Hindu Monarchy

রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে নেপালে হাজার হাজার মানুষের জমায়েত, উঠছে হিন্দুরাষ্ট্রে প্রত্যাবর্তনের আওয়াজও

নেপালে যখন রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত ছিল, সেই সময়ে দেশটি হিন্দুরাষ্ট্র হিসাবেই পরিচিত ছিল। জ্ঞানেন্দ্রকে সরিয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে নেপালকে ধর্মনিরপেক্ষ ঘোষণা করা হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৫ ২০:১৭
Share:

কাঠমান্ডুর রাস্তায় ক্ষমতাচ্যুত রাজা জ্ঞানেন্দ্র। —ফাইল চিত্র।

গণতন্ত্র ছেড়ে আবার রাজতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের স্লোগান উঠল নেপালে। সেই সঙ্গে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ নেপালে আবার রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে হিন্দুত্বকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে হল জমায়েত। ক্ষমতাচ্যুত রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহকে ঘিরে রবিবার হাজার হাজার মানুষ নামলেন কাঠমান্ডুর রাজপথে।

Advertisement

নেপালের পশ্চিমাঞ্চল সফর শেষ করে রবিবার জ্ঞানেন্দ্র কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছন। তাঁকে স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন বিপুল সংখ্যক সাধারণ নাগরিক। সেখানে স্লোগান ওঠে ‘আমরা আবার রাজতন্ত্র চাই’। জ্ঞানেন্দ্রকে আবার রাজপ্রাসাদে বসবাস করতে দেওয়ার দাবিও ওঠে। সেই সঙ্গে দাবি তোলা হয় নেপালকে আবার ‘হিন্দুরাষ্ট্র’ ঘোষণার। জ্ঞানেন্দ্রের সমর্থনে হয় বাইক মিছিলও। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পুলিশ জানিয়েছে, রাজতন্ত্রপন্থী জমায়েতে ছিলেন ১০ হাজার মানুষ। জ্ঞানেন্দ্রের সমর্থক হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টির দাবি, লক্ষাধিক!

দু’দশক আগেও ভারতের উত্তরের পড়শি দেশ নেপালেও প্রচলিত ছিল রাজতন্ত্র। শেষ রাজা ছিলেন জ্ঞানেন্দ্র। ২০০৬ সালে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। এর পরে ২০০৮ সালের মে মাসে সংবিধান সংশোধন করে ২৪০ বছরের পুরনো রাজতন্ত্র ভেঙে নেপালে প্রতিষ্ঠিত হয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা। ২০১৫ সালে অনুমোদিত হয় নতুন ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ সংবিধান। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর জ্ঞানেন্দ্র নেপালের সাধারণ নাগরিক হিসাবে বাস করেন। তাঁর কোনও রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ক্ষমতা নেই। অনুমতি নেই রাজপ্রাসাদে যাওয়ার। এমনকি, সরকারি কোনও সুবিধাও তিনি পান না।

Advertisement

নেপালে যখন রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত ছিল, সেই সময়ে দেশটি হিন্দুরাষ্ট্র হিসাবেই পরিচিত ছিল। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরে নেপালকে ধর্মনিরপেক্ষ বলে ঘোষণা করা হয়। পরে দেশের সংবিধানেও সেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, ১৭৬৮ সালে সেখানে শাহ রাজবংশের সূচনা হয়েছিল। জ্ঞানেন্দ্রর দাদা রাজা বীরেন্দ্র ছিলেন পৃথ্বীনারায়ণের নবম প্রজন্ম। তাঁকে হত্যা করে যুবরাজ দীপেন্দ্র আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। মৃত্যুশয্যাতেই তাঁর অভিষেক হয়। দীপেন্দ্র বাঁচেননি। ২০০১-এর জুন মাসের সেই হত্যাকাণ্ডের পর জ্ঞানেন্দ্র সিংহাসনে বসেছিলেন। রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মাওবাদী সমস্যার মোকাবিলায় ২০০৫ সালের গোড়ায় নেপালে গণতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা হাতে নিয়েছিলেন জ্ঞানেন্দ্র। তার পরে দ্রুত তাঁর বিরুদ্ধে জনবিক্ষোভ দানা বেঁধেছিল। এ বার কি উলটপুরাণের পালা?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement