(বাঁ দিকে) চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
চিনের কাছে কৃত্রিম মেধা (এআই) নির্ভর চিপ বিক্রি করতে দেওয়ার জন্য দুই মার্কিন সংস্থার থেকে অর্থ নেবে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ অনুসারে, এনভিডিয়া এবং অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেস (এএমডি)— দুই সংস্থার সঙ্গেই এমন চুক্তি হয়েছে ট্রাম্প সরকারের। চিনে এআই চিপ বিক্রি করে যা লাভ হবে, তার ১৫ শতাংশ ট্রাম্প প্রশাসনকে দেবে তারা।
ঘটনা পরম্পরা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সূত্র মারফত ওই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ‘এইচ২০’ এআই চিপ চিনে রফতানি করার ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য এনভিডিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি করছে ট্রাম্প প্রশাসন। চুক্তির আওতায়, চিনে ওই চিপ বিক্রি করে সংস্থা যা লাভ করবে, তার ১৫ শতাংশ পাবে মার্কিন প্রশাসন। অনুমান করা হচ্ছে, এর থেকে কোটি কোটি ডলার আয় করতে পারে ট্রাম্প সরকার। ওই সূত্রের দাবি, অপর মার্কিন সংস্থা এএমডিকেও ‘এমআই৩০৮’ চিপ চিনে বিক্রির ছাড়পত্র দিতে একই রকমের শর্ত চাপানো হয়েছে। দুই সংস্থাই এই শর্তে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছে ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’। যদিও চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।
গত শুক্রবার থেকে এনভিডিয়াকে চিনে ‘এইচ২০’ চিপ পাঠানোর জন্য ছাড়পত্র দিতে শুরু করেছে আমেরিকার সরকার। ওয়াকিবহাল সূত্রের দাবি, গত সপ্তাহের শেষের দিকে এএমডিকেও চিপ রফতানির জন্য ছাড়পত্র দেওয়া শুরু হয়েছে। বস্তুত, আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে শুল্কযুদ্ধের আবহে গত এপ্রিল থেকে ‘এইচ২০’ এবং ‘এমআই৩০৮’ চিপ রফতানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এনভিডিয়ার সিইও জেনসেন হুয়াং তখন থেকেই দু’দেশের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছিল।
ঘটনাচক্রে রবিবারই এনভিডিয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যবসার জন্য তারা আমেরিকার সরকারি বিধি মেনেই চলে। গত কয়েক মাস ধরে চিনে ‘এইচ২০’ চিপ যে রফতানি হয়নি, সে কথাও বিবৃতিতে জানিয়েছে ওই সংস্থা। তারা আশা করছে, নতুন রফতানি বিধি চিন তথা বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা করার পথ খুলে দেবে আমেরিকাকে। বস্তুত, গত সপ্তাহেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক হয় এনভিডিয়ার সিইও-র। ওই বৈঠকের পরেই রাজস্ব চুক্তির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
রফতানির ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য কোনও সংস্থার থেকে মূল্য নেওয়ার ঘটনা আমেরিকায় সচরাচর দেখা যায় না। ট্রাম্প সরকারের এই সিদ্ধান্তে সমালোচনাও শুরু হয়েছে। আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন একাংশের আশঙ্কা এই ছাড়পত্রের ফলে কৃত্রিম মেধা এবং সামরিক শক্তির দিক থেকে চিন আরও বেশি প্রযুক্তিসমৃদ্ধ হয়ে উঠতে পারে। যদিও এনভিডিয়ার দাবি, আমেরিকার প্রতিপক্ষ দেশগুলির কাছে তারা খুব বেশি পরিমাণে চিপ বিক্রি করে না। আবার মার্কিন আধিকারিক সূত্রে ওই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ‘এইচ২০’ বিশ্বের সেরা চিপগুলির মধ্যে অন্যতম নয়। বরং, চিনা সংস্থা হুয়াইয়ের প্রতিপক্ষ হিসাবে বিশ্ব বাজারে এনভিডিয়াকে তুলে ধরতে চাইছে আমেরিকার সরকার।