Russia-Ukraine Conflict

Russia-Ukraine War: ‘পোশাক বদলে ফিরে এসেছে সেই নাৎসিরা’

রাশিয়া দাবি করে চলেছে, তারা শুধুমাত্র সামরিক ঘাঁটিগুলিতে হামলা করছে। ইউক্রেন বারবারই তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাভাষণের অভিযোগ আনছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কিভ শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২২ ০৫:০১
Share:

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের হাতে নিহতদের স্মরণে ৮ মে পালিত হয় ‘ডে অব রিমেমব্রেন্স অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন’। বিশেষ এই দিনটিতেই ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে জানাতে পথে নামল একটি গ্রিক মহিলা সংগঠন। রবিবার আথেন্সে। ছবি: রয়টার্স

যুদ্ধ চলছে। প্রাণ বাঁচাতে গ্রামের স্কুলবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেখানেই এসে পড়ল রাশিয়ার বোমা। আশঙ্কা করা হচ্ছে, অন্তত ৬০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। কিংবা তারও বেশি। গত কাল পূর্ব ইউক্রেনের লুহানস্কের ঘটনা। আজ হামলাটির কথা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন আঞ্চলিক গভর্নর সেরি গাইডাই। এ দিন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি দিবসের বক্তৃতায় রাশিয়াকে আক্রমণ করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি বলেন, ‘‘ফের নাৎসিবাদ ফিরে এসেছে। শুধু পোশাক বদল করে। তাদের মুখে ভিন্ন স্লোগান। কিন্তু উদ্দেশ্য একই।’’

Advertisement

গাইডাইয়ের বয়ানে জানা গিয়েছে, কমপক্ষে ৯০ জন বিলোহোরিভকা গ্রামের ওই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। শনিবার দুপুরে স্কুলটিতে এসে পড়ে বোমা। সঙ্গে সঙ্গে আগুন লেগে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় গাইডাই লিখেছেন, ‘‘চার ঘণ্টা লেগে যায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে। তার পর ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য এমনই, মাত্র ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা গিয়েছে। ৭ জন গুরুতর জখম। অন্তত ৬০ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে মাত্র দু’জনের দেহ মিলেছে।’’

গাইডাই বলেন, ‘‘স্কুলটিকে নিশানা করেছিল একটি রুশ যুদ্ধবিমান। কোনও গোলা বা শেল ফেলেনি ওরা। বোমা ফেলা হয়েছে। সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে স্কুল। আগুন ধরে যায় সঙ্গে সঙ্গে। তাতে ভয়ানক তাপমাত্রা উঠে যায়। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর যত দ্রুত সম্ভব ধ্বংসস্তূপ সরানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু ওর নীচে কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুব কম। তবে আশায় বুক বাঁধা ছাড়া তো উপায় নেই। হয়তো কেউ বেঁচে থাকলেও থাকতে পারেন।’’

Advertisement

রাশিয়া দাবি করে চলেছে, তারা শুধুমাত্র সামরিক ঘাঁটিগুলিতে হামলা করছে। ইউক্রেন বারবারই তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাভাষণের অভিযোগ আনছে। গত কাল জানানো হয়েছে মারিয়ুপোলের আজ়ভস্টল কারখানা থেকে সকল সাধারণ মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু সেই দাবি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন কারখানায় আটকে থাকা ইউক্রেনীয় বাহিনী। আজ তারা মাটির নীচে বাঙ্কার থেকেই অনলাইনে সাংবাদিক বৈঠক করেন। তাতে ডেপুটি কমান্ডার ক্যাপ্টেন শ্ব্যাতোস্লাভ কালিনা পালামার জানান, এখনও একনাগাড়ে গোলাবর্ষণ করে চলেছে রুশ বাহিনী। কারখানাটিকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বৈঠকে কথা বলেন পালামার ও ইলিয়া সামোলেঙ্কো। দু’জনেরই এক মুখ দাঁড়ি। চোখেমুখে যুদ্ধের ক্লান্তি স্পষ্ট। সামোলেঙ্কা দাবি করেছেন, মারিয়ুপোলে অন্তত ২৫ হাজার মানুষকে খুন করেছে রাশিয়া। তাঁর কথায়, ‘‘আত্মসমর্পণের প্রশ্নই নেই। ধরা দেওয়া মানে মৃত্যু। শত্রুদের এত বড় উপহার দিতে পারব না।’’ জখম সেনাদের উদ্ধার করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন দু’জনেই। তবে একই সঙ্গে সামোলেঙ্কো এ-ও বলেন, ‘‘আমরা আসলে মরেই গিয়েছি। আমরাও সেটা জানি।’’

আজ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে জয়োৎসব পালন করছে গোটা ইউরোপ। বার্লিন পুলিশ ইউক্রেন ও রাশিয়ার পতাকা ওড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কিন্তু সেই নিষেধ উড়িয়ে বার্লিনের রাস্তায় ইউক্রেনের বিশালাকার পতাকা ওড়ালেন কয়েকশো জার্মান। তাতে লেখা, ‘ওরা আসলে আমরাই’। রাশিয়া আগামিকাল পালন করবে বিজয় উৎসব। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কাল কী বলেন, সে দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্ব।

আজ সকলকে চমকে দিয়ে ইউক্রেনের এক স্কুলে যান আমেরিকান ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন। দেখা করেন ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি ওলেনা জ়েলেনস্কির সঙ্গে। আজ মাতৃদিবসও ছিল। এমন একটা দিনে জিল বাইডেনের ইউক্রেন সফরে অভিভূত ওলেনা। রুশ আগ্রাসন শুরুর পরে এই প্রথম প্রকাশ্যে এলেন প্রেসিডেন্ট-পত্নী ওলেনা। তিনি আদৌ ইউক্রেনে আছেন কি না, সে নিয়ে জল্পনা চলছিল। তারও অবসান ঘটল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন