গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সুদান। —ফাইল চিত্র।
আধা সামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ (আরএসএফ)-কে হটিয়ে গত মাসে রাজধানী খারতুম দখল করেছিল সুদানের সেনা। তবে গত কয়েক মাস ধরেই গৃহযুদ্ধে উত্তাল আফ্রিকার এই দেশটি। অভিযোগ, গৃহযুদ্ধের সময় নাকি আধা সামরিকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছিল সেনা! বিষয়টি নিশ্চিত হতেই এ বার সুদানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল আমেরিকা।
আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি জানান, সুদান সরকারকে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিল আমেরিকা। তবে গৃহযুদ্ধের সময় গত বছর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে সুদানের সেনা। সেই কারণে সুদানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। বিষয়টি মার্কিন কংগ্রেসকে জানানো হয়েছে। আগামী মাসের ৬ তারিখ থেকে এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হতে পারে। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমেরিকা থেকে কোনও জিনিস সুদানে পাঠানো হবে না। এ ছাড়াও সুদানকে কোনও ঋণ দেবে না আমেরিকা প্রশাসন।
গত জানুয়ারিতে ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ একটি প্রতিবেদনে দাবি করেছিল, সুদানের সেনা বাহিনী সে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আধা সামরিক বাহিনীর উপর কমপক্ষে দু’বার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছিল! কী ধরনের রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার হয়েছিল, তা নিশ্চিত করা হয়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন সেনাকে উদ্ধৃত করে ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ জানিয়েছিল, ক্লোরিন গ্যাস ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে। এই গ্যাস ব্যবহারের ফলে তীব্র শ্বাসকষ্টের কারণে মৃত্যুর সম্ভাবনা রয়েছে।
দেড় বছর আগে সেনাকে হারিয়ে সুদানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ দারফুরের দখল নিয়েছিল জেনারেল মহম্মদ হামদান ডাগালোর অনুগত আরএসএফ বাহিনী। ২০২৩ সাল থেকে চলা গৃহযুদ্ধে সুদানে মানবিক সঙ্কট এবং দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করে। এই গৃহযুদ্ধের কারণে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ঘরছাড়া হন কোটি কোটি মানুষ। আমেরিকার প্রথম থেকেই জেনারেল মহম্মদ হামদান ডাগালোর এবং তাঁর মিত্রদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলে আসছে। ডাগালোকে নিষিদ্ধও করে। শুধু তা-ই নয়, শান্তি আলোচনায় রাজি না হওয়ায় সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল আল ফতা আল বুরহানকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল আমেরিকা। এ বার গোটা দেশের উপরই নিষেধাজ্ঞা জারি করল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।