(বাঁ দিকে) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের মুখপাত্র জ়াবিহুল্লা মুজাহিদ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানে জঙ্গি সংগঠন আইএসের উপস্থিতি নিয়ে সতর্ক করে দিল আফগানিস্তানের তালিবান সরকার। শনিবারের হামলার কারণও ব্যাখ্যা করা হল। আফগানিস্তানের দাবি, ইসলামাবাদ এবং করাচি বিমানবন্দর দিয়ে জঙ্গিদের দেশে ঢোকাচ্ছে পাকিস্তান। তার পর খাইবার পাখতুনখোয়ায় নির্দিষ্ট ঘাঁটিতে তাদের পাঠানো হচ্ছে।
আফগান তালিবানের মুখপাত্র জ়াবিহুল্লা মুজাহিদ শনিবারের সংঘর্ষ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের হামলায় ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনার মৃত্যু হয়েছে। ৩০ জন জখম হয়েছেন। এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘আইএসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যেরা পাকিস্তানের মাটিতে লুকিয়ে আছে। পাকিস্তানের উচিত তাদের দেশ থেকে বার করে আমাদের হাতে তুলে দেওয়া। এই আইএস গোষ্ঠী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জন্য হুমকির কারণ। আফগানিস্তানের জন্যেও তাই।’’
অশান্তি সৃষ্টিকারী সমস্ত গোষ্ঠীকে আফগানিস্তান থেকে বার করে দিয়েছে তালিবান, দাবি মুজাহিদের। বলেন, ‘‘যারা অশান্তি করে, তাদের সকলকে আমরা বার করে দিয়েছি। কিন্তু তাদের জন্য পাখতুনখোয়ায় নতুন ঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে। করাচি ও ইসলামাবাদ বিমানবন্দর দিয়ে তাদের প্রশিক্ষণের জন্য পাকিস্তানে ঢোকানো হচ্ছে।’’
ইরান এবং রাশিয়ায় সন্ত্রাসবাদী হামলা পাকিস্তানে বসে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, দাবি তালিবান মুখপাত্রের। জানিয়েছেন, এই দাবির সপক্ষে লিখিত প্রমাণ তাঁর কাছে রয়েছে।
শনিবার রাতে পাকিস্তান সীমান্তে একাধিক জায়গায় হামলা চালায় তালিবান বাহিনী। দাবি, অনেক পাক ঘাঁটি তারা দখল করে নিয়েছে। সেখান থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে অস্ত্রশস্ত্র। আবার পাকিস্তান পাল্টা দাবি করেছে, শনিবার আফগান সেনাকে তারা যোগ্য জবাব দিয়েছে তারা। দখল করে নেওয়া হয়েছে সীমান্তের ১৯টি আফগান ঘাঁটি। সেখানে তালিবানের যে সদস্যেরা ছিল, তাদের হত্যা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি সেনা আফগান রাজধানী কাবুলে আকাশপথে হামলা চালিয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে তালিবান দাবি করে, সে দিনের জবাবেই এই হামলা। পরে তাদের মুখপাত্র পাকিস্তানে আইএস জঙ্গির উপস্থিতি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করলেন।
এমনিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ওসামা বিন লাদেনও বছরের পর বছর পাকিস্তানে গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। ২০১১ সালে তাঁকে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনাতেও পাকিস্তানকে দায়ী করেছে ভারত। পাক আশ্রিত জঙ্গিরা ওই হামলার নেপথ্যে ছিল, তার প্রমাণ মিলেছে। হামলাকারীদের হত্যা করেছে ভারতীয় সেনা।