দেখে নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের, নিশানায় কিম, চাপ চিনকেও

আবারও বেপরোয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিন সাহায্য না করলে, উত্তর কোরিয়াকে একাই দেখে নেওয়ার হুমকি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গত কাল এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘উত্তর কোরিয়ায় উপর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে বেজিংয়ের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:০৬
Share:

ইরাকের পথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যতম উপদেষ্টা, তাঁর জামাই জারেড কুশনার (বাঁ দিকে)। সোমবার জার্মানির র‌্যামস্টেন বিমানঘাঁটিতে। ছবি: রয়টার্স

আবারও বেপরোয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প।

Advertisement

চিন সাহায্য না করলে, উত্তর কোরিয়াকে একাই দেখে নেওয়ার হুমকি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গত কাল এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘উত্তর কোরিয়ায় উপর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে বেজিংয়ের। তাই এখন চিনকেই ঠিক করতে হবে, ওরা কাদের পাশে থাকবে! আমাদের সাহায্য করলে ওদেরই মঙ্গল। আর না করলে তা কারও পক্ষেই ভাল হবে না।’’

উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে গোড়া থেকেই সুর চড়িয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। আর এ বার এক তিরে বিঁধলেন চিনকেও। চলতি সপ্তাহেই চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে তাঁর। দক্ষিণ ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো এস্টেটে। বেজিংয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটনের বাণিজ্যিক বিরোধ এমনিতেই এখন তুঙ্গে। এমতাবস্থায় ট্রাম্পের এই মন্তব্য দু’দেশের সম্পর্কের পারদ অনেকটাই চড়িয়ে দিল বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। সূত্রের খবর, বাণিজ্যের পাশাপাশি উত্তর চিন সমুদ্রে তৈরি হওয়া জটিলতা নিয়ে কথা হবে দুই রাষ্ট্রনেতার। আর এ বার ট্রাম্প নিজেই জানালেন, তাঁদের আলোচনার একটা বড় অংশ জুড়ে থাকবে উত্তর কোরিয়াও।

Advertisement

কারণ তিনি মনে করেন, চিনা মদতেই এতখানি বাড় বেড়েছে উত্তর কোরিয়ার। পিয়ংইয়ংয়ের উপর সব ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের। কিন্তু তা অগ্রাহ্য করেই কিম জং উনের প্রশাসন গত বছর অন্তত দু’টি পারমাণবিক এবং দু’ডজনেরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। আর মার্কিন গোয়েন্দাদের অনুমান, এর বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে তাদের প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে বেজিং।

সাক্ষাৎকারটিতেও ট্রাম্প বলেন, ‘‘চিন এখনও যদি না উত্তর কোরিয়ার উপর চাপ বাড়ায়, তা হলে বুঝতে হবে ওদের সদিচ্ছায় নেই। তাই যা করার আমাদেরই করতে হবে।’’ উত্তর কোরিয়াকে বাগে আনতে মার্কিন নীতি ঢেলে সাজার কথা বলেছেন বিদেশসচিব রেক্স টিলারসনও। চলতি এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে দু’দিন আগে জাপানে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘উত্তর কোরিয়ায় লাগামছাড়া পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা রুখতে আমরা ২০ বছর ধরে যে ভাবে এগিয়েছি, তাতে কোনও কাজ হয়নি। এ বার কঠোর হতেই হবে।’’ ট্রাম্পের দাবি, সেই রণনীতি তৈরিই আছে। কিন্তু এখনই তা খোলসা করতে নারাজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

যদিও হোয়াইট হাউসের একাধিক সূত্রের ইঙ্গিত— প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে চিনের উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা বসাতে চলেছে ট্রাম্প প্রশাসন। উত্তর কোরিয়া থেকে একটা বড় অংশের শ্রমিক কাজ করেন বিভিন্ন চিনা সংস্থায়। বেজিংকে বাড়তি বাণিজ্যের লোভ দেখিয়ে তা আটকে দিতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যদিও মুখে তিনি চিনকে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কথা এক বারও বলছেন না। এখন বৈঠকে কী হয়, সেটাই দেখার।

তবে উত্তর কোরিয়াকে শায়েস্তা করতে তিনি যে মরিয়া, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে আজই। পিয়ংইয়ংয়ের ডুবোজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হুমকির মোকাবিলায় আজ থেকেই দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে তিন দিনের যৌথ মহড়া শুরু করেছে মার্কিন নৌসেনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন