বাণিজ্য চুক্তি করতে জট খোলার চেষ্টা

সম্মেলনে বক্তাদের তালিকায় রয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পেট্রলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, বাণিজ্য ও রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল, অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, বিজেপি নেতা রাম মাধব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:০৮
Share:

—ফাইল চিত্র

অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও গত মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন সফরের সময়ে ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি করা সম্ভব হয়নি। তবে সেই প্রয়াস চেষ্টা চলছে। সরকারি তরফের পাশাপাশি এগোচ্ছে ট্র্যাক টু-র উদ্যোগও। আগামিকাল ভারত ও আমেরিকার কিছু প্রাক্তন-বর্তমান সরকারি কর্তা দু’দেশের প্রায় ৩০০টি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে নয়াদিল্লিতে আলোচনায় বসছেন। ‘ইউএস-ইন্ডিয়া স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ ফোরাম’-এর উদ্যোগে হওয়া এই সম্মেলনটির মূল ভাবনা ‘উন্নয়নের অংশিদারিত্ব’। ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্কের প্রশ্নে এই সম্মেলনকে প্রধানমন্ত্রীর নিউ ইয়র্ক সফরের পরবর্তী অধ্যায় হিসেবেই দেখছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।

Advertisement

সম্মেলনে বক্তাদের তালিকায় রয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পেট্রলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, বাণিজ্য ও রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল, অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, বিজেপি নেতা রাম মাধব। আমেরিকার পক্ষ থেকে থাকবেন প্রাক্তন বিদেশ সচিব কন্ডোলিসা রাইস, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র সচিব হেনরি কিসিংগার, বিভিন্ন মার্কিন ব্যাঙ্কের শীর্ষ কর্তারা, গুগলের সিইও-সহ বহু বাণিজ্য কর্তা। আগামী পাঁচ বছরে বাণিজ্য ক্ষেত্রে কোন কোন জায়গায়, কী ধরনের উন্নতি হতে পারে তা নিয়ে বিশদে আলোচনা হবে। গত মাসে বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল, বাণিজ্য সচিব অনুপ ওয়াধওয়ান প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি দলের সদস্য হয়ে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটথিজারের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলছিলেন চুক্তি করা নিয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সমাধান সূত্রে পৌঁছনো যায়নি। আমেরিকার দাবি, ভারতে আসা অ্যাপল-এর মতো দামি স্মার্টফোন, স্মার্ট-ঘড়ির উপরে শুল্ক কমানো বা তুলে নেওয়া হোক। নয়াদিল্লির বক্তব্য, তাতে চিন-হংকংয়ের ফায়দা হবে। তার বদলে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প সফল করতে অ্যাপল-ই ভারতে কারখানা খুলুক।

আমেরিকা চাইছে, সে দেশের কৃষি ও ডেয়ারি পণ্যের জন্য ভারতের বাজার বেশি করে খুলে দেওয়া হোক। তবে চাষি-পশুপালকদের কথা ভেবে বিজেপি নেতৃত্ব আপাতত মার্কিন কৃষি পণ্যের জন্য বাজার খুলতে নারাজ। পাশাপাশি ট্রাম্প চাইছেন, মোদী সরকার হৃদ‌্‌রোগের চিকিৎসার স্টেন্টের দামে যে ঊর্ধ্বসীমা তুলে নিক। তাতে মার্কিন সংস্থার ফায়দা হলেও সাধারণের ক্ষোভ বাড়বে বলে মোদী সরকার এই পদক্ষেপ করতে নারাজ। উল্টে নয়াদিল্লি চাইছে, ভারত থেকে রফতানি করা ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম থেকে বাড়তি শুল্ক তুলে নিন ট্রাম্প। এ দেশের কৃষি ও ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যের জন্য আরও বেশি করে মার্কিন বাজার খুলে দেওয়া হোক। এ ছাড়া, ই-কমার্স নীতি এবং এ দেশে বিদেশি সংস্থাগুলির ব্যবসার তথ্য এ দেশেই রাখতে হবে বলে (ক্রেডিট কার্ড সূত্রে তথ্য বিদেশের সার্ভারে যাওয়া আটকাতে) রিজার্ভ ব্যাঙ্কের শর্তের ক্ষেত্রেও দু’দেশের সমঝোতা প্রায় অসম্ভব বলেই সরকারি সূত্রের খবর। এই দর কষাকষির মধ্যেই দোদুল্যমান ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন