বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। —ফাইল চিত্র।
বেহাল দশা। রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের দু’টি টার্মিনাল এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের বন্দরের একটি টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দিচ্ছে বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূস পরিচালিত অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী ডিসেম্বরে এই সংক্রান্ত চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কথা। দেশের নৌপরিবহণ মন্ত্রকের সচিব মহম্মদ ইউসুফ নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। মেনে নিয়েছেন, ‘এ ছাড়া আর উপায় নেই’।
চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া এবং নিউমুরিং কনটেনার টার্মিনালের দায়িত্ব বিদেশি অপারেটরদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঢাকার কেরানীগঞ্জের পানগাঁও বন্দরের টার্মিনালও বিদেশিরা দেখাশোনা করবেন। নৌসচিব জানিয়েছেন, আপাতত ২৫ থেকে ৩০ বছরের জন্য টার্মিনালগুলির দায়িত্ব বিদেশিদের দেওয়া হচ্ছে। বন্দরের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে এ ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। এ প্রসঙ্গে ভারত, শ্রীলঙ্কার উদাহরণও টেনেছেন তিনি।
চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনালের বেহাল দশার কথা মেনে নিয়েছেন নৌসচিব। জানিয়েছেন, ওই বন্দরে মোট ১৩টি গেট আছে। কিন্তু প্রতি গেটে স্ক্যানিংয়ের যন্ত্র পর্যাপ্ত নেই। মাত্র ছ’টি যন্ত্র আছে। তার মধ্যেও তিন থেকে চারটি স্ক্যানিং যন্ত্র খারাপ হয়ে পড়ে থাকে। নৌসচিবের কথায়, ‘‘এ ভাবে তো বন্দর চলতে পারে না। আমরা বিদেশি অপারেটরদের এই কাজে নিয়োগ করব। ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ লক্ষের বেশি কনটেনার ওঠানো-নামানোর চ্যালেঞ্জ আমাদের সামাল দিতে হবে। তাই বিদেশি অপারেটর ছাড়া আর উপায় নেই।’’
বিদেশিদের হাতে বন্দরের দায়িত্ব ছেড়ে দিলে আগামী দিনে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সে দেশের নৌসচিব। তিনি বলেন, ‘‘এটা করতে পারলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। ভারত, শ্রীলঙ্কা-সহ অনেক দেশেই এই ব্যবস্থা চালু আছে। সেখানেও বিদেশি অপারেটরদের নিয়োগ করা হয়েছে।’’ বাংলাদেশের বন্দরগুলির উন্নয়নকল্পে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। চুক্তি হলে তা সকলের জ্ঞাতার্থে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে দেওয়া হবে।
ঢাকার পল্টনে ইকনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম ‘সমুদ্রগামী জাহাজশিল্পের বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। নৌসচিব ছিলেন সেই অনুষ্ঠানের প্রধান। এ ছাড়া, বিশেষ অতিথি হিসাবে বাংলাদেশের সমুদ্রগামী জাহাজ পরিচালনা সংক্রান্ত শীর্ষ আধিকারিকেরা সেমিনারে ছিলেন।