(বাঁ দিকে) সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
পাকিস্তান-আফগানিস্তান দ্বন্দ্বে সংযমের বার্তা দিল প্রতিবেশী সৌদি আরব। সদ্য পাকিস্তানের সঙ্গে তারা একটি বিশেষ প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সেই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, স্বাক্ষরকারী যে কোনও দেশের উপর তৃতীয় কোনও দেশের হামলা উভয়ের উপর হামলা হিসাবে দেখা হবে এবং উভয়েই সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে। শনিবার রাতে পাকিস্তানে হামলা চালিয়েছে আফগানিস্তানের তালিবান নিয়ন্ত্রিত সেনা। চুক্তির শর্ত মেনে কি পদক্ষেপ করবে সৌদি? আপাতত রিয়াধের তরফে তেমন কোনও ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি।
সৌদি আরবের তরফে আফগান-পাক সংঘাত প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য উত্তেজনা প্রশমন এবং উভয় পক্ষের সংযমের আহ্বান জানাচ্ছে সৌদি আরব। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান কাম্য।’’ তারা আরও বলেছে, ‘‘এই অঞ্চলে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা চেয়ে যাবতীয় আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক চেষ্টাকে আমরা সমর্থন করি। পাকিস্তানি এবং আফগান ভাইদের সমৃদ্ধির জন্য এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সৌদি আরব বদ্ধপরিকর।’’
পাকিস্তানের প্রতিবেশী ইরানও উভয় পক্ষকে উত্তেজনা প্রশমনের পরামর্শ দিয়েছে। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচী একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘পাকিস্তান-আফগানিস্তান দ্বন্দ্বে আমাদের অবস্থান হল, দুই পক্ষকেই সংযত হতে হবে। এই দুই দেশের মধ্যে স্থিতিশীলতা আসলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।’’
কাতারও পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানে সংযত হতে এবং কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে অনুরোধ করেছে। জানিয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা, সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব। বিবৃতি অনুযায়ী, ‘‘আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে কাতার সমস্ত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার পাশে আছে। দুই দেশের মানুষের সমৃদ্ধিতে তারাও বদ্ধপরিকর।’’
ভারতের উত্তর-পশ্চিমের দুই পড়শি দেশের মধ্যে বিতর্কের সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার থেকে। সে দিন আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে পাকিস্তান আকাশপথে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। পর পর বোমার শব্দ শোনা যায় কাবুলে। আফগান সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, তার জবাবেই শনিবার পাকিস্তানে হামলা চালিয়েছে তাদের সেনা। মধ্যরাত পর্যন্ত সীমান্তে সংঘর্ষ চলেছে। উত্তেজনা এখনও কমেনি। আফগানিস্তানের তালিবান মন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি সম্প্রতি ভারতে এসেছেন। তাঁর সফরকালে পাক-আফগান এই সংঘর্ষ আলাদা তাৎপর্য বহন করছে বলে অনেকের মত।
উল্লেখ্য, গত মে মাসে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যখন সংঘর্ষ চলছিল, উত্তেজনা প্রশমনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল সৌদি আরব। তারা দুই দেশকেই সংযমের বার্তা দিয়েছিল। ভারতে এসেও কথা বলে গিয়েছিলেন সৌদির প্রতিনিধি। তালিবান-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে তারা সেই অবস্থান নিয়েছে।