Donald Trump

পাক সেনাপ্রধানের ‘মিষ্টভাষার’ প্রশংসায় ট্রাম্প! দাবি: আমাকে নোবেল পুরস্কার না-দিলে তো গোটা আমেরিকার অপমান হবে

দফায় দফায় চেষ্টা করেও রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও ইতি টানতে পারেননি তিনি। থামাতে পারেননি গাজ়ায় ইজ়রায়েলি আগ্রাসনও। গাজ়ায় যুদ্ধ থামানোর জন্য মঙ্গলবারই হামাসকে শাসানি দিয়ে রেখেছেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৫ ১০:০৭
Share:

(বাঁ দিকে) পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি নিয়ে ফের মুখ খুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দাবি, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষকে যুদ্ধের পর্যায়ে পৌঁছাতে না দেওয়ার কৃতিত্ব তাঁকেই দিয়েছেন পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির। এমনকি বিশ্বব্যাপী ‘শান্তিপ্রতিষ্ঠা’র জন্য তাঁকে নোবেল পুরস্কার না-দেওয়া হলে, তা আমেরিকার জন্য অপমানজনক হবে বলেই মনে করছেন তিনি।

Advertisement

ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ নিয়ে অতীতেও বার বার মুখ খুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সাম্প্রতিক অতীতে বিভিন্ন সময়ে ট্রাম্প দাবি করেছেন, পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ড পরবর্তী সময়ে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ থামাতে তিনিই মধ্যস্থতা করেছেন। যদিও ট্রাম্পের দাবি শুরু থেকেই নস্যাৎ করে এসেছে ভারত। তবে ইসলামাবাদ আবার ট্রাম্পের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে। ‘মধ্যস্থতা’র জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদও জানিয়েছে পাকিস্তান।

ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি সময়ে ওয়াশিংটন এবং ইসলামাবাদের মধ্যে কূটনৈতিক সমীকরণ নিয়েও বিস্তর আলোচনা হয়েছে। সম্প্রতি পাক সেনাপ্রধান মুনির এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ট্রাম্প। ওই বৈঠকের প্রসঙ্গে এ বার ট্রাম্পের দাবি, “তিনি (মুনির) একটি গোষ্ঠীর কাছে বলছেন, তাঁরা আমাদের সঙ্গে আছেন। তিনি বলেছেন, এই মানুষটি (ট্রাম্প) লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বাঁচিয়েছেন। কারণ, তিনি যুদ্ধ আটকেছেন।” এর পরেই আমেরিকার প্রেসি়ডেন্ট বলেন, “ওই যুদ্ধ (ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ) খুব খারাপ পর্যায়ের দিকে যাচ্ছিল। তিনি (মুনির) যে ভাবে কথাগুলি বলেছেন, তা আমার খুব পছন্দ হয়েছে।”

Advertisement

পাক সেনাপ্রধান মুনিরকে ‘পাকিস্তানের একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ বলেও বর্ণনা করেন ট্রাম্প। পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী ‘শান্তিপ্রতিষ্ঠা’র কারণে ফের নিজেই নিজের জন্য নোবেল পুরস্কার চেয়ে বসেন ট্রাম্প। বিভিন্ন যুদ্ধে স্বঘোষিত মধ্যস্থতাকারী ট্রাম্পের দাবি, তিনি নোবেল পুরস্কার না-পেলে তা গোটা আমেরিকার জন্য ‘অপমানজনক’ হবে। তিনি মার্কিন সেনা আধিকারকিদের সঙ্গে বৈঠকে নিজের প্রসঙ্গে বলেন, “আপনাকে কি নোবেল দেওয়া হবে? নিশ্চয়ই নয়। ওটা ওরা অন্য কাউকে দিয়ে দেবে, যিনি কিছুই করেননি। এটি আমেরিকার জন্য ঘোর অপমান হবে।”

বস্তুত, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যুদ্ধ থামানোর ক্ষেত্রে নিজের মধ্যস্থতার দাবি করেছেন ট্রাম্প। এর মধ্যে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের পাশাপাশি রয়েছে ইরান-ইজ়রায়েল সংঘর্ষও। এমনকি যুদ্ধ থামানোর জন্য তেহরানকে চাপ দিতে ইরানে হামলাও চালিয়েছে আমেরিকা। যদিও দফায় দফায় চেষ্টা করেও রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও ইতি টানতে পারেননি তিনি। থামাতে পারেননি গাজ়ায় ইজ়রায়েলি আগ্রাসনও।

এরই মধ্যে গাজ়ায় সংঘর্ষ থামানোর জন্য ২০ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন ট্রাম্প। আমেরিকার ‘বন্ধু’ ইজ়রায়েল জানিয়েছে, তারা ওই প্রস্তাবে রাজি। এ অবস্থায় প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে সমঝোতা মেনে নেওয়ার জন্য তিন-চার দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন ট্রাম্প। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সমঝোতা না-মানলে করুণ পরিণতি ভোগ করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে গত সোমবার হোয়াইট হাউসের সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, “পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী (শাহবাজ়) এবং ফিল্ড মার্শাল (সেনাপ্রধান মুনির) শুরুর দিন থেকে আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। তাঁরা কেবল একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন যে, পাকিস্তান এই চুক্তির (ইজ়রায়েল-হামাস শান্তি প্রস্তাব) উপর পুরোপুরি ভরসা রাখছে।” তার পরে মঙ্গলবার ফের পাক সেনাপ্রধানের ‘মিষ্টভাষা’র প্রশংসা করলেন ট্রাম্প।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement