Donald Trump Vladimir Putin Meet

পুতিনের মোট পাঁচ দাবি নিয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে দর কষাকষি করছেন ট্রাম্প, কোনটি কতটা যুক্তিপূর্ণ? পূরণ হওয়া সম্ভব?

পুতিনের সঙ্গে কী নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে, তা প্রাথমিক ভাবে শনিবার জ়েলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের বলে রেখেছেন ট্রাম্প। সোমবার ওয়াশিংটনে যাওয়ার কথা জ়েলেনস্কির। সেখানেই উঠতে পারে পাঁচ দাবির প্রসঙ্গ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৫ ০৮:২১
Share:

(বাঁ দিকে) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আলাস্কার বৈঠকে বসে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মোট পাঁচটি দাবি শুনে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুদ্ধবিরতি এবং ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যা পূরণ হওয়া জরুরি। বিনিময়ে বেশ কিছু বিষয়ে সমঝোতা করতে রাজি হয়েছে রাশিয়াও। আপাতত তাদের পাঁচটি দাবি নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের দর কষাকষির পালা। ইউক্রেনকে এই পাঁচ দাবিতে রাজি করাতে পারলেই মিলবে বহুকাঙ্ক্ষিত যুদ্ধবিরতি। সূত্র উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে। আগামী সোমবার ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে ওয়াশিংটনে যাওয়ার কথা জ়েলেনস্কির। সেখানেই উঠতে পারে পাঁচ দাবির প্রসঙ্গ।

Advertisement

পুতিনের সঙ্গে কী নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে, তা প্রাথমিক ভাবে শনিবার জ়েলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের বলে রেখেছেন ট্রাম্প। এই পাঁচটি দাবি সমঝোতার চূড়ান্ত প্রস্তাব, না কি প্রাথমিক ভাবে এগুলি দিয়ে সমঝোতার রাস্তা খুলতে পারে বলে স্থির হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করেছেন ট্রাম্প। তার পর মার্কিন সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘এ বার বাকিটুকু প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কির উপর। সঙ্গে ইউরোপের দেশগুলিকেও উদ্যোগী হতে হবে।’’ বৈঠককে পুতিন এবং ট্রাম্প উভয়েই ‘ফলপ্রসূ’ এবং ‘ইতিবাচক’ বলে উল্লেখ করেছেন।

সূত্রের খবর, ইউক্রেনের উত্তর সুমি এবং উত্তর-পূর্ব খারকিভের যে সমস্ত অংশ রাশিয়া দখল করে নিয়েছিল, পাঁচ দাবির পরিবর্তে সেগুলি ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন পুতিন। সুমি এবং খারকিভের অন্তত ৪৪০ বর্গকিলোমিটার এখন রাশিয়ার দখলে।

Advertisement

রাশিয়ার পাঁচ দাবি কী কী

প্রথমত, ডনেৎস্ক এবং লুহান্‌স্ক থেকে ইউক্রেনের সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার দাবি করে থাকতে পারেন পুতিন। এর পরিবর্তে রাশিয়া দক্ষিণ খেরসন এবং জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে ফ্রন্ট লাইন স্থগিত করবে।

দ্বিতীয়ত, ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রাইমিয়া দখল করেছিল। সেই অঞ্চলের উপর আনুষ্ঠানিক ভাবে রাশিয়ার আধিপত্য এখনও স্বীকার করেনি আমেরিকা বা ইউরোপ। পুতিন সেই আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি চেয়ে থাকতে পারেন। তবে শুধু আমেরিকার স্বীকৃতিই যথেষ্ট, না কি ইউরোপ-সহ সমগ্র পশ্চিমি দুনিয়ার স্বীকৃতির দাবি জানানো হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।

তৃতীয়ত, রাশিয়ার উপর যে সমস্ত বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সেগুলি শিথিল করার দাবি জানিয়েছেন পুতিন। এ ক্ষেত্রেও শুধু আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেই হবে, না কি ইউরোপীয় দেশগুলিকেও সে কাজ করতে হবে বলে রাশিয়ার দাবি, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

চতুর্থত, ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু দাবি পুতিন মেনে নিয়ে থাকতে পারেন। তবে নেটো-তে তাদের সদস্যপদের বিরোধিতা করেছেন পুতিন। সূত্রের খবর, ইউরোপীয় নেতাদের ট্রাম্প আশ্বাস দিয়েছেন, ইউক্রেনকে নেটো-র সদস্যপদ দেওয়া না হলেও তাদের জন্য ‘আর্টিকেল ৫’-এর মতো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হতে পারে। নেটো-র নিয়মাবলিতে ‘আর্টিকেল ৫’ অনুযায়ী, কোনও সদস্য দেশের উপর হামলা হলে তা ৩২টি দেশের উপরেই হামলা হিসাবে ধরে নেওয়া হয়।

পঞ্চমত, ইউক্রেনের কিছু অংশে রাশিয়ান ভাষাকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়ে থাকতে পারেন পুতিন। তা ছাড়া, রাশিয়ান অর্থডক্স চার্চ যাতে ইউক্রেনের অভ্যন্তরে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারে, তার নিশ্চয়তাও পুতিনের অন্যতম দাবি বলে মনে করা হচ্ছে। এর মধ্যে কোন দাবি নিয়ে জ়েলেনস্কিকে কতটা রাজি করাতে পারবেন ট্রাম্প, ইউরোপই বা কী বলবে, তার দিকে চোখ সকলের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement