US Government Shutdown

সরকারে ‘শাটডাউন’ কী? কত দিন অচল থাকতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন? কী কী বন্ধ হয়ে গেল, খোলাই বা রইল কোন দফতর

বুধবার ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ‘শাটডাউন’ শুরু হয়েছে আমেরিকায়। মার্কিন সেনেট মঙ্গলবার প্রশাসনের তহবিল সংক্রান্ত বিল অনুমোদন করতে পারেনি। একমত হতে পারেননি সদস্যেরা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:৩০
Share:

আমেরিকার ক্যাপিটল ভবন। মঙ্গলবার, ‘শাটডাউন’ কার্যকর হওয়ার ঠিক আগে। ছবি: রয়টার্স।

আমেরিকায় ‘শাটডাউন’ চালু হয়ে গেল। অনির্দিষ্টকালের জন্য অচল হয়ে গেল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। মার্কিন সেনেট মঙ্গলবার প্রশাসনের তহবিল সংক্রান্ত বিল অনুমোদন করতে না পারায় এই ‘শাটডাউন’। এই পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বৈঠক করেছিলেন সেনেটের ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান সদস্যেরা। কিন্তু তহবিল নিয়ে একমত হতে পারেননি তাঁরা। সোমবার ট্রাম্প নিজে সেনেট সদস্যদের নিয়ে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন। মতানৈক্য চলতে থাকায় ‘শাটডাউন’-এর কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করে দেয় হোয়াইট হাউস। বুধবার ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টা থেকে (স্থানীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার রাত ১২টা, বুধবারের সূচনা) ‘শাটডাউন’ শুরু হয়েছে আমেরিকায়।

Advertisement

‘শাটডাউন’ কী

প্রতি অর্থবর্ষে সরকারের বিভিন্ন দফতরের কাজ চালানোর জন্য মার্কিন কংগ্রেসকে অর্থ বরাদ্দ করতে হয়। অর্থবর্ষ শুরু হয় ১ অক্টোবর থেকে। যদি এই সময়ের মধ্যে সেনেট সদস্যেরা একমত হয়ে ব্যয় বরাদ্দ চূড়ান্ত করতে না পারেন, তবে বিভিন্ন দফতরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। যত দিন পর্যন্ত কংগ্রেস থেকে অর্থ বরাদ্দ না করা হচ্ছে, তত দিন দফতরগুলি বন্ধ থাকবে। ১০০ সদস্যের মার্কিন সেনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যা ৫৩। যে কোনও বিল পাশ করাতে অন্তত সাত জন ডেমোক্র্যাটের সমর্থন তাঁদের প্রয়োজন হয়। সরকারি তহবিল সংক্রান্ত বিলে তা হয়নি। সেই কারণে সেনেটের অনুমোদনও মেলেনি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ব্যয় বাজেট গঠনকারী ১২টি বিলের কোনওটিই এখনও আইনসভার দুই কক্ষে পাশ হয়নি। ফলে ‘শাটডাউন’টি হতে চলেছে ‘সম্পূর্ণ শাটডাউন’।

Advertisement

কী কী বন্ধ, কী কী খোলা

‘শাটডাউন’-এ মার্কিন সরকারের অধিকাংশ দফতরের কাজই বন্ধ হয়ে যাবে। চালু থাকবে কেবল আপৎকালীন পরিষেবাগুলি। কোন কোন দফতর চালু থাকবে, কত জন কর্মীকে নিয়ে চলবে, তা আলোচনার মাধ্যমে স্থির করা হয়। যাঁরা ‘শাটডাউন’ চলাকালীনও কাজ করবেন, তাঁদের অধিকাংশই বেতন পাবেন না। ‘শাটডাউন’ শেষ হলে আবার তাঁদের বেতন দেওয়া হবে।

‘শাটডাউন’-এর প্রভাব পড়বে আমেরিকার খাদ্য দফতরে। জরুরি পরিষেবা চালু থাকলেও অনেক কাজই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কোনও কোনও কাজ পিছিয়ে যেতে পারে বা সাময়িক ভাবে বন্ধ হতে পারে। মার্কিন শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, অধিকাংশ কর্মীকেই আপাতত বসিয়ে দেওয়া হবে। আমেরিকার স্বদেশ নিরাপত্তা দফতর (হোমল্যান্ড সিকিউরিটি) চালু থাকবে। এই দফতরের কর্মীদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে। শুল্ক এবং সীমান্তরক্ষা দফতরের কর্মীদেরও কাজ করতে হবে। অভিবাসন, পরিবহণ নিরাপত্তা, সিক্রেট সার্ভিস, নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরিষেবার কাজ চালু থাকবে ‘শাটডাউন’-এও। আমেরিকার প্রতিরক্ষা দফতরে বাছাই করা কিছু দিক খোলা রাখা হবে। তার মধ্যে দক্ষিণ সীমান্ত, পশ্চিম এশিয়া এবং গোল্ডেন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অগ্রাধিকার পাবে বলে দফতর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বয়স্ক নাগরিক, প্রতিবন্ধী এবং অন্যান্যদের মার্কিন সরকারের তরফ থেকে যে সামাজিক সুরক্ষা ভাতা দেওয়া হয়, তা বন্ধ হচ্ছে না। শ্রম বিভাগ জানিয়েছে, যত ক্ষণ পর্যন্ত প্রক্রিয়াকরণের জন্য তহবিল রয়েছে, তত ক্ষণ আমেরিকার বেকারদের সুযোগ-সুবিধাগুলি বন্ধ হবে না। বিনা বেতনে কাজ করতে হবে এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণকারীদের।

ট্রাম্প কী বললেন

কত দিন এই ‘শাটডাউন’ চলতে পারে, তা স্পষ্ট নয়। ২০১৮ সালে ট্রাম্পের প্রথম দফায় মার্কিন প্রশাসন ৩৫ দিনের জন্য অচল হয়ে পড়েছিল। এখনও পর্যন্ত আমেরিকার ইতিহাসে সেটাই সবচেয়ে বড় ‘শাটডাউন’। তহবিল সংক্রান্ত আলোচনায় অগ্রগতি না-হওয়ায় ডেমোক্র্যাটদেরই দোষারোপ করছেন ট্রাম্প। তিনি ইতিমধ্যে গণছাঁটাইয়ের হুমকি দিয়ে রেখেছেন। বলেছেন, ‘‘শাটডাউনের অনেক ভাল দিকও রয়েছে। আমরা যেগুলো চাই না, তেমন অনেক জিনিস ফেলে দিতে পারি। অনেককে ছাঁটাই করা হবে। তাঁরা প্রত্যেকেই হবেন ডেমোক্র্যাট।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement