ইমরান খান। —ফাইল চিত্র।
জেলবন্দি প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে। তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি জেলেই মৃত্যু হয়েছে ইমরানের। একই দাবি করেছে ‘আফগান টাইমস’ নামে আফগানিস্তানের একটি সংবাদমাধ্যমও। এই পরিস্থিতিতে বিবৃতি প্রকাশ করল পাকিস্তানের আদিয়ালা জেল— যেখানে ২০২৩ সাল থেকে বন্দি রয়েছেন পাকিস্তানের ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ইমরান।
বিবৃতিতে ইমরানের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জল্পনাকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই পাকিস্তান জুড়ে এই জল্পনাও ছড়ায় যে, গোপনে আদিয়ালা জেল থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ইমরানকে। জেল কর্তৃপক্ষ সেই জল্পনাও খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, “আদিয়ালা জেল থেকে তাঁকে (ইমরান) সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার খবর সত্য নয়।” একই সঙ্গে সেখানে লেখা হয়েছে, “তিনি পুরোপুরি সুস্থ রয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় সমস্ত ধরনের চিকিৎসা পাচ্ছেন।”
অন্য দিকে, ইমরান জেলে ভাল আছেন, সে কথা জানিয়ে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ বলেছেন, “ওঁর জন্য জেলে কী সব খাবার আসছে দেখুন। এই সব খাবার পাঁচতারা হোটেলেও পাওয়া যায় না।” জেলে ইমরান টিভিতে নিজের পছন্দের চ্যানেল দেখতে পারেন বলেও জানিয়েছেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী। একই সঙ্গে আসিফের সংযোজন, “আমরা (জেলে) ঠান্ডা মেঝেতে শুতাম। জেলের খাবার খেতাম। জানুয়ারি মাসেও আমাদের মাত্র দু’টো কম্বল দেওয়া হত। গরম জল দেওয়া হত না।” ইমরান শীতে চওড়া খাট, পশমের কম্বল পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পরিবার-পরিজনরা ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। গত ১৯ নভেম্বর রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন তাঁর তিন বোন— আলিমা, উজ়মা এবং নুরা খান। প্রতিবাদে ধর্নায় বসলে তাঁদের শারীরিক হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। তার পরে পিটিআই নেতারাও ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ব্যর্থ হন। তার পরেই ইমরানকে নিয়ে জল্পনা ছড়াতে শুরু করে।
একাধিক মামলায় অভিযুক্ত ইমরান ২০২৩ সাল থেকে জেলবন্দি। চলতি বছরের গোড়ায় আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে ১৪ বছর জেলের সাজা দিয়েছে আদালত। সাজা হয়েছে তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিরও। পাকিস্তানের জেল আইন অনুযায়ী সপ্তাহে এক বার পরিবারের সদস্যেরা ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। কিন্তু অভিযোগ, সেই আইনের তোয়াক্কা করছে না শাহবাজ় সরকার। গত সেপ্টেম্বরে সমাজমাধ্যমে ইমরান অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর এবং বুশরার উপর জেলের অন্দরে সেনাপ্রধান মুনিরের নির্দেশে মানসিক অত্যাচার চালানো হচ্ছে! তার পরেই সাক্ষাৎ নিয়ে কড়াকড়ি শুরু হয়েছিল আদিয়ালা জেলে।