ব্রেক্সিট বাঁচাতে সোজা ইউরোপ ছুটলেন টেরেসা

মে কিন্তু হাল ছাড়ছেন না। হয় দেশের এমপি, না হয় ইইউ, যে কোনও একটি পক্ষের সুর নরম করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি। ইউরোপের পথে মে আজ রওনা হয়ে যাওয়ার পরেই ১০, ডাউনিং স্ট্রিটের এক মুখপাত্র জানান, ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে হাউস অব কমন্সে ২১ জানুয়ারির মধ্যে ভোট হবেই।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:২৮
Share:

পাশে: জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের (ডান দিকে) সঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। বার্লিনে। রয়টার্স

পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট বিল নিয়ে ভোটাভুটি পিছিয়ে দিয়ে তড়িঘড়ি ইউরোপ উড়ে গেলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। উদ্দেশ্য, ইউরোপের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে দেখা যে, কোনও ভাবে খসড়া চুক্তিতে কিছু পরিবর্তন করা যায় কি না। তবে অনড় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর প্রধান জ়ঁ-ক্লদ ইয়ুঙ্কার। তিনি আজও জানিয়ে দিয়েছেন, খসড়া চুক্তি থেকে আদপেই সরছেন না তাঁরা।

Advertisement

মে কিন্তু হাল ছাড়ছেন না। হয় দেশের এমপি, না হয় ইইউ, যে কোনও একটি পক্ষের সুর নরম করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি। ইউরোপের পথে মে আজ রওনা হয়ে যাওয়ার পরেই ১০, ডাউনিং স্ট্রিটের এক মুখপাত্র জানান, ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে হাউস অব কমন্সে ২১ জানুয়ারির মধ্যে ভোট হবেই।

ইউরোপ পৌঁছনোর পরেই জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে কথা হয়েছে মে-র। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও কথা হবে তাঁর। এ দিকে, কালই ইউরোপীয় কোর্ট অব জাস্টিস জানিয়েছিল, ব্রিটেন যদি চায়, যে কোনও সময়ে ব্রেক্সিটের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতেই পারে। তার জন্য ইইউ-এর ২৭টি সদস্য দেশের অনুমতি নেওয়ার দরকার নেই।

Advertisement

আজ মঙ্গলবার, ব্রেক্সিট বিলটি নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভোট দেওয়ার কথা ছিল ব্রিটিশ এমপিদের। কিন্তু শেষ মুহূর্তে টেরেসা ঘোষণা করেন, আপাতত ভোট স্থগিত রাখছেন তিনি। সেই ঘোষণা করামাত্র রে রে করে ওঠেন বিরোধীরা। এমনকি, প্রবল সমালোচনা করেন টেরেসার দলেরও একটা বড় অংশ। লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টির উপর, ঘটনাক্রমের উপর, পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মে।’’ এই ঘোষণার পরে গত কুড়ি মাসে গত গতকাল সব থেকে নীচে নেমে গিয়েছিলে ব্রিটিশ পাউন্ডের দর (ডলারের সাপেক্ষে)।

ব্রেক্সিট বিলের যে জায়গাটি নিয়ে বিরোধীদের, এমনকি দলেরও একটা বড় অংশের তোপের মুখে পড়েছেন মে, সেটি হল নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড সংক্রান্ত সীমান্ত নীতি। স্বতন্ত্র দেশ আয়ারল্যান্ড ইইউ-এর অন্তর্গত। আর নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ব্রিটেনের অংশ। বহু বছর ধরে এই সীমান্তে গণ্ডগোল লেগেই থাকত। ২০০৮ সালের ‘গুড ফ্রাইডে চুক্তি’র পরে পরিস্থিতি কিছুটা

পাল্টায়। এখন নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড আর আয়ারল্যান্ডের নাগরিকদের সীমান্ত পার হওয়ায় কোনও বাধা নেই। লাগে না বাড়তি কোনও কাগজপত্রও। এখানেই মুশকিলে পড়েছেন মে। কারণ ইইউ থেকে ব্রিটেন বেরিয়ে এলে তাদের সঙ্গে লন্ডনের নতুন

সীমান্ত নীতি তৈরি করতে হবে। তখন ‘গুড ফ্রাইডে চুক্তি’ ভেঙে ফেলতে হতে পারে, এই আশঙ্কাই প্রকাশ করছেন টেরেসা-বিরোধী এমপিরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন