আফগানিস্তানে তালিবানের হানায় নিহত মার্কিন সাংবাদিক

গাজা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইরাক, বালকান— এত দিন যুদ্ধক্ষেত্রের ভিতর থেকে যুদ্ধের খবর বাইরে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। এ বার আফগান যুদ্ধের কাহিনি সাধারণ মানুষকে জানাতে গিয়ে শেষ হল তাঁর সফর। রবিবার দক্ষিণ আফগানিস্তানের হেলমন্দ প্রদেশে তালিবান হামলায় মৃত্যু হল মার্কিন চিত্র সাংবাদিক ডেভিড গিলকের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৬ ০৩:১১
Share:

ডেভিড গিলকে

গাজা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইরাক, বালকান— এত দিন যুদ্ধক্ষেত্রের ভিতর থেকে যুদ্ধের খবর বাইরে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। এ বার আফগান যুদ্ধের কাহিনি সাধারণ মানুষকে জানাতে গিয়ে শেষ হল তাঁর সফর। রবিবার দক্ষিণ আফগানিস্তানের হেলমন্দ প্রদেশে তালিবান হামলায় মৃত্যু হল মার্কিন চিত্র সাংবাদিক ডেভিড গিলকের। তাঁর সঙ্গে মৃত্যু হয়েছে এক আফগান দোভাষী জাবিহুল্লা তামান্নারও।

Advertisement

৫৮ বছরের গিলকে আমেরিকার ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও(এনপিআর)-তে কর্মরত ছিলেন। আফগান সেনার মুখপাত্র শাকিল আহমেদ তাসাল জানিয়েছেন, রবিবার খবর সংগ্রহের কাজেই সেনার বিশেষ কনভয়ে লস্কর গা থেকে মারজা যাচ্ছিলেন গিলকে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন এনপিআর-এর আরও দুই সাংবাদিক এবং দোভাষী জাবিহুল্লা তামান্না। ৩৮ বছরের তামান্নাও আফগানিস্তানের সাংবাদিক ছিলেন। এ ছাড়া দোভাষী হিসেবেও কাজ করতেন তিনি।

এ দিন স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটে নাগাদ তালিবান জঙ্গিরা হামলা চালায় তাঁদের কনভয়ের উপর। গ্রেনেডের আঘাতে গুঁড়িয়ে যায় গিলকেদের গাড়িটি। সেখানেই মৃত্যু হয় গিলকে, তামান্না এবং তাঁদের গাড়ির চালক এক আফগান সেনার। জঙ্গিদের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণের গুলির লড়াইয়ের পর দেহ তিনটি উদ্ধার করতে পারে সেনা। তাঁদের দলের বাকি দুই সাংবাদিক অবশ্য সুরক্ষিত আছেন।

Advertisement

গিলকের হত্যা ফিরিয়ে আনল আর এক মার্কিন সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্লের স্মৃতি। ২০০২-এ পাকিস্তানে অপহরণ করে খুন করা হয় ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক ড্যানিয়েলকে।

সমীক্ষা বলছে, ১৯৯২ থেকে আফগানিস্তানের যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৭ জন সাংবাদিক। ২০১০ সালে জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয় মার্কিন সেনা সাংবাদিক জেমস পি হান্টারের। গিলকের আগে আফগানিস্তানে নিহত শেষ বিদেশি সাংবাদিক আনজা নি়ডরিংহাউস। ২০১৪ সালে আফগান প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কভার করার সময় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান অ্যাসোসিয়েট প্রেসের এই চিত্র সাংবাদিক। চলতি বছর জানুয়ারিতে কাবুলে আত্মঘাতী হামলায় মৃত্যু হয় স্থানীয় একটি টিভি চ্যানেলের সাত সাংবাদিকের।

ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওর প্রধান মিশেল ওরেসকেস জানিয়েছেন, ৯/১১-র পর থেকে ইরাক এবং আফগানিস্তানে খবর সংগ্রহের কাজ করছেন ডেভিড। সেখানকার যুদ্ধে আটকে পরা মানুষের বিপন্নতাকে সামনে আনার জন্য কাজ করে চলেছেন তিনি। প্রাণও হারালেন সেই সংকল্প রক্ষার জন্যই।

অভিজ্ঞ এই সাংবাদিকের ঝুলিতে পুরস্কারের সংখ্যা কম নয়। ২০০৭ সালে ইরাকের যুদ্ধক্ষেত্রে মার্কিন নৌ সেনাদের নিয়ে একটি ভিডিও সিরিজের জন্য জাতীয় এমি পুরস্কার পান তিনি। ২০১১ সালে তাঁকে বছরের সেরা ফটোগ্রাফার হিসাবে নির্বাচন করে হোয়াইট হাউস ফটোগ্রাফারস অ্যাসোশিয়েন। ইবোলা-সঙ্কট নিয়ে তাঁর রিপোর্ট জাতীয় পুরস্কার এনে দেয় ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওকে। গত বছর আন্তর্জাতিক ব্রেকিং নিউজ, যুদ্ধ এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয় বিষয়ক প্রতিবেদনের জন্য ওডওয়ার্ড আর ম্যুরো পুরস্কার পান ডেভিড গিলকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন