ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। —ফাইল চিত্র।
আগামী শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তার আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বন্ধুদের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা সেরে নিচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কিও। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবারই জার্মানির রাজধানী বার্লিনে গিয়েছেন তিনি। সেখানে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিক মার্জ়ের সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে জ়েলেনস্কির।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়ার উপর ধারাবাহিক ভাবে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। আগামী শুক্রবার ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকেও মূলত যুদ্ধ থামানো বিষয়েই আলোচনা হওয়ার কথা। বুধবার জ়েলেনস্কির সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক হতে পারে ট্রাম্পের। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারাও ওই ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দিতে পারেন বলে সূত্রের খবর। ট্রাম্পের সঙ্গে ওই বৈঠকে যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে ইউক্রেনের স্বার্থ সংক্রান্ত বিষয়গুলি তুলে ধরতে পারেন জ়েলেনস্কি এবং তাঁর ইউরোপীয় ইউনিয়নের বন্ধুরা।
বস্তুত, এর আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন যুদ্ধ থামানোর জন্য মস্কো এবং কিভ— উভয়কেই জমি ছাড়তে হবে। ঘটনাচক্রে, রুশ সেনা ইতিমধ্যে ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ জমি দখল করে নিয়েছে। এই অবস্থায় জ়েলেনস্কির অনুপস্থিতিতে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক ইউক্রেনের বিপক্ষে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশও সেই আশঙ্কাই করছে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট দাবি করেছিলেন, পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসে ট্রাম্প শুধু শুনেই যাবেন। তবে সোমবারই ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘আমি ভ্লাদিমিরের সঙ্গে কথা বলার জন্য যাচ্ছি। তাঁকে এই যুদ্ধ শেষ করার জন্য বলব।’’ সেই সঙ্গে তিনি এ-ও বলেন, ‘‘বৈঠক শেষ হওয়ার প্রথম দু’ মিনিটের মধ্যেই বুঝতে পারব, কোনও চুক্তি সম্ভব হবে কি না।’’ ট্রাম্প গঠনমূলক আলোচনার প্রতিশ্রুতি দিলেও জ়েলেনস্কির দাবি, যুদ্ধবিরতিতে আদৌ রাজি নয় রাশিয়া। আবার নতুন করে ইউক্রেনে হামলার ছক কষছে পুতিনের দেশ।
১ মার্চ হোয়াইট হাউসে গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে বাগ্যুদ্ধে জড়িয়েছিলেন জ়েলেনস্কি। তার পরে বুধবার ফের ভার্চুয়ালি বৈঠক হবে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের। অন্য দিকে, প্রায় এক দশক মার্কিন মুলুকে পা রাখেননি পুতিন। আগামী ১৫ অগস্ট ট্রাম্প-পুতিন সাক্ষাৎ-ও তাই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ট্রাম্প নিজেই দাবি করেছিলেন, বিভিন্ন যুদ্ধ থামাতে তিনি যে উদ্যোগী হচ্ছেন তার জন্য চার-পাঁচ বার শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য তিনি। তা সমর্থন করেছিল পাকিস্তান ও ইজ়রায়েল। সম্প্রতি আজ়েরবাইজান ও আর্মেনিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানও সম্প্রতি ট্রাম্পকে নোবেল দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে শান্তির জন্য আরও এক বার দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আলাদা আলাদা ভাবে বৈঠকে বসতে চলেছেন ট্রাম্প।