প্যারিসের লুভ্র জাদুঘর থেকে চুরি গিয়েছে একাধিক মূল্যবান গয়না। ছবি: রয়টার্স।
গত রবিবার থেকে অন্তত ১৫০টি ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছিল ফ্রান্সের পুলিশ। জোগাড় করা হয়েছিল বহু আঙুলের ছাপ। এই সমস্ত সূত্রই শেষ পর্যন্ত ধরিয়ে দিল দুই দুষ্কৃতীকে। প্যারিসের লুভ্র জাদুঘরে ঢুকে ফরাসি সম্রাজ্ঞীদের গয়না চুরি করে পালিয়েছিল তারা। রবিবার শার্ল দ্য গল বিমানবন্দর থেকে প্রথমে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে প্যারিস থেকেই ধরা পড়ে আরও এক জন। এখনও বাকি দু’জন অধরা।
সূত্রের খবর, শার্ল দ্য গল বিমানবন্দর থেকে আলজেরিয়ার বিমান ধরার পরিকল্পনা করেছিলেন অভিযুক্ত। আফ্রিকার এই দেশ একসময় ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল। পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃতদের মধ্যে এক জনের ফ্রান্স এবং আলজেরিয়ার যৌথ নাগরিকত্ব রয়েছে। সেই কারণে তিনি সেখানে যেতে চাইছিলেন। ফ্রান্সের সঙ্গে আলজেরিয়ার কোনও মসৃণ প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। এক বার আলজেরিয়ায় পৌঁছে গেলে সেখান থেকে অভিযুক্তকে ফেরানো কঠিন হত। পালানোর জন্য আলজেরিয়াকে বেছে নেওয়ার এটাও অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
ঘটনাস্থল এবং লুভ্র জাদুঘরের আশপাশের এলাকা থেকে গত এক সপ্তাহ ধরে নমুনা সংগ্রহ করেছিল প্যারিসের পুলিশ। যে সমস্ত আঙুলের ছাপ পাওয়া গিয়েছে, তার অধিকাংশই ধৃতদের সঙ্গে মিলে গিয়েছে। একটি ক্রেনবাহী ট্রাকে করে লুভ্রের পিছন দিকে পৌঁছেছিলেন চার যুবক। ক্রেনের সাহায্যে তিন তলার বারান্দায় ওঠেন এবং জানলা ভেঙে অ্যাপোলো গ্যালারি থেকে গয়না চুরি করেন। পালানোর সময় ক্রেনবাহী এই ট্রাকটি ফেলে রেখে বাইক ব্যবহার করেছিলেন চার জনই। সূত্রের এই ট্রাকের ভূমিতে ডিএনএ নমুনা মিলেছে, যা তদন্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এ ছাড়া, দুষ্কৃতীদের এক জনের হেলমেট উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তার ভিতর থেকে পাওয়া চুলের নমুনা থেকেও অভিযুক্তকে শনাক্ত করা সহজ হয়েছে।
লুভ্র থেকে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার সম্পদ মাত্র সাত মিনিটে হাতিয়ে নিয়েছিলেন চার জন। দুঃসাহসিক এই অভিযানের পরিকল্পনার সঙ্গে পালানোর পরিকল্পনার তুলনা করছেন অনেকে। দাবি, পালানোর পরিকল্পনা তুলনামূলক দুর্বল। অনেক খামতি থেকে গিয়েছে তাতে। সেই কারণে বিমানবন্দর থেকে ধরা পড়ে যেতে হয়েছে। যদিও এখনও দু’জন পলাতক। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁদের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ।