দক্ষিণ চিন সাগরের বিতর্কিত দ্বীপে চিনা জাহাজ। চলছে সামরিক পরিকাঠামো তৈরির কাজ। ছবি: রয়টার্স।
দক্ষিণ চিন সাগরের দ্বীপগুলিতে চিনের প্রবেশ আটকাতে হলে আমেরিকা একটা বড়সড় যুদ্ধের প্রস্তুতি নিক। হুঁশিয়ারি দিল গ্লোবাল টাইমস। চিনের শাসক কমিউনিস্ট পার্টির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এই সংবাদপত্র গত কয়েক দিন ধরে একের পর এক সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে ভারতকে হুমকি দিচ্ছিল। এ বার আমেরিকার প্রতিও একই ধরনের হুঁশিয়ারি তাদের। ট্রাম্প ক্যাবিনেটের বিদেশ সচিব হিসেবে যাঁর নাম প্রস্তাবিত হয়েছে, সেই রেক্স টিলারসনের একটি মন্তব্য প্রসঙ্গে চিনা সংবাদপত্রে এ কথা লেখা হয়েছে। আমেরিকা যদি চিনের সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়ায়, তা হলে যে পরমাণু যুদ্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, সে কথাও গ্লোবাল টাইমস মনে করিয়ে দিয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর ক্যাবিনেটে রেক্স টিলারসনকে যে বিদেশ সচিব হিসেবে বেছে নিচ্ছেন, তা আগেই ঘোষিত হয়েছিল। মার্কিন সেনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সামনে তিনি ‘কনফার্মেশন হিয়ারিং’-এর জন্য হাজিরও হয়েছেন ইতিমধ্যেই। মার্কিন বিদেশ সচিব নির্বাচিত হলে দক্ষিণ চিন সাগর সম্পর্কে তাঁর নীতি কী হবে, এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে টিলারসন সেই কমিটির সদস্যদের জানান, চিনকে তিনি স্পষ্ট বুঝিয়ে দিতে চান যে দক্ষিণ চিন সাগরের বিতর্কিত দ্বীপগুলিতে চিনা সেনার উপস্থিতি আর মেনে নেওয়া হবে না। ওই সব এলাকায় চিনকে আর ঢুকতে দেওয়া হবে না। টিলারসনের এই মন্তব্য সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে। তার প্রেক্ষিতেই গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনের মাধ্যমে চিন হুঁশিয়ারি দিতে শুরু করল।
দক্ষিণ চিন সাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগরে টহল দিতে শুরু করেছে চিনের এই এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার। ছবি: এএফপি।
চিনা সংবাদপত্রটিতে লেখা হয়েছে, দক্ষিণ চিন সাগরের দ্বীপগুলিকে চিনের নিয়ন্ত্রণে থাকতে দেওয়া হবে না বলে যদি আমেরিকা মনে করে, তা হলে আমেরিকাকে খুব বড় একটা যুদ্ধ করতে হবে। টিলারসনকে চিনা সংবাদপত্রের সরাসরি হুঁশিয়ারি, ‘‘টিলারসন যদি একটি বৃহৎ পরমাণু শক্তিকে তার নিজেরই এলাকা থেকে বার করে দিতে চান, তা হলে আগে তাঁর উচিত পরমাণু রণকৌশল সম্পর্কে একটু পড়াশোনা করে নেওয়া।’’
আরও পড়ুন: জলে নামল আরও একটি স্করপেন, ক্রমশ বাড়ছে ভারতের সাবমেরিন বহর
রেক্স টিলারসনকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েনি চিনা সংবাদপত্র। সেখানে লেখা হয়েছে, সেনেটের সমর্থন জোগাড় করে পরবর্তী মার্কিন বিদেশ সচিব হওয়া নিশ্চিত করতে টিলারসন চিন সম্পর্কে একটু কড়া কড়া কথা বলছেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতকেও এই গ্লোবাল টাইমসের মাধ্যমেই একাধিক বার কড়া বার্তা দিতে চেয়েছে চিন। ভারত পর পর দু’টি দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের চূড়ান্ত পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সেরে ফেলার পর চিনের এই খবরের কাজগেই লেখা হয়েছিল, ‘‘ভারত যদি এ ভাবে ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা বাড়াতে থাকে, তা হলে এ বার পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলির পাল্লাও বাড়বে।’’ তার পর ভারত ‘আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্র ভিয়েতনামকে বিক্রি করার কথা বলায়, গ্লোবাল টাইমসের মাধ্যমে চিন হুঁশিয়ারি দেয় যে ভিয়েতনামকে ভারত ক্ষেপণাস্ত্র দিলে চিন হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না।