Donald Trump

আফগানিস্তানে লড়তে হবে ভারতকেও: ট্রাম্প

গত কয়েক সপ্তাহে ট্রাম্প যে দক্ষিণ এশিয়া তথা ভারত-পাকিস্তান নিয়ে অতি সক্রিয় হয়ে উঠেছেন, আজকের বক্তব্যেই তা স্পষ্ট। দিল্লি ছাড়াও তেহরান, মস্কো ও ইস্তানবুলের জন্য একই বার্তা ট্রাম্পের।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৯ ০১:৪৯
Share:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।—ছবি রয়টার্স।

তাদের ভাগের দায়িত্ব শেষ। এ বার আফগানিস্তানের জঙ্গি নিধনের দায়িত্ব নিতে হবে ভারত-সহ অন্যান্য পড়শি দেশকে। বুধবার হোয়াইট হাউসের সাংবাদিক বৈঠকে এ কথাই বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

Advertisement

গত কয়েক সপ্তাহে ট্রাম্প যে দক্ষিণ এশিয়া তথা ভারত-পাকিস্তান নিয়ে অতি সক্রিয় হয়ে উঠেছেন, আজকের বক্তব্যেই তা স্পষ্ট। দিল্লি ছাড়াও তেহরান, মস্কো ও ইস্তানবুলের জন্য একই বার্তা ট্রাম্পের। তাঁর দাবি, আফগানিস্তানে জঙ্গিদের শেষ করতে যেটুকু যা করার, সেটা ৭ হাজার মাইল দূর থেকে আমেরিকাই করেছে। অন্য দেশের ভূমিকা খুব কম। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও একটা পর্যায়ে গিয়ে তো রাশিয়া, আফগানিস্তান, ভারত, ইরান, ইরাক, তুরস্ককে যুদ্ধে নামতে হবে। ইসলামিক জঙ্গি সংগঠনগুলিকে প্রায় সমূলে উপড়ে দিয়েছি আমরা। বস্তুত রেকর্ড সময়ে করেছি। কিন্তু যে সব দেশের ভিতরে বা চারপাশে ইসলামিক স্টেট (আইএস) ডেরা করে রয়েছে, যারা নিজেরা আক্রান্ত, তাদেরও লড়তে হবে।’’ ট্রাম্পের প্রশ্ন, ‘‘আরও ১৯টা বছর আমরা আফগানিস্তানে পড়ে থাকব নাকি!’’

এক দিন আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান থেকে এখনই সম্পূর্ণ ভাবে মার্কিন সেনা সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছে না ওয়াশিংটন। তালিবান যাতে নতুন করে মাথাচাড়া দিতে না পারে, তার জন্য কেউ না কেউ মাটি আঁকড়ে থাকবেই। তার পরেই আজকের বার্তা। ট্রাম্পের মুখে বারবার উঠে এসেছে ভারতের কথা। তিনি বলেন, ‘‘ভারত একেবারে কাছেই রয়েছে। কিন্তু ওরা লড়ছে না। আমরা লড়ে যাচ্ছি। পাকিস্তান তো একেবারে পাশেই। ওদের ভূমিকা খুব সামান্য, খুবই। এটা ঠিক নয়।’’

Advertisement

ট্রাম্প এ-ও জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে আমেরিকার হাতে বন্দি বহু ইউরোপীয় আইএস জঙ্গি। ইউরোপকে ওই বন্দিদের দায়িত্ব নিতে হবে বলে দাবি মার্কিন প্রেসিডেন্টের। তা না-করলে বন্দিদের মুক্তি দিয়ে যে দেশের নাগরিক, সেই দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমরা ওই আইএস জঙ্গিদের ধরেছি। এখন ওরা ফ্রান্স-জার্মানির নাগরিক হলেও, দেশগুলি তাদের ফেরত নিতে চাইছে না। এটা তো হতে পারে না। আগামী ৫০ বছর ধরে ওদের গুয়ানতানামো বে-র জেলে বসিয়ে খাওয়ানো হবে বলে তো ধরা হয়নি!’’

এই নিয়ে তিন-তিন বার কাশ্মীর প্রসঙ্গে মধ্যস্থতা করতে চেয়েছেন ট্রাম্প। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের শান্তি ফেরানোর প্রশ্নে পাকিস্তান তাদের পরম মিত্র। কিন্তু পাশাপাশি এ কথাও খেয়াল রাখছেন, কাশ্মীর প্রশ্নে ইসলামাবাদ যদি জঙ্গি-ভূমিকা নেয়, তা হলে তাদের কাবুল-সমস্যা আরও জটিল হবে। সে ক্ষেত্রে অক্টোবরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরানোর যে স্বপ্ন তিনি দেখছেন, তা আরও বিলম্বিত ও জটিল হবে। তাই কাবুল প্রশ্নে ভারতকে কিছুটা গুরুত্ব দেওয়ার পথে হাঁটছেন তিনি। ট্রাম্পের আজকের বক্তব্যে সেটাই প্রতিফিলত হয়েছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। এরই মধ্যে আগামী ২৬ তারিখ ফ্রান্সে ট্রাম্পের মুখোমুখি হবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগে একটি ভারত-সহায়ক বাতাবরণ তৈরি করে রাখাও হয়তো মার্কিন প্রেসিডেন্টের লক্ষ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন