শর্ত মানা সম্ভব নয়, থমকে গেল ট্রাম্প-কিম কথা

দু’পক্ষের এই অনমনীয় মনোভাবে বৈঠক কার্যত ভেস্তে গেলেও পরে ট্রাম্প বলেন, ‘‘যথেষ্ট ভাল কথাবার্তা হয়েছে। এক বছর আগেও ভাবা যেত না, আমরা এ ভাবে আলোচনার টেবিলে বসব।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

হ্যানয় শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৯ ০১:১৯
Share:

ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

আজকের বৈঠকটার দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা বিশ্ব। কিন্তু সেই বৈঠকই ভেস্তে গেল মাঝপথে। হ্যানয়ে কোনও চুক্তি সই হল না আমেরিকা আর উত্তর কোরিয়ার মধ্যে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট বললেন, ‘‘ওরা যা চাইছে, তা মেনে নেওয়া কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।’’ সূত্রের খবর, উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, মার্কিন দাবি পুরোপুরি মানা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। দু’পক্ষের এই অনমনীয় মনোভাবে বৈঠক কার্যত ভেস্তে গেলেও পরে ট্রাম্প বলেন, ‘‘যথেষ্ট ভাল কথাবার্তা হয়েছে। এক বছর আগেও ভাবা যেত না, আমরা এ ভাবে আলোচনার টেবিলে বসব।’’

Advertisement

গত জুনে সিঙ্গাপুরের পরে উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের সঙ্গে ট্রাম্পের এই দ্বিতীয় বৈঠক নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কৌতূহলের শেষ ছিল না। কাল দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছিল। একসঙ্গে বসে খাবারও খান দু’জন। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন। তারপর আজ মাঝপথেই থেমে যায় বৈঠক। জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজ়ো আবে যা শুনে বলেছেন, ‘‘উত্তর কোরিয়ার শর্তে রাজি না হওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সমর্থন জানাই। তবে আলোচনা চালিয়ে নিয়ে যাওয়াও দরকার।’’ আর চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লু কাং বলেন, ‘‘উত্তর কোরিয়ার পরমাণু সমস্যার সমাধান যে এক দিনে সম্ভব নয়, তা আশাকরি এ বার দু’পক্ষই বুঝতে পারছে।’’ বৈঠক থেমে যাওয়াটা ‘হতাশাজনক’ বললেও দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া আর আমেরিকার সুসম্পর্ক যাতে বজায় থাকে, তার জন্য সোল সব সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে রাখবে।

আজ আসলে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে চুক্তি সই হওয়ার কথা ছিল। আমেরিকা বরাবরই বলে এসেছে, নিজেদের সব পরমাণু অস্ত্র তৈরির কেন্দ্র ধ্বংস না করলে উত্তর কোরিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞার খাঁড়া সরাবে না তারা। কিন্তু ট্রাম্প আজ সাংবাদিকদের কাছে গোটা বিষয়ের জন্য নাম না করে উত্তর কোরিয়াকেই দায়ী করেন। বলেন, ‘‘পুরো ব্যাপারটাই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে।’’ পরে সাংবাদিকদের কাছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ব্যাখ্যা করেন, কিম চাইছেন উত্তর কোরিয়ার ইয়ংবিয়ন কেন্দ্রের প্লুটোনিয়াম আর ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রকল্প বন্ধ করার বিনিয়মে তাঁদের উপর থেকে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিক আমেরিকা। ট্রাম্পের কথায়, ‘‘যেটা এক কথায় অসম্ভব।’’

Advertisement

কারণ আমেরিকা প্রথম থেকেই দাবি করে এসেছে, উত্তর কোরিয়া সরকারি ভাবে যে ক’টি পরমাণু কেন্দ্রের কথা বলে থাকে, তার বাইরেও তাদের আরও কিছু প্রকল্প রয়েছে, যেটা তারা কোনও ভাবেই প্রকাশ্যে আনতে চায় না। ফলে যে ইয়ংবিয়ন কেন্দ্রের কথা কিম উল্লেখ করেছেন, সেটি বাদ দিয়ে উত্তর কোরিয়ার বাকি পরমাণু পরীক্ষা কেন্দ্র নিয়ে সংশয়ে রয়েছে আমেরিকা। আর আজ সেই প্রসঙ্গই তুলে ধরেছেন ট্রাম্প। বলেছেন, ‘‘কখনও কখনও এমনটা হয় যে বেরিয়ে আসতে হয়, আজকের দিনটাও তেমনই।’’ উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ঠিক এই মুহূর্তে পরবর্তী কোনও বৈঠকের পরিকল্পনা তাঁদের নেই বলে জানান ট্রাম্প। আজকের বৈঠকের পরে দুই রাষ্ট্রনেতার একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ করার কথা ছিল। বৈঠকের মতো ভেস্তে গিয়েছে সেটাও। তবে বৈঠক ভেস্তে গেলেও উত্তর কোরিয়া এবং কিমের প্রশস্তি শোনা গিয়েছে ট্রাম্পের মুখে। জানিয়েছেন, কিম বেশ ভাল মানুষ আর দু’দেশের সম্পর্ক এখনও যথেষ্ট শক্তপোক্ত রয়েছে। কিম অবশ্য এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন