হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল আগেই। এ বার সরাসরি হামলা। ইরাকের পর এ বার আমেরিকার নিশানায় সিরিয়ার জঙ্গিঘাঁটি। ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া (আইএসআইএস) জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আজ ফের নতুন করে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। সঙ্গে দোসর এ বার আরও পাঁচটি আরব দেশ। ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’ বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে আগামিকাল রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি বৈঠকে যোগ দেবেন ওবামা। তার আগেই মঙ্গলবার ভোররাত থেকে হামলা শুরু হয়েছে সিরিয়ায়।
ওয়াশিংটনের তরফে এ দিন বিকেল পর্যন্ত ১৪টি হামলার কথা স্বীকার করা হলেও, স্থানীয় এক মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, সিরিয়ায় হামলা ইরাকের চেয়েও ভয়াবহ আকার নিতে চলেছে। গত দু’মাসে ইরাকে ১৯০টি বিমান হামলা হয়েছে। এ দিকে সূত্রের খবর, হামলার প্রথম দিনই সিরিয়ার পূর্ব অংশে রাকা এবং দেইর-আল-জওর শহরে আইএসের পঞ্চাশটিরও বেশি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে মার্কিন সেনা। নিহত অন্তত ২০ আইএস জঙ্গি। হামলা হয়েছে সিরিয়ায় আইএসের প্রধান প্রতিপক্ষ ও আল কায়দা সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠী নুসরা ফ্রন্টের ঘাঁটিতেও। সেখানে নিহত তাদের ৩০ জন সক্রিয় সদস্য। প্রাণ গিয়েছে ৮ সাধারণ নাগরিকেরও। আমেরিকার দাবি, হামলার প্রথম দিনই ধ্বংস হয়েছে আইএসের একাধিক ট্রেনিং কম্পাউন্ড, কম্যান্ড সেন্টার।
অন্য দিকে, মার্কিন সেন্ট্রাল কম্যান্ডের দাবি, সিরিয়ায় এই হামলায় তাদের পাশে রয়েছে বাহরাইন, জর্ডন, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো পশ্চিম এশিয়ার পাঁচটি দেশও।
জঙ্গি নিধনে ইরাকে হামলা সে দেশের সরকারকে পাশে নিয়েই। কিন্তু ওবামা বরাবরই সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার-আল-আসাদের বিরোধী। সেই কারণেই আসাদের পদত্যাগ দাবি করে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে এত দিন নিজেদের সরিয়ে রেখেছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু আইএসের সাম্প্রতিক বাড়বাড়ন্ত, একের পর এক মুণ্ডচ্ছেদের ভিডিও প্রকাশ ও আমেরিকাকে ধারাবাহিক হুমকি ইত্যাদি কারণেই ওবামার এই হামলার সিদ্ধান্ত বলে মত ওয়াশিংটন সূত্রের। সপ্তাহ দু’য়েক আগে এই হামলার ইঙ্গিতও মিলেছিল ওবামার বক্তৃতায়।
এ দিকে হামলা শুরু হওয়ার পরে আজ ফের ওবামাকে বার্তা দিয়ে আরও একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে আইএস। এ বার তাদের কব্জায় এক ব্রিটিশ সাংবাদিক। জঙ্গি নিধনের নামে ইরাক-সিরিয়ায় হামলা বন্ধ না হলে অপহৃত সাংবাদিক জন ক্যান্টলিরও একই পরিণতি হবে বলে হুমকি দিয়েছে আইএস গোষ্ঠী।
চিন্তিত ভারতও
পশ্চিম এশিয়ায় জঙ্গি নিধনে মার্কিন হামলায় তেলের দাম বাড়তে পারে ভারতে। তেলের পাশাপাশি জিনিসপত্র আমদানি রফতানি এবং পরিবহণ খরচও কয়েক গুণ বেড়ে যেতে পারে। যার অনিবার্য ফলশ্রুতি মূল্যবৃদ্ধি। আশঙ্কা, দেশের অর্থনীতিতে গভীর ভাবে প্রভাব ফেলবে এই জঙ্গি-যুদ্ধ।