ইতিহাস গড়ে উচ্ছ্বসিত সিঙ্গাপুর

আজ দুই নেতার কনভয় যখন ছুটছে সেন্টোসার হোটেলের দিকে, রাস্তার দু’ধারে মোবাইলে ছবি-ভিডিয়ো তোলার হিড়িক! কেউ কেউ একটু ভয়ে। কোন নজরদারি ক্যামেরা কাকে দেখছে, বোঝা মুশকিল। তাই সবই মেপেজুপে।

Advertisement

তারক দাস

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৮ ০৩:১২
Share:

এমন একটা ঐতিহাসিক বৈঠক কলকাতা বা ভারতের অন্য কোথাও হলে কতটা তোলপাড় পড়ত, এত দূরে থেকেও বেশ আঁচ করতে পারছি। পাড়ার আড্ডা, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস, বাস-ট্রেন-মেট্রোর গুরুগম্ভীর আলোচনা বা রসিকতায় ঘুরে-ফিরে আসত দু’টো নাম। ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কিম জং উন।

Advertisement

দৃশ্যত ততটা আলোড়ন এই সিঙ্গাপুরে নেই ঠিকই। ট্রাম্প-কিমকে কালো পতাকা দেখানোর ভিড় এখানে নেই। শোনা যাবে না ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও। কিন্তু তা বলে জনতার আগ্রহ কি নেই? আজ দুই নেতার কনভয় যখন ছুটছে সেন্টোসার হোটেলের দিকে, রাস্তার দু’ধারে মোবাইলে ছবি-ভিডিয়ো তোলার হিড়িক! কেউ কেউ একটু ভয়ে। কোন নজরদারি ক্যামেরা কাকে দেখছে, বোঝা মুশকিল। তাই সবই মেপেজুপে।

সবাই অবশ্য মানছেন, এ শহরের কাছে আজ গর্বের দিন! হোটেল থেকে বৈঠকের পথে রওনা হয়েই ট্রাম্প টুইট করলেন মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট সংক্রান্ত একটি বিষয়ে। সাধারণত যে বৈঠক বা সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যান, ‘হোমওয়ার্ক’ ভাল করে তৈরি থাকে। তবু এ বার তাঁর সামনে যে কিম জং উন! চিন্তা তো থাকে। ক্যাপিলা হোটেলে একসঙ্গে বসলেও খাতায়-কলমে এখনই দু’দেশের সব বিরোধ মিটে গিয়েছে, তা তো নয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: ট্রাম্প-কিম বৈঠক: নয়া অধ্যায়ে সঙ্গী সংশয়ও

আজ অফিসের লাঞ্চ ব্রেকে সরাসরি সম্প্রচার দেখতে দেখতে এ সব নিয়েই আমরা আলোচনায় মেতেছিলাম। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই অনেক কিছু বলেছেন। বলা হচ্ছে, কিমের হোটেলের যাবতীয় খরচ-সহ অন্তত দু’কোটি ডলার খরচ হচ্ছে সিঙ্গাপুর সরকারের। এই বিনিয়োগ থেকে কী পাবে সিঙ্গাপুরবাসী? সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও প্রশ্ন, এমন বৈঠক ফের সিঙ্গাপুরে হলে সরকার আবার এত অর্থব্যয় করবে? বেশ কয়েক জন আবার লিখেছেন, ১২ জুন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হোক— বিশ্ব শান্তি প্রয়াস দিবস উপলক্ষে!

কিম-ট্রাম্পের মধ্যে কতটা ‘দোস্তি’ (স্পেশ্যাল বন্ড) হয়েছে, সেটা ভবিষ্যৎ বলবে। তাঁরা আবার দেখা করবেন, এমনও শোনা গেল। আশা করা যেতে পারে, সে বৈঠক সিঙ্গাপুরেই হবে। শান্তির লক্ষ্যে সিঙ্গাপুরের এই ভূমিকা নিঃসন্দেহে বিশ্ব মনে রাখবে।

বিশ্বের কাছে সিঙ্গাপুর ‘স্মল রেড ডট’ বলে পরিচিত। সেই ছোট্ট লাল বিন্দুটা এই বিশাল ঐতিহাসিক সম্মেলন করল— নিঃসন্দেহে সেটাই প্রশংসার। উত্তর কোরিয়ার বিখ্যাত পদ ‘কিমচি’ কবে হোয়াইট হাউসের ডিনার প্লেটে দেখা যাবে, আমরা রইলাম সেই অপেক্ষায়।

(লেখক সিঙ্গাপুরে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement