(বাঁ দিকে) চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
বিরল খনিজের রফতানি নিয়ন্ত্রণের জন্য চিনের পণ্যে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১ নভেম্বর থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আপাতত সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে আমেরিকা। এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন অর্থসচিব স্কট বেসেন্ট। মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালা লামপুরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশের গোষ্ঠী ‘আসিয়ান’-এর বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন বেসেন্ট। সেখানে চিনা আধিকারিকদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক হয় তাঁর। ওই বৈঠকেই বাণিজ্য নিয়ে সমঝোতা হয়েছে বলে খবর।
বেসেন্ট জানিয়েছেন, চিনের সঙ্গে এই সমঝোতার কারণে আপাতত ১০০ শতাংশ শুল্কের হুমকি কার্যকর করা হচ্ছে না। পরিবর্তে চিন কী করবে, তা-ও জানিয়েছেন মার্কিন অর্থসচিব। তাঁর দাবি, বিরল খনিজ নিয়ন্ত্রণ এবং রফতানিতে লাইসেন্স ব্যবস্থা চালু করার যে সিদ্ধান্ত বেজিং নিয়েছে, তা আরও অন্তত এক বছরের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হবে। ওয়াশিংটন তেমনটাই আশা করছে। তবে চিনের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়নি।
‘আসিয়ান’-এর বার্ষিক সম্মেলনে ট্রাম্পও যোগ দিয়েছেন। সেখান থেকে জাপান হয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। সেখানে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হতে পারে মার্কিন প্রেসিডেন্টের। চিন-আমেরিকা বাণিজ্য সমঝোতার জন্য ট্রাম্প ও জিনপিঙের সেই বৈঠকের দিকেই তাকিয়ে ছিল গোটা বিশ্ব। তবে তার আগে মালয়েশিয়া থেকেই সমঝোতার বার্তা দিয়ে দিলেন বেসেন্ট। চিনের তরফেও সমঝোতার কথা স্বীকার করা হয়েছে। তবে তারা বেশি ব্যাখ্যা করেনি। বেজিংয়ের সরকারি সংবাদ সংস্থায় বলা হয়েছে, ‘‘চিন এবং আমেরিকা সম্ভাব্য বাণিজ্যচুক্তির জন্য মৌলিক ঐক্যমতে পৌঁছেছে।’’ উপপ্রধানমন্ত্রী হে লিফেঙের কথায়, ‘‘চিন-আমেরিকা অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের মূল কথা পারস্পরিক লাভ। সহযোগিতা থেকেই দুই দেশ লাভবান হয়, ক্ষতি হয় সংঘর্ষে।’’ বেসেন্টের সঙ্গে আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন লিফেং-সহ একাধিক চিনা আধিকারিক। দু’দিন ধরে এই আলোচনা চলেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় ট্রাম্পের সঙ্গে জিনপিঙের বৈঠকে উভয় দেশের বাণিজ্যিক সমঝোতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হতে পারে। ওই বৈঠকের কথা নিশ্চিত করেছে ওয়াশিংটন। তবে বেজিং এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি। চিন এবং আমেরিকার মধ্যে শুল্ক-সংঘাতের সংঘর্ষবিরতির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১০ নভেম্বর। ওই সময়সীমা আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন বেসেন্ট। চিন গত সেপ্টেম্বর থেকে আমেরিকার সয়াবিন কেনা বন্ধ রেখেছে। তা-ও শীঘ্রই শুরু হয়ে যাবে বলে আশাবাদী মার্কিন অর্থসচিব।