শপথ নিলেন আপনারাই, বললেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প

বাগ্মী বলে খ্যাতি ছিল তাঁর পূর্বসূরির। শপথগ্রহণের পরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর প্রথম বক্তৃতায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বুঝিয়ে দিলেন, তিনিও কম যান না! সমবেত চার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে (জিমি কার্টার, বিল ক্লিন্টন, জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বারাক ওবামা) প্রথাগত ধন্যবাদ জানানোর পরে ৪৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট সোজা চলে গেলেন ‘কাজের কথায়’।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৪৮
Share:

প্রাক্তন-বর্তমান: শপথের আগে। শুক্রবার ওয়াশিংটনে বারাক ওবামা ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এপি

বাগ্মী বলে খ্যাতি ছিল তাঁর পূর্বসূরির। শপথগ্রহণের পরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর প্রথম বক্তৃতায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বুঝিয়ে দিলেন, তিনিও কম যান না!

Advertisement

সমবেত চার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে (জিমি কার্টার, বিল ক্লিন্টন, জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বারাক ওবামা) প্রথাগত ধন্যবাদ জানানোর পরে ৪৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট সোজা চলে গেলেন ‘কাজের কথায়’। বললেন, ‘‘আজকের এই অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ মাত্রা রয়েছে। কারণ, আজ শুধু প্রশাসনের বদল বা কোনও দল থেকে আর একটি দলে ক্ষমতার হাতবদল হল না। আজ ক্ষমতা চলে গেল ওয়াশিংটন থেকে। ক্ষমতা ফিরে পেলেন আপনারা— আমেরিকার সাধারণ মানুষ।’’

প্রচারের সময় এই কথাটাই বারবার বলে মার্কিন ভোটারদের মন কেড়ে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। বলেছিলেন, এত দিন আমেরিকায় যে-টুকু ভাল হয়েছে, তার মুনাফা লুটেছে শুধু ক্ষমতার অলিন্দে বসে থাকা মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ। তিনি যদি ক্ষমতায় আসেন, সেই ছবি আমূল পাল্টে দেবেন। আজ শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানেও তিনি বললেন, ‘‘এত দিন রাজনৈতিক নেতাদের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে, কিন্তু কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, চাকরি হারিয়েছেন বহু মানুষ। সেই সব দিন শেষ। এ বার সাধারণ মানুষ দেশের সম্পদ ভোগ করতে পারবেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘দেশের চাকরি বিদেশে চলে যাবে কি না, দেশের সীমান্ত সুরক্ষিত থাকবে কি না বা ইসলামি জঙ্গিরা আমাদের ক্ষতি করবে কি না, সেই সব নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না।’’

Advertisement

‘‘যে মা তাঁর সন্তানদের নিয়ে অভুক্ত দিন কাটান, হাজার হাজার ডলার খরচ করতে পারে না বলে কলেজে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায় যে পড়ুয়ার, মাদক পাচারকারীর গুলিতে
ঝাঁঝরা হয়ে যায় যে সব পরিবার,’’ তাঁদের সকলকে ট্রাম্পের আশ্বাস— ‘‘এই হত্যালীলা এ বার বন্ধ হবে।’’ প্রতিটি আমেরিকাবাসীর হয়ে তিনি আজ শপথ নিলেন, জানিয়েছেন ট্রাম্প। বলেছেন, ‘‘আপনাদের সকলের জন্য চাকরি ফিরিয়ে আনব, সীমান্ত ফিরিয়ে আনব, সম্পদ ফিরিয়ে আনব, স্বপ্ন ফিরিয়ে আনব।’’

আব্রাহাম লিঙ্কন যে বাইবেল হাতে শপথ নিয়েছিলেন, সেই বাইবেলের ওপর হাত রেখেই শপথ নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সঙ্গে ছিল তাঁর পারিবারিক বাইবেলও। যেটি ডোনাল্ডের মা ১৯৫৫ সালে তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন। শুরু থেকেই যে তিনি ওবামার দেখিয়ে দেওয়া পথের উল্টো দিকে হাঁটবেন, আজ তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট। বলেছেন, ‘‘রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে বদান্যতা দেখানোর দিন শেষ। আমাদের দায়িত্ব, সকলের কর্মসংস্থান করা। আমরা সেটাই করব। তার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা বানাব, ব্রিজ বানাব, বিমানবন্দর, রেলপথ বানাব। আমেরিকাকে আবার মহান বানাব।’’

ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্যে প্রেসিডেন্টের এই প্রতিশ্রুতিতে হাততালি বিস্তর পড়েছে। তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন— এই একই কথা তো গত ১৮ মাস ধরে বলে এসেছেন ট্রাম্প। নতুন পদে অভিষিক্ত হওয়ার পরেও কি নতুন কিছু বলার নেই তাঁর? অনেকে আবার আর এক ধাপ এগিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, কথাগুলো বলা সোজা। করে দেখাতে কি আদৌ পারবেন এমন এক জন রাষ্ট্রনেতা, যাঁর ভোটে দাঁড়ানোর আগে কোনও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাই ছিল না!

পারবেন কি না, তা বুঝতে আপাতত অপেক্ষা। তবে পথটা য়ে কণ্টকাকীর্ণ, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে এ দিনই। ওয়াশিংটন-সহ দেশের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ট্রাম্প-বিরোধীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওয়াশিংটনের রাস্তায় কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয় পুলিশকে, গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় একশো জন বিক্ষোভকারীকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন