Donald Trump Tariffs

ট্রাম্পের শুল্ক নিয়ে দ্রুত শুনানির আর্জি আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টে, বাণিজ্যের দর কষাকষিতে সমস্যা হচ্ছে, মেনে নিল মার্কিন প্রশাসন

আমেরিকার ১৯৭৭ সালের একটি আইন— ‘ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্‌স অ্যাক্ট’-কে ব্যবহার করে এই শুল্কনীতিকে কার্যকর করেছেন ট্রাম্প। এই আইনবলে জরুরি অবস্থার সময়ে অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একতরফা কিছু পদক্ষেপের ক্ষমতা রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:৪৯
Share:

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

শুল্ক মামলার দ্রুত শুনানির জন্য আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। ওই শুল্ক আরোপের অনেক সিদ্ধান্তকেই ‘বেআইনি’ বলে মনে করছে আমেরিকার ফেডেরাল সার্কিটের আপিল আদালত। ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তাদের বক্তব্য, নিম্ন আদালতের ওই ধাক্কার ফলে অন্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক দর কষাকষিতে সমস্যার মুখে পড়ছে হোয়াইট হাউস। এ অবস্থায় ওই মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়েছে তারা।

Advertisement

আমেরিকার সলিসিটর জেনারেল জন সওয়ার যত দ্রুত সম্ভব মামলাটির শুনানির জন্য অনুরোধ করেন সুপ্রিম কোর্টে। ট্রাম্প-আরোপিত শুল্কের বিষয়ে আইনি অবস্থান কী, তা নিশ্চিত করার জন্য আবেদন জানান তিনি। বস্তুত, ট্রাম্পের শুল্কের উপর আপাতত কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি আমেরিকার আপিল আদালত। তবে আদালত ট্রাম্পকে জানিয়েছে, এ ভাবে শুল্ক আরোপ করা যায় না। জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে শুল্ক আরোপ করতে গিয়ে ট্রাম্প নিজের ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করেছেন বলেও পর্যবেক্ষণ আদালতের। এ অবস্থায় আগামী ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত ট্রাম্পকে সময় দিয়েছে আপিল আদালত। ফলে ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার জন্য কয়েক সপ্তাহ সময় পেয়ে গিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

বুধবার (স্থানীয় সময় অনুসারে) মার্কিন সলিসিটর জেনারেল আদালতে যে নথি জমা দিয়েছেন, তাতে আমেরিকার রাজস্বসচিব স্কট বেসান্তের একটি বক্তব্যও রয়েছে। সেখানে আপিল আদালতের রায় প্রসঙ্গে বেসান্ত বলেছেন, “ইতিমধ্যে যে (বাণিজ্যিক) আলোচনা চলছে, তার উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। বিভিন্ন দেশের নেতারা প্রেসিডেন্টের আরোপিত শুল্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তাঁরা আলোচনা থেকে পিছিয়ে যাচ্ছেন, বা আলোচনাকে বিলম্বিত করে দিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার নিজেদের মতো করে অন্য হিসাবও কষছেন।”

Advertisement

এ অবস্থায় মামলাটির শুনানি পিছিয়ে গেলে আমেরিকাকে অর্থনৈতিক ভাবে ধাক্কা খেতে হতে পারে বলে মনে করছে ট্রাম্প প্রশাসন। তাদের বক্তব্য, ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপর তারা ৭৫ হাজার কোটি-১ লক্ষ কোটি ডলার আদায় করেছে। এই শুল্ক বাতিল হলে উল্লেখযোগ্য বিঘ্ন ঘটতে পারে। পাশাপাশি মার্কিন প্রশাসনকে যদি তার বাণিজ্যিক সঙ্গীদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে হয়, তবে এক ‘অর্থনৈতিক বিপর্যয়’ তৈরি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছেন বেসান্ত।

বস্তুত, ট্রাম্পের শুল্ক নিয়ে ইতিমধ্যে বিস্তর প্রশ্ন উঠে এসেছে। প্রায় সব দেশের উপরেই ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া বাণিজ্যিক সমীকরণের দিক থেকে বিভিন্ন দেশের উপর বিভিন্ন হারে শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি। যেমন ভারতের উপর চাপিয়েছেন ৫০ শতাংশ শুল্ক। আমেরিকার ১৯৭৭ সালের একটি আইন— ‘ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্‌স অ্যাক্ট’-কে ব্যবহার করে এই শুল্কনীতিকে কার্যকর করেছেন ট্রাম্প। এই আইনবলে জরুরি অবস্থার সময়ে অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একতরফা কিছু পদক্ষেপের ক্ষমতা রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের। তবে আপিল আদালতের পর্যবেক্ষণ, ওই পদক্ষেপগুলির মধ্যে কোনওটিতেই নির্দিষ্ট ভাবে শুল্ক আরোপের ক্ষমতার বিষয়ে উল্লেখ নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement