আমেরিকায় পুলিশের গুলিতে নিহত তেলঙ্গানার মেহবুবনগরের বাসিন্দা মহম্মদ নাজ়িমুদ্দিন। —ফাইল চিত্র।
ঘরে ঢুকে দু’জনকে হাত দেখাতে বলেছিল পুলিশ। এক জন কথা শুনেছিলেন। আর এক জন শোনেননি। তার পরেই পর পর চার রাউন্ড গুলি চালিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মৃত্যু হয় ভারতীয় প্রযুক্তিবিদের। এমনটাই দাবি করেছেন মৃতের এক আত্মীয়। গত ৩ সেপ্টেম্বর তেলঙ্গানার মেহবুবনগরের বাসিন্দা মহম্মদ নাজ়িমুদ্দিনের (৩০) মৃত্যু হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার সান্টা ক্লারায়। আমেরিকার পুলিশ তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ। পরিবারের দাবি, ১৮ সেপ্টেম্বর এই মৃত্যু সংবাদ তাদের জানানো হয়েছে। যুবকের অসহায় বাবা সাহায্য চেয়ে চিঠি লিখেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে।
তেলঙ্গানার নাজ়িমুদ্দিন কাজের সূত্রে আমেরিকায় থাকতেন। সান্টা ক্লারার পুলিশ জানিয়েছে, রুমমেটের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। ছুরি দিয়ে তাঁরা একে অপরকে আক্রমণ করেছিলেন। ঘরের ভিতর ঠিক কী ঘটেছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ঝামেলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ। মৃতের এক আত্মীয় জানিয়েছেন, এসি নিয়ে কোনও কারণে রুমমেটের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছিল নাজ়িমুদ্দিনের। তার পর ছুরি দিয়ে কেউ কাউকে আঘাত করেন। পুলিশ গিয়ে তাঁদের দু’জনকেই হাত দেখাতে বলেছিল। তার পর ঘরের মধ্যে গুলি চালানো হয়।
নাজ়িমুদ্দিনের আত্মীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, ‘‘পুলিশ ঘরে ঢুকে ওদের হাত দেখাতে বলেছিল। এক জন পুলিশের কথা অনুযায়ী কাজ করে। আর এক জন করেনি। তার পর পুলিশ পর পর চার রাউন্ড গুলি চালায়। নাজ়িমুদ্দিনেরও গুলি লাগে।’’ মার্কিন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওই আত্মীয় আরও বলেছেন, ‘‘এত দ্রুত ওরা গুলি চালিয়ে দিল! কোনও তদন্ত করল না! এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক।’’
জয়শঙ্করকে লেখা চিঠিতে নাজ়িমুদ্দিনের বাবা বলেছেন, ‘‘আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে আমি জানতে পারলাম, আমার ছেলেকে সান্টা ক্লারার পুলিশ গুলি করে মেরে ফেলেছে। ওঁর দেহাবশেষ সান্টা ক্লারার কোনও এক হাসপাতালে রয়েছে। কেন পুলিশ ওকে মারল, আমি জানি না।’’ পুত্রের দেহ দেশে ফেরানোর জন্য সরকারের সাহায্য চেয়েছেন নাজ়িমুদ্দিনের বাবা। ওয়াশিংটনের ভারতীয় দূতাবাস, সান ফ্রান্সিসকোর রাষ্ট্রদূতকে এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়ার জন্য বিদেশমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন তিনি।
কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দাবি, সান্টা ক্লারার পুলিশ আপৎকালীন পরিষেবার নম্বর ৯১১-তে ফোন পেয়ে নাজ়িমুদ্দিনদের ঘরে পৌঁছোয়। দেখা যায়, ভারতীয় যুবক তাঁর রুমমেটের বুকের দিকে ছুরি তাক করে আছেন। তার পরেই পুলিশ গুলি চালায়। নাজ়িমুদ্দিন এবং তাঁর রুমমেটকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রুমমেট এখনও চিকিৎসাধীন। পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে।
কিছু দিন আগে টেক্সাসের ডালাসে এক ভারতীয় প্রৌঢ়কে মাথা কেটে খুন করা হয়েছিল। প্রকাশ্য রাস্তায় ছিন্ন মুণ্ডে লাথি মেরেছিলেন অভিযুক্ত। তাঁর গ্রেফতারির পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন। এ বার মার্কিন পুলিশের গুলিতেই ভারতীয় যুবকের মৃত্যু হল আমেরিকায়।