আর্নড বেলট্রামে
ফ্রান্সের ত্রেবেতে হামলাকারী জঙ্গির হাতে বন্দি এক ব্যক্তির প্রাণ বাঁচিয়ে আপাতত গোটা দেশের নায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আর্নড বেলট্রামে।
গত কাল ত্রেবের ‘সুপার ইউ’ বিপণিতে এক জঙ্গি বন্দি করেছিল কয়েক জনকে। ঘটনার আঁচ পেয়েই ফরাসি পুলিশের অফিসার আর্নড তৎক্ষণাৎ ছুটে যান ঘটনাস্থলে। নিজেকে জঙ্গির হাতে তুলে দিয়ে মুক্ত করেন এক বন্দিকে। বিপণিতে ঢোকার সময়ে নিজের মোবাইলটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সংযুক্ত করেন তিনি। ফলে ঘটনা সম্পর্কে ধারাবাহিক ভাবে খবর পেতে থাকে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত জঙ্গি-পুলিশ গুলির লড়াইয়ে আহত হন আর্নড। আজ তাঁর মৃত্যুর কথা ঘোষণা করে ফরাসি সরকার। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরার্ড কলম্ব জানান, আর্নডের ত্যাগ ফ্রান্স ভুলবে না।
ঘটনার পরেই দায় নিয়েছিল আইএস। তবে মাকরঁ জানিয়েছেন, হামলার পিছনে কারা রয়েছে তার তদন্ত শুরু হয়েছে। শুক্রবার ব্রাসেলসে ছিলেন মাকরঁ। জঙ্গি হানার খবর পেয়েই দেশে ফেরেন তিনি। মন্ত্রী ও নিরাপত্তা বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করেন।
তদন্তে জানা গিয়েছে, শুক্রবারের হামলায় মূল অভিযুক্তের নাম রেডন লাকডিম। সে কারাকাসঁয়ের বাসিন্দা। এর আগেও ছোটখাটো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। অতীতে লাকডিমের বিরুদ্ধে মাদক রাখারও অভিযোগ ছিল। কিন্তু তার সঙ্গে আইএসের সঙ্গে সংযোগের কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কলম্ব বলেছেন, ‘‘লাকডিম একাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তার সঙ্গে মৌলবাদের কোনও প্রত্যক্ষ যোগসূত্র রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ শুরু হয়েছে লাকডিমের বাড়ি তল্লাশি। তার ঘনিষ্ঠ এক মহিলাকেও আটক করা হয়েছে। লাকডিম কোথা থেকে অস্ত্র জোগাড় করেছিল, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কলম্ব জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে প্যারিস হানায় অভিযুক্ত সালাহ আবদেসসালামের মুক্তির দাবিতেই আক্রমণ চালিয়েছিল লাকডিম।
আমেরিকার সঙ্গে জোট বেঁধে ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ফ্রান্সও। ফলে গত কয়েক বছরে একাধিক বার জঙ্গি নিশানায় এসেছে মাকরঁর দেশ। মাকরঁ জানিয়েছেন, নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে।