9/11 Attack

9/11 Attacks: ৯/১১ সন্ত্রাসের দু’দশক পূর্তির মুখেই গুয়ান্তানামোয় বিচার শুরু মূল চক্রী খালিদের

২০০৩-এর মার্চে আমেরিকার গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র ‘স্পেশাল অ্যাক্টিভিটিজ ডিভিশন’ পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি থেকে গ্রেফতার করেছিল খালিদকে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২১:৫৮
Share:

৯/১১ সন্ত্রাসের সেই ছবি। ফাইল চিত্র।

৯/১১ সন্ত্রাসের দু’দশক পূর্তির আর চার দিন বাকি। তার আগে শুরু হচ্ছে মূল চক্রী খালিদ শেখ মহম্মদের বিচার। গত ১৫ বছর ধরে কিউবার গুয়ান্তানামো বে কারগারে বন্দি পাক বংশোদ্ভূত জঙ্গি খালিদের বিচার শুরুর কথা মঙ্গলবার জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের টুইন টাওয়ার এবং পেন্টাগনে বিমানহানার পিছনে নিজের ভূমিকার কথা অবশ্য আগেই স্বীকার করেছিলেন খালিদ। ২০০৬ সালে আমেরিকার একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলবন্দি খালিদ জানিয়েছিলেন, তিনি ৯/১১ হামলার অন্যতম চক্রী। আমেরিকায় মুসলিমদের প্রতি নানা ‘অন্যায় আচরণ’ তাঁকে প্রতিশোধ নিতে প্ররোচিত করেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

Advertisement

ওই সাক্ষাৎকারে ৯/১১-এর হামলার ষড়যন্ত্র জড়িত থাকার কথা জানিয়ে খালিদ বলেছিলেন, ‘’১০ সেপ্টেম্বর রাতে ঘুমোতে গিয়েছিলাম এক জন শেতাঙ্গ মানুষের মতো। ১১ সেপ্টেম্বর সকালে যখন উঠলাম, আমি তখন এক জন আরবি।’’ কৌতূক অভিনেতার পেশায় টিকে থাকতে গিয়ে নিজের ধর্মীয় পরিচয় আড়াল করতে ‘জোসেফ’ নাম নিয়েছিলেন খালিদ। তা নিয়ে অনুশোচনাও প্রকাশ করেন তিনি। পাশাপাশি, গর্ব প্রকাশ করেন আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের প্রতি তাঁর নিঃশর্ত আনুগত্য নিয়ে।

২০০৩-এর মার্চে আমেরিকার গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র ‘স্পেশাল অ্যাক্টিভিটিজ ডিভিশন’ পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি থেকে গ্রেফতার করেছিল খালিদকে। তার পর থেকে আমেরিকার হেফাজতেই রয়েছেন তিনি। ২০০৬ থেকে গুয়ান্তানামোই তাঁর ঠিকানা। একাধিক বার সামরিক আদালতে তাঁর বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত তা পিছিয়ে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত বিচার শুরু হলেও তা কবে শেষ হবে তা নিয়ে সন্দিহান খালিদের আইনজীবী ডেভিড নেভিন। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘হতেই পারে, আরও দু’দশক সময় লেগে গেল।’’

Advertisement

খালিদ শেখ মহম্মদ। ছবি: সংগৃহীত।

গুয়ান্তানামো জেল থেকে ২০১৫ সালে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উদ্দেশে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন খালিদ। সেখানে ওসামা বিন লাদেনের হত্যা প্রসঙ্গে লিখেছিলেন, ‘ওবামা এক জন দক্ষ আইনজীবী। মানবাধিকার প্রসঙ্গে যাঁর প্রভূত জ্ঞান। কিন্তু তিনি শত্রুর বিচার হওয়ার আগেই তাঁকে মেরে সমুদ্রে ফেলে দেন। শত্রুকে এক জন মানুষের সম্মানটুকু দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেন না।’

ওই চিঠিতে আমেরিকাকে ‘নিপীড়ন ও অপশাসনের দেশ’ বলে উল্লেখ করে খালিদ লিখেছিলেন, ‘লড়াইটা আমরা শুরু করিনি। আমাদের দেশে তোমরা, তোমাদের শাসকরা লড়াইটা শুরু করেছিল।’ ৯/১১ সন্ত্রাসের পক্ষে যুক্তি সাজাতে গিয়ে প্যালেস্তাইন এবং ইরাকে মুসলিমদের উপর নিপীড়নের উল্লেখ করেছিলেন খালিদ। এমনকি, এনেছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমা-নাগাসাকিতে আমেরিকার পরমাণু বোমা ফেলার প্রসঙ্গও।

আমেরিকার আইন অনুযায়ী ২,৯৭৭ জনকে (৯/১১-য় মোট নিহতের সংখ্যা) খুনের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অপরাধ প্রমাণিত হলে খালিদের প্রাণদণ্ড হতে পারে। দেড় দশক আগেই অবশ্য তাঁর সম্ভাব্য ‘পরিণতির’ কথা জানিয়েছিলেন খালিদ। বলেছিলেন, ‘‘বাকি জীবনটা যদি জেলবন্দি থাকতে হয় তবে আল্লাহ্‌র নাম করেই কাটিয়ে দেব। আর যদি আমেরিকা প্রাণদণ্ড দেয়, তবে আল্লাহ্‌র সঙ্গে আমার দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন