(বাঁ দিক থেকে) ভ্লাদিমির পুতিন, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। —ফাইল চিত্র।
রাশিয়ার উপর ফের নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পারে আমেরিকা। রবিবার এমনটাই আভাস দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দাবি, রাশিয়ার উপর দ্বিতীয় দফায় নিষেধাজ্ঞা চাপানোর জন্য তিনি প্রস্তুত। যদিও এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনও মন্তব্য করেননি ট্রাম্প।
প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে চলে আসা রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে মধ্যস্থতার চেষ্টা চালাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠকও সেরে নিয়েছেন তিনি। শোনা যাচ্ছিল, দু’দেশের রাষ্ট্রনেতাকে মুখোমুখি আলোচনার টেবিলে বসানোর জন্য রাজিও করিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে এখনও পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। এরই মধ্যে রবিবার ইউক্রেনের রাজধানী কিভে সরকারি সচিবালয়ে (ক্যাবিনেট বিল্ডিং) হামলা চালিয়েছে রুশ সেনা। কিভের সচিবালয়ে রুশ হানার পরেই ট্রাম্পের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
আমেরিকার রাজস্বসচিব স্কট বেসেন্টও রবিবার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। রাশিয়ার উপর আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানোর আভাস দিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিকেও আমেরিকার সঙ্গে টানার চেষ্টা করেছেন বেসেন্ট। আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ‘এনবিসি’কে মার্কিন রাজস্বসচিব জানান, যদি আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন একসঙ্গে রাশিয়ার উপর আরও নিষেধাজ্ঞা চাপায়, মস্কোর কাছ থেকে তেল কেনা দেশগুলির উপর আরও শুল্ক চাপায়, তা হলে রাশিয়ার অর্থনীতি সম্পূর্ণ রূপে ভেঙে পড়বে। বেসেন্টের বক্তব্য, এমনটা হলে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে অবশ্যই আলোচনার টেবিলে বসতে হবে। ট্রাম্প প্রশাসন যে রাশিয়ার উপর চাপ বৃদ্ধি করার জন্য প্রস্তুত, তা-ও বুঝিয়ে দেন তিনি।
বেসেন্টের ওই মন্তব্যের পরই এ বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেও জানিয়ে দিলেন, রাশিয়ার উপর দ্বিতীয় দফায় নিষেধাজ্ঞা চাপানোর জন্য তিনি প্রস্তুত। বস্তুত, রাশিয়াকে প্যাঁচে ফেলতে ইতিমধ্যে ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। রাশিয়া থেকে তেল কেনা দেশগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে ভারত। তবে ট্রাম্পের দাবি, নয়াদিল্লিকে তেল বিক্রি করে সেই অর্থ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহার করছেন পুতিন। এ বার রাশিয়ার উপর আমেরিকা দ্বিতীয় দফায় নিষেধাজ্ঞা চাপালে, তার কী প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনাও শুরু হয়ে গিয়েছে।
বস্তুত, কিছু দিন আগেই রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন দাবি করেছেন, তিনি জ়েলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের জন্য প্রস্তুত। তবে বৈঠকের জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কিকে যেতে হবে মস্কোয়। পাশাপাশি ওই বৈঠকের আদৌ কোনও প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প। তবে মস্কোয় গিয়ে বৈঠকের প্রস্তাব ইতিমধ্যে খারিজ করে দিয়েছেন জ়েলেনস্কি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট শনিবার ওই প্রস্তাব খারিজের পরেই রবিবার হামলা হয় ইউক্রেনের সরকারি সচিবালয়ে।