জন কপূর
তাঁর ‘শিকার’ ছিলেন মূলত কঠিন অসুখে আক্রান্তেরা। ব্যথার ওষুধের নামে বেআইনি ভাবে আফিম দেওয়া ওষুধ বিক্রি করত তাঁর সংস্থা। অথচ শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়া ক্যানসার-রোগীদেরই এক মাত্র আফিম দেওয়া হয়। চিকিৎসকদের ঘুষ দিয়ে ওই সব বিপজ্জনক ওষুধ দেওয়াতেন তিনি।
রোগীদের অনেকেই ওষুধে আসক্ত হয়ে পড়তেন। মারাও যান অনেকে। এমনই সব অভিযোগে মার্কিন আদালতে তোলা হল এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে। দোষী সাব্যস্ত হলে জন কপূর নামে বছর ৭৫-এর ওই ধনকুবেরের কড়া শাস্তি হতে পারে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
ভারতে থাকতে কিন্তু কষ্ট করে সৎ পথে ব্যবসা করেই বিপুল অর্থের মালিক হয়েছিলেন জন। মার্কিন মুলুকে তাঁর ব্যবসা আরও জাঁকিয়ে বসে। অভিযোগ, ঘুষ দিয়ে তাঁর সংস্থার ওষুধের প্রচার করাতেন তিনি। কখনও বা বিলাসবহুল নৈশভোজের আয়োজন করতেন ডাক্তারদের জন্য। চিকিৎসকদের মোটা অঙ্কের অর্থ ঘুষ দিয়ে আফিম দেওয়া যন্ত্রণার ওষুধ দেওয়ানোর করার অভিযোগও উঠেছে জনের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে ওষুধের বাজারে আফিমের কৃত্রিম অভাব তৈরির অভিযোগও আছে।
বস্টনের একটি আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই ঘটনার সূত্র ধরে আমেরিকার অন্তত ১৫০০ প্রাদেশিক সরকার আফিম প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোকে আদালতে টেনেছে। যার জেরে ওষুধ-শিল্পে বড় ধাক্কা লাগতে পারে বলে আশঙ্কা। ‘ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকি কলেজ অব ল’-এর বিশেষজ্ঞ রিচার্ড অসনেসের কথায়, ‘‘জন দোষী সাব্যস্ত হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। আফিম প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগে মামলা করা হতে পারে।’’
জনেদের বংশে তিনিই প্রথম কলেজে পা দিয়েছিলেন। ১৯৭২ সালে বাফেলো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে ডক্টরেট করার পরে ওষুধ ব্যবসায় উদ্যোগপতি হিসেবে কাজ শুরু করেন। ওষুধ কারখানার ম্যানেজারও ছিলেন। পরে একটি সংস্থার সিইও হন। শেষে নিজের সংস্থা খোলেন। ক্রমে ডালপালা মেলে সেই সংস্থা।