রিপাবলিকানদের হিন্দু শাখার সভায়। শনিবার নিউ জার্সিতে। ছবি: এপি।
এক সময় প্রকাশ্য জনসভায় বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে ভারত-চিনের মতো দেশ থেকে ‘আউটসোর্সিং’ বন্ধ করে দেখিয়ে দেবেন! বাড়াবেন তাঁর দেশের লোকের কর্মসংস্থান! বস্তুত, কর্মসংস্থান বাড়ানোই তাঁর অন্যতম নির্বাচনী লক্ষ্য বিষয় বলে দাবি করে ভারতীয় কল সেন্টার বন্ধের পক্ষেও জোর সওয়াল করেছিলেন এক সময়। তবে শনিবার এক ঝাঁক ভারতীয়-মার্কিনদের সামনে বক্তৃতা করতে উঠে এক্কেবারে উল্টো গানই গেয়ে বসলেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প! বললেন, তিনি ভারত আর হিন্দুত্বের বিরাট ভক্ত। তাদের নিষ্ঠা-পরিশ্রমের-একাগ্রতা দেখে তাক লেগে যায় তাঁর! মঞ্চে দাঁড়িয়ে কথা দিলেন, ক্ষমতায় এলে ভারতের প্রকৃত বন্ধু হবেন তিনি।
নিউ জার্সির ভিড়ের মন জয় করতে এ দিন একেবারে ভারতীয় কায়দাতেই মঞ্চ মাতিয়েছেন ট্রাম্প। রিপাবলিকান হিন্দু শাখা আয়োজিত ‘হিউম্যানিটি ইউনাইটেড এগেন্্সট টেরর’ নামে ওই অনুষ্ঠানে দর্শকের জন্য ছিল প্রভু দেবা- মালাইকা আরোরা খানের মতো তারকা খচিত বলিউড-শোয়ে ব্যবস্থা। এ দিন মঞ্চে উঠে প্রদীপও জ্বালান ট্রাম্প। উপমহাদেশের সরকারি পর্যটনী বিজ্ঞাপনের উদ্ধৃতি টেনে বলেছেন, ‘‘ভারত অতুলনীয়।’’
ভারত-স্তুতিতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য না করে বলেছেন, ‘‘আমি প্রেসিডেন্ট হলে ভারতীয় এবং হিন্দুরা হোয়াইট হাউসে তাঁদের এক প্রকৃত বন্ধুকে দেখতে পাবেন!’’ আশ্বাস দিয়েছেন, ‘ভারতীয়দের সঙ্গে এক চমকপ্রদ ভবিষ্যতে’র। ভারতীয় আর হিন্দু— এই দুই পরিচিতি একে অপরের সমার্থক বলে ধরে নিয়েই তিনি আরও এক বার মনে করিয়ে দিলেন তাঁর প্রশাসন দমন করবে ‘মুসলিম সন্ত্রাসবাদকে’। হিন্দুদের পরিশ্রম ও নিষ্ঠার তারিফ করতে গিয়ে এ দিন ট্রাম্পের মুখে উঠে আসে মুম্বই সন্ত্রাসের অনুষঙ্গ। ৭০ বছরের এই ধনকুবের বলেছেন, মুম্বই তাঁর খুবই পছন্দের শহর। ২৬/১১-র সন্ত্রাস কী ভয়ানক ন্যক্কারজনক ঘটনা! নরেন্দ্র মোদী যে ভাবে ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তাতে মোদীর সঙ্গে কাজেরও ইচ্ছা প্রকাশ করেন ট্রাম্প। বলেন, এই ইচ্ছার বাস্তবায়ন হলে শরিকের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা গভীরতর হবে!
দেদার হাততালিতে দিন বদলের স্বপ্ন দেখালেন। মনে করিয়ে দিলেন এখন বাকি শুধু ভোট-যন্ত্রে তাঁর পক্ষে বোতামটা টেপা। তার পর মার্কিন-ভারতীয়রা তো বটেই ‘অচ্ছে দিন’ দেখবে ভারতও— কথা দিলেন ট্রাম্প।