাবি, তুরস্কের মতো দেশ যে কি না ন্যাটোর সদস্য সে-ও বিষয়টিতে সাহায্য করছে। তাদের যুক্তি, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে আইএস জঙ্গিদের নিজের চৌহদ্দিতে ঢুকতে অনুমতি দিয়েছিল তুরস্ক। এমনকী এখনও নাশকতা চালাতে তুরস্কের বিভিন্ন অঞ্চলকে নিরাপদ রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করছে জঙ্গিরা। অবিলম্বে তা থামাক আঙ্কারা, এমনই দাবি পশ্চিমী দেশগুলির। অন্য দিকে, জঙ্গিদের অর্থ দিয়ে সাহায্যের অভিযোগ এসেছে কাতারের বিরুদ্ধেও। প্রত্যাশিত ভাবেই কাতার জানিয়েছে, আইএসের মতো নৃশংস জঙ্গিগোষ্ঠীকে সাহায্য করার প্রশ্নই নেই। কারণ তাদের চরমপন্থী আদর্শ মোটেও সমর্থনযোগ্য নয়।

ইরাকের সমস্যা রুখতে হলে প্রতিবেশী দেশগুলিকেও যে পাশে পেতে হবে, সে কথা আগেই বলেছে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স। এমনকী শুধু ইরাকে জঙ্গিদের উপর হামলা চালালেই হবে না, লাগোয়া সিরিয়াতেও তাদের নিকেশ করতে হবে বলে মনে করছে পশ্চিমী দেশগুলি। এত দিন অবশ্য ইরাকেই নিয়ন্ত্রিত হামলা চালাচ্ছিল আমেরিকা। কিন্তু ফোলির হত্যাকে আমেরিকার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের নজির হিসেবে তুলে ধরে এখন সিরিয়াতেও নিয়ন্ত্রিত হামলা চালানোর কথা ভাবছে মার্কিন সেনা। এ কাজে ব্রিটেনও তাদের পাশে থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

তবে এ সবের মধ্যেই লাগাতার হামলা চালাচ্ছে আইএস জঙ্গিরা। এ দিনও ইরাকের বৃহত্তম তেল পরিশোধনাগার বাইজি দখলের চেষ্টা করেছে তারা। আকাশপথে মার্কিন সাহায্য নিয়ে তার জবাব দিয়েছে ইরাকি সেনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন