পুরুষতন্ত্রে ক্ষমতার বিন্যাসটা ঠিক কী রকম, চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল তাঁর প্রথম বই। ১৯৭০ সালে প্রকাশিত সেই ‘সেক্সুয়াল পলিটিক্স’-এর লেখিকা, মার্কিন শিল্পী কেট মিলেট মারা গেলেন। ৮২ বছর বয়সে। প্যারিসে, স্ত্রীর সঙ্গে বেড়াচ্ছিলেন কেট। তখনই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন তিনি।
হ্যাঁ, ‘স্ত্রী’। চিত্র সাংবাদিক সোফি কেইরের সঙ্গে উভকামী কেটের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তবে তার আগে জাপানি শিল্পী ফুমিও ইওশিমুরার সঙ্গে কুড়ি বছরের বিবাহিত জীবনও কাটিয়েছিলেন তিনি।
১৯৭৯ সালে ইরানে প্রথম বার আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করতে গিয়েছিলেন কেট। আয়াতোল্লা খোমেইনির সরকার তাঁকে গ্রেফতার করে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়। ফিরে যান দু’বছর পরে। দু’বারের সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে তাঁর তৃতীয় বই ‘গোয়িং টু ইরান’ (১৯৮১)। এর আগে, ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর দ্বিতীয় বই ‘ফ্লাইং’। তত্ত্ব কথার বাইরে বেরিয়ে নিজের জীবন ও অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা সেই বই।
তত্ত্ব কথার বাইরে, আবার ঠিক বাইরেও নয়। কারণ, মেয়েদের জন্য ‘ব্যক্তিগত মানেই রাজনৈতিক (দ্য পার্সোনাল ইজ পলিটিক্যাল)’ এই কথা মিলেটই বলেছিলেন, তাঁর প্রথম বইয়ে। যেটি আদতে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে করা তাঁর পিইচডি গবেষণাপত্র। ‘সেক্সুয়াল পলিটিক্স’ নামে এই বইটি ১৫ দিনে দশ হাজার কপি বিক্রি হয়েছিল! কোনও অ্যাকাডেমিক গবেষণাপত্রের এ রকম জনপ্রিয়তা বিশেষ দেখা যায় না।
তাঁর মৃত্যুর পরে একটি টুইটার পোস্ট— ‘‘আজ গোটা বিশ্বে, বিশেষ করে আমেরিকায় যখন নারীবাদ এক অদ্ভুত আঁধারে আচ্ছন্ন, তখনই চলে গেলেন কেট মুরে মিলেট!’’