এইচ-১বি ভিসা সংক্রান্ত নিয়মে বিস্তর বদল করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। —ফাইল চিত্র
লটারি নয়, দক্ষতার বিচারেই এইচ-১বি ভিসা দেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন! এইচ-১বি ভিসার নিয়মে বড়সড় বদল করল তারা। জানানো হয়েছে, প্রচলিত লটারি পদ্ধতির পরিবর্তে এখন থেকে নতুন পদ্ধতিতে বিদেশি কর্মীদের বাছাই করে ভিসা দেবে মার্কিন প্রশাসন। বিদেশি কর্মীদের বেতন এবং দক্ষতার বিচারে বেছে নেওয়া হবে।
মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ভিসার নিয়মে বদলের কথা ঘোষণা করেছে। জানানো হয়েছে, এ বার থেকে দক্ষতা এবং উচ্চহারের বেতনই অগ্রাধিকার পাবে ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে। অর্থাৎ, কোনও বিদেশিকে এইচ-১বি ভিসা দেওয়ার আগে দেখা হবে তাঁর দক্ষতা এবং তিনি কত বেতন পাবেন! সেই বিচারে যাঁদের দক্ষতা এবং বেতন দুই-ই বেশি, তাঁরা আগে সুযোগ পাবেন।
কেন এই সিদ্ধান্ত? মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, এই পদক্ষেপের ফলে আমেরিকানদের নিজের দেশে কাজের সুযোগ এবং পরিবেশ আরও সুরক্ষিত হবে। ২০২৬ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ভিসার এই নয়া নিয়ম চালু হবে। ২০২৬-২৭ অর্থবর্ষে এইচ-১বি ভিসার নথিভুক্তকরণের সময় তা প্রযোজ্য করতে চাইছে ট্রাম্প প্রশাসন। শুধু তা-ই নয়, বার্ষিক এইচ-১বি ভিসা দেওয়ার সংখ্যাও বাড়ানোর কথা ভাবনাচিন্তা করছে তারা। বর্তমানে বছরে ৬৫ হাজার এইচ-১বি ভিসা দেওয়া হয়। তা আরও ২০ হাজার বাড়ানো হতে পারে।
মঙ্গলবার মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানিয়েছে, এখন থেকে প্রচলিত লটারি ব্যবস্থা বাতিল করে বাছাইয়ের একটি নতুন প্রক্রিয়া চালু করা হবে। তাদের যুক্তি, এর ফলে ওই ভিসা ব্যবহার করে উচ্চ দক্ষতা এবং উচ্চ বেতনের বিদেশি কর্মীদের আমেরিকায় নিয়ে আসতে পারবে বিভিন্ন সংস্থা। শুধু তা-ই নয়, এর ফলে সুবিধা হবে নিয়োগকারী সংস্থাগুলিরও। ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, ভিসার লটারি ব্যবস্থার মাধ্যমে ‘অসাধু’ নিয়োগকর্তারা সুবিধা ভোগ করতেন। কম দক্ষ কর্মীদের অল্প বেতনে চাকরি দিয়ে আমেরিকায় আনতেন তাঁরা, যা নিয়ে নানা সময়ে সমালোচনা হয়েছে। আমেরিকানেরাও এই কারণে দক্ষতা সত্ত্বেও কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। সব দিক বিবেচনা করেই লটারি ব্যবস্থা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি এইচ-১বি ভিসা সংক্রান্ত নিয়মে বিস্তর বদল এনেছে আমেরিকা। জানানো হয়েছে, এখন থেকে এইচ-১বি ভিসার জন্য মার্কিন সংস্থাগুলির কাছ থেকে এক লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৮৮ লক্ষ টাকা) নেওয়া হবে। শুধু তা-ই নয়, ফলে যাঁরা নতুন করে আবেদন করতে বা ভিসা পুনর্নবীকরণ করতে চান, তাঁদের কঠোর যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। প্রত্যেক আবেদনকারীর বায়োডেটা এবং ‘লিঙ্কডইন’ প্রোফাইল খতিয়ে দেখা হবে। এমনকি, আবেদনকারীর পরিবারের কোনও সদস্য ভুল তথ্য ছড়ানো বা তথ্যবিকৃতির মতো ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কি না, তা-ও যাচাই করা হবে। আবেদনকারী যদি কারও বাক্স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেন, সে ক্ষেত্রে খারিজ হয়ে যেতে পারে তাঁর ভিসার আবেদন। মূলত এইচ ১বি ভিসার অপব্যবহার রুখতেই এই যাচাইকরণ প্রক্রিয়া।